জেলে এখন লুলা, শেখাচ্ছেন খেলা!

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা একজন ফুটবলপ্রেমী। ফাইল ছবি
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা একজন ফুটবলপ্রেমী। ফাইল ছবি

বিশ্বকাপ এলে যে কেউ ফুটবল-বিশ্লেষক বনে যান। এলেবেলে লোকজন থেকে রথী-মহারথীরা পর্যন্ত ম্যাচ বিশ্লেষণ করেন, নানা রকম নিদান দেন। এমনকি জেলখানায় বসেও কেউ কেউ হয়ে যান বিশ্লেষক, কলাম লেখক। ব্রাজিলের একসময়কার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তি এই দায়িত্বই পালন করছেন নিজ দেশের জেলে বসে।

জেলে নতুন ক্যারিয়ারের সন্ধান পেয়েছেন ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা। আগামী এক মাস ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে মেতে থাকবে ব্রাজিল। তখন অন্তত এই ক্ষেত্রটিতে হতাশ হতে হচ্ছে না লুলাকে। এপ্রিল থেকে তাঁর কারাজীবন শুরু হলেও জুন মাসে এসে একটি ভালো খবরই পেয়েছেন। ব্রাজিলের এক স্পোর্টস চ্যানেল তাঁকে নিয়োগ দিয়েছে ফুটবল বিশ্লেষণের জন্য। আর তারপর থেকেই ফুটবল নিয়ে তাঁকে খুব সজাগ থাকতে দেখা যাচ্ছে।

‘এটা বাছাইপর্ব নয়, এটা বিশ্বকাপ।’ এত দুর্যোগের মধ্যেও রাশিয়া বিশ্বকাপ তাঁর কাছে কত গুরুত্বপূর্ণ, সেটি তাঁর মন্তব্য শুনে বলে দেওয়া যায়, ‘সুইজারল্যান্ড ভালো ডিফেন্ড করেছে, অনেক বেশি ট্যাকল করে ব্রাজিলকে খেলতে দেয়নি। আর তাই ব্রাজিল সুবিধা করে উঠতে পারেনি। তারা নেইমারকে আটকাতে বারবার ফাউল করেছে।’

লুলা মন্তব্য করেছেন অন্যান্য দল নিয়েও, ‘বিশ্বকাপের প্রথম সপ্তাহ প্রমাণ করে দিয়েছে, জার্মানি অপরাজেয় কোনো দল নয়।’ আর তাঁর মতে বড় খেলোয়াড়দের মধ্যে শুধু রোনালদোই নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পেরেছেন। ফুটবল–পাণ্ডিত্য বোঝাতে গিয়ে লুলা বেশ কিছু ফুটবল–রূপক ব্যবহার করেছেন তাঁর বিশ্লেষণে। তাঁর এমন খারাপ সময়ে সমর্থন বাড়াতে ব্রাজিলের ক্লাব করিন্থিয়ানসের প্রশংসা করতে ভোলেননি।

ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি যে ভালোভাবেই নিয়ে রেখেছেন ৭২ বছর বয়সী সাবেক এই প্রেসিডেন্ট, তা বেশ বোঝা যাচ্ছে। আগামী এক মাস তিনি তাঁর মন্তব্য লিখে পাঠিয়ে দেবেন চ্যানেলটিতে, আর সেটি লিখিত অবস্থায় প্রচার করবে তারা। আর যদি পুরো বিশ্বকাপেই নিজের বিশ্লেষণ জানিয়ে যান এভাবে, তাহলে ফুটবলের দেশ ব্রাজিলের ফুটবল উন্মাদনায় নতুন মাত্রা যোগ হবে, সে কথা বলাই যায়।

লুলা ডি সিলভা ব্রাজিলের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন তিনি। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ বছরের এপ্রিল মাসে তাঁকে ১২ বছরের কারাভোগ দেন ব্রাজিলের আদালত।