পাকিস্তানের পর এবার ভারতকে হারাল বাংলাদেশ

ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: এসিসি
ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: এসিসি

পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের স্মৃতি টাটকা থাকতে থাকতেই এবার ভারতকে হারাল বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ায় চলমান এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে আজ বাংলাদেশ জিতেছে ৭ উইকেটে। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত খেলেছেন রুমানা আহমেদ। বল হাতে ২১ রানে ৩ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৩৪ বলে অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন। ফারজানা হক অপরাজিত ছিলেন ৫২ রানে।

চতুর্থ উইকেটে ফারজানা ও রুমানার অবিচ্ছিন্ন ৯৩ রানের জুটিতে ভারতের দেওয়া ১৪২ রানের লক্ষ্য অনায়াসে পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচ যদিও শেষ হয়েছে শেষ ওভারে ২ বল বাকি থাকতে। কিন্তু একবারেও মনে হয়নি, ম্যাচে বাংলাদেশ হারতে পারে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছড়ি ঘুরিয়েই জিতল মেয়েরা। আর এই জয়ে ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে থাকল সুবিধাজনক স্থানে।

বাংলাদেশের পক্ষে মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড গড়েও ম্যাচসেরা হওয়া হলো না ফারজানার। তাতে এতটুকু দুঃখ করবেন না ৪৬ বলে ৫টি চার ও এক ছক্কায় দুর্দান্ত এই ইনিংস খেলা এই ডানহাতি ব্যাটার। আজকের ম্যাচ যে ছিল রুমানার ম্যাচ। প্রথম তিন ব্যাটারের দুজনকে রান আউটের খাঁড়ায় হারিয়ে ফেলার ধাক্কা ভালোমতো সামলে ছুটছিল ভারত। ৩ উইকেটে তুলেছিল ১২০ রান। হাতে ৭ উইকেট থাকার পরও শেষ ২৫ বলে ২১ রানের বেশি তুলতে পারেনি অভিজ্ঞ এই দলটি। ৭ উইকেটে ১৪১ রানে থেমে গিয়েছিল। তার মূল কারণ ছিলেন রুমানা।

সপ্তম বোলার হিসেবে আক্রমণে এসে ফিরিয়েছেন ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রান করা হারমানপ্রীত কাউরকে। নিজের পরের ওভারে জোড়া আঘাত। ৩২ রান করা দীপ্তি শর্মাকে বোল্ড করেছেন। ফিরতি ক্যাচ নিয়েছেন অনুজা পাতিলের। ভারতের মেয়েদের ক্রিকেটে কিংবদন্তির সম্মান পেয়ে যাওয়া ঝুলন গোস্বামীকে করেছেন রান আউট। ভারতের শেষ চারটি উইকেটের পাশেই রুমানার নাম। আউট করেছেন দুই সর্বোচ্চ রান করা ব্যাটারকেই। দলের সবচেয়ে ইকোনমি বোলারও তিনি।

তবু ১৪২ বাংলাদেশের জন্য সহজ লক্ষ্য তো ছিল না। প্রতিপক্ষও এ সময়ের সেরা দলগুলোর একটি ভারত। এখানেই বড় ভূমিকা ফারজানার। ব্যক্তিগত ১২ আর দলীয় ২৯ রানে ওপেনার আয়েশা ফিরে এলেও অন্য ওপেনার শামিমা ২৩ বলে ৩৩ রান করে নিজের কাজটা সেরে রেখেছিলেন। দলীয় ৪৫ আর ৪৯ রানে দুই ব্যাটারকে হারিয়ে বাংলাদেশ তখন চাপে। ৭.৫ ওভারে ৪৯ রানে স্কোরকার্ডে নেই তিন উইকেট।

ক্রিজে তখনো একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ফারজানা, আর অন্য প্রান্তে তাকে সঙ্গ দিতে মাঠে এসেছে রুমানা। এক্কা-দোক্কা করে ক্রিজে টিকে থাকার লড়াই দুজনের। তবে ১৫ ওভার পর দুজনের ব্যাটই যেন খাপ খোলা তলোয়ার। একের পর এক বাউন্ডারির ফুলঝুরি।

এশিয়া কাপের শুরুটা চিন্তা করলে এ বাংলাদেশের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ৬৩ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল দল। পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। আজ তো ভারতের সালমার দল বাঘিনী হয়ে উঠল। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের এখনো দুটি ম্যাচ বাকি। থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রত্যাশিত ফল মিললেই ফাইনাল।

কঠিনতম দুটি বাধা বেশ দাপটের সঙ্গেই পেরিয়ে এসেছে বলেই হয়তো এবার এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে নিয়ে আশা বাড়ছে!