তারা ফুটবলার, তাঁরা বাবা

চলছে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ। তারকা ফুটবলাররা এরই মধ্যে মাঠে নৈপুণ্যের ঝলক দেখাতে শুরু করেছেন। মাঠে ফুটবল নিয়ে যেমন তাঁরা ভীষণ মনোযোগী, তেমনি নিজের সন্তানদের কাছে তারকা ফুটবলাররা শুধুই বাবা। আজ পড়ুন এমনই কয়েকজন তারকা বাবা ফুটবলারের কথা।


ছেলেই নেইমারের সব
মাত্র ১৯ বছর বয়সেই বাবা হয়েছিলেন ব্রাজিলীয় ফুটবল তারকা নেইমার। ছেলে ডেভি লুকা দ্য সিলভা সান্তোস। ডেভির জন্মের সময় হাসপাতালে থাকার সুযোগটি হাতছাড়া করেননি নেইমার। ছেলের নাম প্রথমে ম্যাথিউস রাখার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। পরে মায়ের কথায় ছেলের নাম ডেভি লুকা রাখেন। ছেলেকে প্রায় খেলাতেই নেইমারকে উৎসাহ দিতে মাঠে দেখা যায়। ছেলে আর তার দাদিকে নিয়ে নেইমারের দিন এখন একরকম ভালোই কেটে যাচ্ছে।


মেসির তিনে তিন
আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি মাঠের মতো পরিবারেও বেশ সফল। তিন সন্তানের বাবা মেসির বড় ছেলে থিয়াগো মেসি রোকুজ্জোকে নিয়ে গণমাধ্যমগুলোর একসময় আগ্রহ ছিল। সেই ছেলেকে নিয়ে মেসিকে অনেকবারই মাঠে দেখা গেছে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এমন সব প্রতিযোগিতার ফাইনালে থিয়াগোর হাতে দেখা যায় মেসির বড় বড় শিরোপা। থিয়াগো যেন স্টেডিয়ামের সাইড বেঞ্চে বসে, সে জন্য বাবা তাকে উৎসাহ দেন। ২০১৫ সালে মেসির ঘরে আসে মাতো মেসি। এ বছর মেসির ঘরে আসে ছোট ছেলে সিরো। তিন সন্তান আর ফুটবল নিয়ে বেশ ভালোই আছেন বাবা মেসি।


সালাহ-কন্যাও হবে ফুটবলার
মিসরীয় ফুটবলার মোহাম্মদ সালাহর কন্যার ফুটবলে আগ্রহ দেখে তাকে যে কেউ ভবিষ্যতের ফুটবলার হিসেবে ডাকতেই পারেন। খেলার অনুশীলনে মেয়ে মাক্কা মোহাম্মদ সালাহকে বাবার সঙ্গেই দেখা যায়। বাবা-মেয়েকে ফুটবল মাঠে দেখে যে কেউ চমকে যেতে পারেন।


ছেলেদের নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত রোনালদো
ফুটবলজীবনের বাইরে পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ছেলেদের নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত থাকেন। কখনো সুইমিংপুলে, কখনো দূরের কোনো দ্বীপে, আবার কখনো কোনো শপিং মলে দেখা যায়। রোনালদো চার সন্তানের বাবা। বড় ছেলে ক্রিস্টিয়ানইনহো, যার নামের অর্থ খুদে ক্রিস্টিয়ানো। বাবার সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে জনপ্রিয় সে। গেল বছর রোনালদোর ঘরে আসে মেয়ে ইভা। সন্তান আলানা মার্টিনা দ্যস সান্তোস অ্যাভেইরো, ইভা মারিয়া দ্যস সান্তোস, ম্যাটেও রোনালদো আর ক্রিস্টিয়ানোকে নিয়ে বাবা রোনালদোর ব্যস্ততার যেন শেষ নেই।


বেকহাম সত্যিকারের বাবা
অনলাইনের বিভিন্ন জরিপে সেরা বাবার তকমা অনেক বছর ধরেই ফুটবলার ডেভিড বেকহামকে দেওয়া হয়। মাঠে যেমন নান্দনিক ছিলেন বেকহাম, তেমনি পরিবার নিয়ে আদর্শ হিসেবেই সারা বিশ্বে ভক্তদের কাছে এখনো আলোচিত বেকহাম। ব্রুকলিন বেকহাম, হারপার সেভেন, রোমিও জেমস আর ক্রুজ বেকহামের বাবা ডেভিড বেকহাম। যতই কর্মব্যস্ততা থাকুক না কেন, বেকহাম সন্তানদের জন্য সব বাদ দেন। সন্তানদের সময় দেওয়া বেকহামের প্রতিদিনকার আনন্দের একটি কাজ। একসঙ্গে ঘোড়ায় চড়া, কেনাকাটা করা, আইসক্রিম খেতে যাওয়ার মতো সাধারণ বাবাদের কাজে ভীষণ আনন্দ পান বেকহাম।


 ইব্রাহিমোভিচও দারুণ বাবা
সুইডিশ তারকা ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের দুই সন্তান। দুজনেই বাবার পথ ধরে ফুটবলার হতে চায়। এরই মধ্যে দুজন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড একাডেমিতে ভর্তি হয়েছে। বাবার পথ ধরে কতটুকু এগোতে পারে ম্যাক্সিমিলিয়ান ও ভিনসেন্ট, তা-ই এখন দেখার বিষয়।


পগবার পিতা অনুপ্রেরণা
ফরাসি ফুটবল তারকা পল পগবার বাবা ছিলেন অভিবাসী। বাবা ফ্যাসোঁ অ্যান্তোনি পগবার কষ্টের কারণেই পল আজ ফরাসি ফুটবলার। সেই বাবা ২০১৭ সালে মারা যান। সেই বাবার অনুপ্রেরণায় এখনো পথ দেখেন পগবা। এমনকি ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাবার ছবিযুক্ত শিন-প্যাড পরে মাঠে নেমেছিলেন। প্রথম ম্যাচের জয়কে বাবার জন্য উৎসর্গ করেছিলেন পগবা।

গ্রন্থনা: জাহিদ হোসাইন খান। সূত্র: হাফিংটন পোস্ট, থটকো ও দ্য গার্ডিয়ান