ফুটবলে 'ইংরেজ যুগে'র উজবেক পরীক্ষা

>ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় কাল শুরু হচ্ছে এশিয়ান গেমসের ফুটবল প্রতিযোগিতা। প্রথম দিনেই বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ১৯৯৪ সালের হিরোশিমা এশিয়াডের সোনা জয়ী উজবেকিস্তান।
এশিয়ান গেমস ফুটবলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ফুটবল দল। ছবি: বাফুফে
এশিয়ান গেমস ফুটবলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ফুটবল দল। ছবি: বাফুফে

ঢাকা-কাতার-দক্ষিণ কোরিয়া ঘুরে বাংলাদেশের এশিয়াড ফুটবল দলের এবার আসল পরীক্ষায় বসার পালা। ১৮ আগস্ট থেকে জাকার্তায় শুরু হতে যাওয়া এশিয়ান গেমসের ফুটবল শুরু হয়ে যাচ্ছে কালই। উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নিজেদের মিশন শুরু করতে যাচ্ছে। আজই জাতীয় দলের কোচ হিসেবে প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচের ডাগআউটে দাঁড়াবেন ইংলিশ কোচ জেমি ডে।

এক ইংরেজের বদলেই তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন জাতীয় দলের। গত মার্চ পর্যন্ত জাতীয় দলের দায়িত্বে ছিলেন ইংলিশ-অস্ট্রেলীয় কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ড। তিনি অবশ্য অস্ট্রেলীয় নাগরিকই ছিলেন। গত জুন থেকে জেমির অধীনে অনুশীলনের পাশাপাশি কাতার ও কোরিয়ায় তাঁর অধীনে চারটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতিপক্ষ ভালো মানের না হওয়ায় জেমির আসল পরীক্ষাটা এখনো হয়নি। আজই জাকার্তায় দিতে হবে সে পরীক্ষা। ইংলিশ কোচ নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন, শুরুতেই কিনা মুখোমুখি হতে হবে এমন একটি দলের বিপক্ষে, যেকোনো পর্যায়ে যাদের সঙ্গে বিপর্যয়ই বারবার সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশের। গ্রুপ ‘বি’ তে বাংলাদেশের অন্য দুই প্রতিপক্ষ কাতার ও থাইল্যান্ড।

এশিয়ান গেমস ফুটবলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ফুটবল দল। ছবি: বাফুফে
এশিয়ান গেমস ফুটবলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ফুটবল দল। ছবি: বাফুফে

২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনের সর্বশেষ এশিয়ান গেমসে উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশে। এ ছাড়া এর আগে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে জাতীয় সালের বিপক্ষে তিনবার যথাক্রমে ৬-০, ৪-০ ও ৫-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাইয়েও ৪-০ গোলের হার সঙ্গী বাংলাদেশের। তবে আশার কথা হলো গত বছর তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাইপর্বে উজবেকিস্তানের বিপক্ষে শেষ মুখোমুখিতে লড়াই করে ১-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। তাও আবার শেষ মুহূর্তে আত্মঘাতী গোলে। সে দলের অধিনায়ক টুটুল হোসেন বাদশা, সহ অধিনায়ক রহমত মিয়া, জাফর ইকবাল, মাহবুবুর রহমান সুফিলসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় আছেন বর্তমানে জেমির দলে। আরও একবার উজবেকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগে নতুন কোচকে তারা কিছুটা অভয় দিতেই পারেন।

কোচ হিসেবে জেমির পছন্দের কৌশল ৪-২-৩-১। তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন সাবেক ব্রাজিলীয় কোচ এডসন সিলভা ডিডোকে। ২০০৯ সালে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলিয়ে বাংলাদেশকে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের চূড়ান্তপর্বের টিকিট পাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ডিডোর সেই পছন্দের ফরমেশনটাই এখন জেমির ট্যাকটিকস বোর্ডে। সে অনুযায়ী জেমির সম্ভাব্য একাদশে পোস্টের নিচে আশরাফুল রানা, দুই সেন্টার ব্যাক তপু বর্মণ ও টুটুল হোসেন, দুই ফুলব্যাক রহমত মিয়া ও বিশ্বনাথ ঘোষ। হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে জামাল ভূঁইয়ার সঙ্গে থাকবেন মাশুক মিয়া জনি। তাদের ওপরে ডান প্রান্তে মাহবুবুর রহমান, বা প্রান্তে রবিউল হাসান ও নাম্বার টেন হিসেবে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। আর জেমির ‘নাম্বার নাইন’ সাদউদ্দিন।

গত এশিয়াডে মামুনুল ইসলামের গোলে আফগানিস্তানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ১৯৮৬ সালের সিউল এশিয়ান গেমসে নেপালকে হারানোর পর সেটি ছিল ২৮ বছর পর এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফুটবল ইভেন্টে বাংলাদেশের প্রথম জয়। গতবার উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিতে ৩-০ গোলে হারলেও শেষ ম্যাচে হংকংয়ের সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে বাংলাদেশ হেরেছিল ২-১ গোলে। হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় পর্বেই খেলতে পারত। এবারের দৃশ্যপট পুরোপুরি আলাদা। কঠিন গ্রুপে দল। ফল যা-ই হোক। লড়াইটা যেন বাংলাদেশ করে—এই প্রত্যাশা তো থাকতেই পারে।