সাকিবরা বুঝলেন আফগানিস্তান কতটা কঠিন

সাকিবের মুখটাই বলে দিচ্ছে  ম্যাচের ফল কী! ছবি: ফেসবুক
সাকিবের মুখটাই বলে দিচ্ছে ম্যাচের ফল কী! ছবি: ফেসবুক

রশিদ খান কেন টি-টোয়েন্টিতে এক নম্বর বোলার, আজ সেটি হাড়ে হাড়ে টের পেল বাংলাদেশ। এই সিরিজের আগে ‘রশিদ খান-রশিদ খান’ কেন রব উঠেছিল সেটাও বুঝল। আফগান লেগ স্পিনারের ঘূর্ণি এতটাই রহস্যের জাল বিছাল, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেটিতে আটকে পড়ে শুধু হাঁসফাঁসই করলেন! দেরাদুনের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৫ রানে হেরে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।

শুরুটা আসলে মুজিবুর রহমান করেছিলেন। ১৬৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই স্ট্রোক না রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলবেন এই দ্বিধায় এলবিডব্লু হয়ে গেলেন তামিম ইকবাল। শুরুর এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতে মোহাম্মদ নবীকে চালাতে গিয়ে সাকিব আল হাসানও (১৫) আউট! ২১ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে তবুও স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিমলিটন দাস। দুজনের ২৬ বলে ৪৩ রানের জুটি যখন আশা দেখাতে শুরু করেছে তখন আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের বলি হয়ে ফিরলেন ৩০ রান করা লিটন। ১০ ওভার শেষেও ৩ উইকেটে ৭৯—তবুও স্কোরটা খারাপ ছিল না বাংলাদেশের।

এই সময়ে তূণ থেকে রশিদকে বের করলেন আফগান অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই। আফগান লেগ স্পিনার সর্বনাশ করলেন না কি মুশফিক নিজেই সর্বনাশ ডেকে নিয়ে এলেন সেটি অবশ্য প্রশ্ন। রশিদকে অহেতুক রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড ২০ রান করা মুশফিক। পরের বলেই রশিদের দুর্দান্ত এক গুগলিতে এলবিডব্লু  সাব্বির রহমানও। হ্যাটট্রিকের সুযোগটা অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি আফগান লেগ স্পিনার। তবে যে বোলিংটা করে গেছেন, তাতেই যা হওয়ার হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ইনিংস আর স্বচ্ছন্দে এগোতে পারেনি। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেক হোসেন ৩৭ বলে ২৯ রানের ছোট একটা জুটি গড়েছিলেন। তবে তাঁরা যেভাবে এগোচ্ছিলেন, মনে হচ্ছিল রান তোলার চেয়ে কষ্টের কাজ আর পৃথিবীতে নেই! ১০.৪ থেকে ১৪.৫—টানা ২৫ বলে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি বাংলাদেশ। ওভার পিছু রানরেট ৮.৮০ থেকে বেড়ে দাঁড়াল ১৩.৪৪। চাপে চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে রশিদের গুগলি তুলে মারতে গিয়ে মোসাদ্দেক ফিরলেন ২৩ বলে ১৪ রান করে।

মোসাদ্দেক আউট হওয়ার পরই বাংলাদেশের ইনিংস মুড়ে যাওয়াটা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল। স্পিনারদের দেখিয়ে দেওয়া কাজটা শেষ করলেন আফগান পেসাররা। ১৪ রানে যে শেষ ৫ উইকেট হারাল বাংলাদেশ, চারটিই তাঁদের অধিকারে। বাংলাদেশ পুরো ২০ ওভারও খেলতে পারল না, অলআউট হয়ে গেল ১৯ ওভারেই! ৩ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক অবশ্যই রশিদ।

দেরাদুনের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামকে আফগানিস্তান ব্যবহার করছে নিজেদের ‘হোম গ্রাউন্ড’ হিসেবে। ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের অভিষেকটা হলো দুর্দান্ত। প্রায় ২০ হাজার দর্শককে সাক্ষী রেখে তাঁর টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো হারাল বাংলাদেশকে। সিরিজের আগে এতবার রশিদ খানের কথা উঠেছে, এবার সাকিবরা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এই আফগান লেগ স্পিনার কী জিনিস! আর বাংলাদেশ বুঝেছে এই আফগানিস্তান কত কঠিন!