রোনালদো-দিবালার এই তো দারুণ জুটি!

দিবালার গোলের পর তাঁকে অভিনন্দন রোনালদোর। ছবি: এএফপি
দিবালার গোলের পর তাঁকে অভিনন্দন রোনালদোর। ছবি: এএফপি
>জুভেন্টাসে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আসার পর গুঞ্জন উঠেছিল, আক্রমণভাগে পর্তুগিজ তারকার সঙ্গে পাওলো দিবালার মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে। দিবালা নাকি দল বদলানোর কথাও ভাবছেন। কিন্তু কাল জুভেন্টাসের আক্রমণভাগে দিবালা-রোনালদোর বোঝাপড়া দেখে বোঝা গিয়েছে, দারুণ জমে উঠেছে এই জুটি

পাওলো দিবালার ভাগ্য বটে। খুব কম খেলোয়াড়ের কপালে এই ভাগ্য হয়, একই সঙ্গে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে খেলার। ক্লাবের হয়ে রোনালদো আর জাতীয় দলে হয়ে মেসির সঙ্গে খেলার সেই সম্ভাবনার সামনে যখন দিবালা, তখন গড়বড়। ওদিকে মেসি কবে আর্জেন্টিনার জার্সিতে ফিরবেন কেউ জানে না। আর রোনালদোর কারণে দিবালার জুভেন্টাস ক্যারিয়ারই নাকি পড়ে গেল হুমকির মুখে। গত কয়েক মৌসুম ধরে জুভেন্টাসের প্রাণভোমরা হয়ে ছিলেন যে দিবালা, রোনালদো আসার পর তিনিই জায়গা খুঁজে পেলেন সাইড বেঞ্চে!

তখন একটা কথা বারবার বলা হচ্ছিল। জাতীয় দলে যেমন মেসি ও দিবালা একই সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন না; রোনালদোর বেলাতেও নাকি একই ব্যাপার! জুভেন্টাসের এই মৌসুমের প্রথম ৭ ম্যাচের তিনটিতে খেলানো হয়নি দিবালাকে। বদলি হিসেবেও নয়। দুজনের মানিয়ে নিতে যে সমস্যা হচ্ছিল, সেটা মাঠের খেলাতেও পরিষ্কার। গতবার লিগে ২২ গোল করেছেন যে দিবালা, সেই তিনি এবার জালই খুঁজে পাচ্ছিলেন না! এমনও তো শোনা গিয়েছিল, দিবালা নাকি দলই বদলানোর কথা ভাবছেন!

অবশেষে ম্যাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি যেন দাওয়াইটা খুঁজে পেয়েছেন। সর্বশেষ দুই ম্যাচে দিবালাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলিয়েছেন। দুই ম্যাচেই দিবালা দিলেন চনমনে। গোলে শট নিয়েছেন সাতটি। কাল পেয়ে গেলেন কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখাও। লিগে ৬ ম্যাচের ছয়টিতেই জয় তুলে নেওয়ার পথে বোলোনিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়েছে জুভেন্টাস। রোনালদো এ ম্যাচে গোল পাননি, মাতুইদিকে দিয়ে গোল করিয়েছেন। আর এই ম্যাচে দিবালা-রোনালদোর বোঝাপড়া দেখে বোঝা যাচ্ছিল, দারুণ জমে উঠছে এই জুটি। জুভ কোচ তাই বলছেন, সামনের দিনগুলোতে সি-ডি জুটি হয়ে উঠবে ভয়ংকর!

অ্যালেগ্রি বলেছেন, ‘পাওলো দারুণ খেলেছে এ ম্যাচে। আগের ম্যাচেও তা-ই খেলেছিল। এটা স্বাভাবিক, নিজের সেরাটায় ফিরবে ও ধীরে ধীরে। আজ রাতে ওরা দুজনই ভালো খেলেছে। ওরা দুজন একসঙ্গে আরও যত বেশি ম্যাচ খেলবে, তত বেশি একে অপরকে বুঝবে। আরও অনেক উন্নতির সুযোগ আমি দেখছি ওদের মধ্যে।’

প্রথমে ভাবা হয়েছিল, আক্রমণে রোনালদোর সঙ্গী হিসেবে মারিও মানজুকিচই বোধ হয় বেশি মানানসই। অ্যালেগ্রি নিজেও মানজুকিচকে বেশি সুযোগ দিচ্ছিলেন। কিন্তু এবার মানজুকিচকে বেঞ্চে জায়গা খুঁজে নিতে হলো। অ্যালেগ্রি অবশ্য তাঁকে হতাশ হতেও বারণ করছেন। কারণ তিনি মনে করেন, রোনালদো, মানজুকিচ ও দিবালাও আক্রমণের ত্রিফলা হয়ে উঠতে পারেন। বিবিসি, এমএসএন, কাভানি-নেইমার-এমবাপ্পে ত্রয়ীদের মতো।

এখানে আর্জেন্টিনা সমর্থকদেরও খুশির কারণ আছে বৈকি। রোনালদো-দিবালা যদি মানিয়ে যান এক একাদশে, তবে কেন মেসি-দিবালা নন? এটা ঠিক, মেসি ও দিবালার খেলার পজিশন প্রায় একই রকম। ধরনও এক। দুজনই বেশি জায়গা চান খেলার জন্য। দুজনই খেলা বানিয়ে দিতে পারেন, সমান তালে গোলস্কোরারও। কিন্তু এ সময়ের সেরা দুই খেলোয়াড়কে কীভাবে একই দলে খেলাতে হয়, সেটির উত্তর অ্যালেগ্রি তো ঠিকই খুঁজে বের করলেন। এবার সেই উপায় বের করতে হবে আর্জেন্টিনার কোচদের কাউকে।