বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত, জানিয়ে দিলেন নেইমার

আরেকটি স্বস্তি জাগানো গোল, নেইমারের সন্তুষ্টি দেখা গেছে গোল উদ্‌যাপনেও। ছবি: এএফপি
আরেকটি স্বস্তি জাগানো গোল, নেইমারের সন্তুষ্টি দেখা গেছে গোল উদ্‌যাপনেও। ছবি: এএফপি

গ্যাব্রিয়েল জেসুস না রবার্তো ফিরমিনো, ব্রাজিলের একাদশে থাকবেন কে?

অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে জেসুসের পা থেকে আসা অমন দুর্দান্ত গোলের পর প্রশ্নটা তোলার আর বোধ হয় প্রয়োজন নেই! গোলটির পর তিতে যেভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন, ওতেই তো বোঝা যায় ‘নম্বর নাইন’ পজিশনে জেসুসের জায়গাটা আপাতত পাক্কা। দুরূহ কোণ থেকে ডান পায়ে কী দুর্দান্ত বাঁকানো শটেই না দূরের পোস্টের পকেট জালে বলটা রাখলেন জেসুস।

৩৬ মিনিটে জেসুসের গোলের চেয়েও হয়তো বেশি তৃপ্তি দিয়েছে নেইমারের ৬৩ মিনিটের গোলটি। চোট থেকে ফিরে টানা দুই ম্যাচে গোল পেলেন নেইমার। এর পর আর থামতে হয়নি ব্রাজিলকে। স্বাগতিক অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠে ছেড়েছে তাঁরা। বিশ্বকাপের শেষ প্রস্তুতিটা এর চেয়ে ভালো আর হতে পারত না সেলেসাওদের।

আজকের ম্যাচে জেসুস যদি হয় ‘নম্বর নাইন’ পজিশনের ধাঁধার উত্তর, তাহলে নেইমার? ইনজুরি থেকে ফিরে আজই একাদশে প্রথম ফিরলেন ব্রাজিলিয়ান পোস্টার বয়। ব্রাজিলিয়ান ব্র্যান্ডের গোল করে বুঝিয়ে দিলেন সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁকে প্রথম থেকে পাওয়া নিয়ে সমর্থকদের আর দুশ্চিন্তার কিছু নেই। উইলিয়ানের আলতো চিপ বক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বুটের সোলের কাজ দেখিয়ে অস্ট্রিয়া ডিফেন্ডারকে ছিটকে ফেলে প্লেসিংয়ে জালে। এ গোলেই কিংবদন্তি রোমারিওকে ছুঁয়েছেন নেইমার। ব্রাজিলের জার্সিতে দুজনেরই এখন ৫৫টি। নেইমারের সামনে এখন শুধু রোনালদো ও পেলে। নেইমারের এমন ঝলক সঙ্গী করেই রাশিয়ায় পা রাখবে ব্রাজিল, সেলেসাও সমর্থকদের আপাতত আর দরকার আছে কিছু!

আগের ম্যাচেই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ইনজুরি থেকে ফিরেছেন নেইমার। বদলি হিসেবে নেমে গোলও করেছিলেন। কিন্তু এরপরেও সমর্থকদের শুনিয়েছিলেন মন খারাপের খবর-তিনি ৮০ ভাগ ফিট। অর্থাৎ এখনো শতভাগ নয়। কিন্তু আজ বুঝিয়ে দিলেন, এখন তিনি শতভাগ ফিট হয়েই রাশিয়ার বিমানে উঠতে যাচ্ছেন।

ব্রাজিলের আক্রমণভাগে ভারী ভারী সব নাম। কাকে রেখে কাকে খেলাবেন তিতে, এই মধুর সমস্যা নিয়েই তো তাঁর রাতের ঘুম হারাম। অন্তত শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে বোঝা গেল ৪-৩-৩ ফরমেশনের আক্রমণভাগে থাকছেন নেইমার, জেসুস ও উইলিয়ান। স্বাভাবিকভাবে বার্সেলোনা তারকা কুতিনহোকে চলে আসতে হয়েছে একটু নিচে প্লে মেকারের ভূমিকায়। সে ভূমিকাতেই দেখা যাচ্ছে কুতিনহোকে। এমন আক্রমণভাগ থাকলে সমর্থক হিসেবে নিশ্চিন্ত তো থাকাই যায়। ৬৯ মিনিটে শেষ গোলটিও এল তাঁর পা থেকে। বদলি ফিরমিনোর রক্ষণ চেরা পাস পেয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে কোনাকুনি শটে জালে জড়ান বার্সেলোনা এই ফরোয়ার্ড।

শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ৩-০ গোলের জয়ই শুধু প্রাপ্তি নয় ব্রাজিলের। খুঁজলে পাওয়া যাবে অনেক ইতিবাচক বিষয়ও। আগের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতলেও সে ম্যাচে দেখা যায়নি রক্ষণভাগে দৃঢ়তা। আজকের ম্যাচ দেখে বোঝা গেল সিলভা, মিরান্ডাদের নিয়ে ভালোই কাজ করেছেন তিতে। বল নিয়ন্ত্রণেও অনেক এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সালটা রঙিন করে তুলল নেইমার বাহিনী। হেক্সা স্বপ্নে বিভোর ব্রাজিলিয়ানদের এবার চোখ রাখার পালা রাশিয়ায়।