সুইজারল্যান্ডের গোলটা কি বৈধ? ভিএআরের রায় চায় ব্রাজিল

>এই বিশ্বকাপেই শুরু হয়েছে ভিএআর বা ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির ব্যবহার। কিন্তু মাঠের খেলোয়াড়েরা নন, ভিএআরের সাহায্য নেওয়াটা পুরোপুরি মূল রেফারির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। রেফারি নিজে ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে নিজেই কি তা পরখ করে দেখবেন? খেলোয়াড়েরা কি আবেদন করতে পারবেন? বেশি আবেদন করলে আবার রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে দেবেন না তো? অনেক রকম বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে ভিএআর নিয়ে

এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ড ১-১ গোলে আটকে দিয়েছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে। তবে ব্রাজিল কনফেডারেশন এখনো মনে করে, সেই ম্যাচে রেফারি দুটি ভুল সিদ্ধান্ত না দিলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারত তারা।

কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। এই বিশ্বকাপেই প্রথমবারের মতো ব্যবহার শুরু হয়েছে একটি বিশেষ প্রযুক্তির। ভিএআর নামের এই প্রযুক্তির কাজই হলো মাঠের মধ্যে রেফারির চোখ এড়িয়ে কোনো ঘটনা ঘটলে বা রেফারি কোনো ভুল করলে রিপ্লে দেখার মাধ্যমে সেই ভুল শোধরানোর। এর মধ্যে রেফারির বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তই ভিএআরের সাহায্য নিয়ে বদলানো হয়েছে।

এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে পেনাল্টি পেয়েছে ফ্রান্স। সেই গোলে ফ্রান্সকে জিতিয়েছেন আঁতোয়ান গ্রিজমান। আবার গতকাল দক্ষিণ কোরিয়া বনাম সুইডেনের ম্যাচে ডি-বক্সের মধ্যে একটা বাজে ট্যাকলের ঘটনা চোখ এড়িয়ে যায় রেফারির। সুইডেনের এক খেলোয়াড়ের দীর্ঘ সময় ধরে রেফারির পিছে লেগে থেকে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভিএআর নেওয়া হয়। রেফারি মানেন, সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। এটা পেনাল্টি হবে। আর সেই পেনাল্টিতে গোল করে সুইডেনকে জয় এনে দেন দলের অধিনায়ক আন্দ্রেয়া গ্রাঙ্কভিস্ট।

ব্রাজিলের ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের হয়ে স্টিভেন জুবের গোল করে সমতায় এনেছিলেন দলকে। ওই গোল নিয়েই ব্রাজিলের আপত্তি। ব্রাজিল মনে করছে, গোলটা করার আগে জুবের তাঁর মার্কার ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডার মিরান্ডাকে ধাক্কা দিয়ে নিজের জন্য সুবিধা করে নিয়েছিলেন। যেটা না করলে হয়তো তিনি ঠিকমতো হেডটা করতে পারতেন না। মিরান্ডা ফাউলের শিকার। মাঠে ব্রাজিলীয় খেলোয়াড়দের শত প্রতিবাদে সেদিন কর্ণপাত করেননি রেফারি। ভিএআরের রিপ্লে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার হলে রেফারির এই ভুলটা ঠিকই সামনে আসত, এমনটাই মনে করছে ব্রাজিল।

VAR-এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে এখনো সন্দিহান ব্রাজিল!
VAR-এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে এখনো সন্দিহান ব্রাজিল!

ব্রাজিলের দ্বিতীয় অভিযোগ সুইস ডিফেন্ডার ম্যানুয়েল আকাঞ্জির বিরুদ্ধে। ব্রাজিল স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে জড়িয়ে ধরে ডি-বক্সের মধ্যে ফেলে দিলেও রেফারি পেনাল্টি দেননি সেদিন। ব্রাজিল মনে করছে, ভিএআর প্রযুক্তির সাহায্য নিলে সেটাও পেনাল্টিই হতো। শুধু প্রশ্ন তুলেই ক্ষান্ত হয়নি ব্রাজিল, ফিফার কাছে রীতিমতো দরখাস্তও করেছে তারা।

ফিফার কাছে আবেদনে ব্রাজিল দুটি বিষয় ঠিকভাবে জানতে চেয়েছে: ভিএআর সহকারী পাওলো ভ্যালেরি কি মূল রেফারিকে বলেছিলেন সিদ্ধান্তটা একটু যাচাই করে দেখতে? রেফারি নিজেও কি চেয়েছিলেন সিদ্ধান্তটা যাচাই করতে? নিয়ম অনুযায়ী তো গোলের পরপরই ভিএআরের জানানোর কথা ফাউলটা হয়েছিল কি না। রিপ্লে দেখে ভিএআরের কি মনে হয়নি ফাউলটা হয়েছিল? রেফারি নিজেও কি জানতে চেয়েছিলেন ফাউল হয়েছিল কি না?