যুবারাও লিখল আক্ষেপের গল্পই

>ভারতের বিপক্ষে আরও একটি হার। এবার অনূর্ধ্ব-১৯ দল। যুব এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালে আজ ভারতের কাছে ২ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। লেখা হয়েছে আরেকটি আক্ষেপের গল্প!
ব্যাটিং ব্যর্থতায় যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়া হলো না অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। ছবি : বিসিবির সৌজন্যে
ব্যাটিং ব্যর্থতায় যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়া হলো না অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। ছবি : বিসিবির সৌজন্যে

এটা কী করলেন মিনহাজুর রহমান আর রকিবুল হাসান? অবশ্য দুজন ম্যাচ শেষে যেভাবে হতাশায় উইকেটে পড়ে রইলেন, প্রশ্নটা করাটাও অমানবিক দেখায়। কিন্তু বাংলাদেশ আর কত এভাবে দুঃখের গল্প লিখবে? ২২ বলে ৩ রান দরকার ছিল, ম্যাচটা প্রায়ই হাতের মুঠোয় এসেছে, তখন নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে মিনহাজের পাগলে দৌড়! পরিণতি? বাংলাদেশের ২ রানের হার।

গঙ্গাপুরামের বলটা রকিবুল হাসান শর্ট থার্ড ম্যানে ঠেলেছিলেন। হাতে যেহেতু যথেষ্ট বল আছে, এই তাড়াহুড়োর কোনো দরকার ছিল না। মিনহাজের তর সইল না। দিলেন ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়। রকিবুল যখন না করেছেন, ততক্ষণে মিনহাজ অর্ধেক পিচ চলে গেছেন। তাঁকে ফেরার সুযোগ দেয়নি ভারতীয় ফিল্ডার বাদোনি। রোমাঞ্চ, উত্তেজনা ছোটদের লড়াইয়েও। কিন্তু পরিণতি যে এক। বড়দের মতো মনের বাঘে খেয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে! ভারতের মতো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে ১৭২ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েও ম্যাচটা বাংলাদেশ নিজেদের করেও নিতে পারেনি। দুর্দান্ত এই জয়ের পর ভারতীয় যুবারা যখন বুনো উল্লাসে মেতেছেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে, বাংলাদেশের শেষ দুই ব্যাটসম্যান তখন হতাশায় নুয়ে পড়েছে উইকেটে। এই যাতনার দৃশ্য বাংলাদেশের দেখতে হয় না, যদি শুরুটা ভালো হতো।

১৭৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু যতটা ভালো হওয়া দরকার ছিল, সেটি হয়নি। বরং ভারতীয় বোলারদের সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের টপ অর্ডার। ৭ রানে ওপেনার সাজিদ হোসেনকে (২) দিয়ে শুরু। ব্যাটিং বিপর্যয়ের ছবিটা দেখা গেল ২০ ওভার পর্যন্ত। যখন বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে ৬৫। এরপরই খেলাটা নিজেদের মুঠোয় আনার প্রাণান্তকর চেষ্টা শামীম হোসেন ও আকবর আলীর ষষ্ঠ উইকেটে ৭৪ রানের জুটি। এই জুটিই স্বপ্ন দেখিয়েছে, মনে হয়েছে এবার অন্তত আক্ষেপে পুড়বে না বাংলাদেশ। কিন্তু কোথায় কী? হার্শ ত্যাগীর শিকার হয়ে ৪৫ রান করা আকবর আলী আউট হতেই আবারও এলোমেলো বাংলাদেশ। ৫ উইকেটে ১৩৯ থেকে চোখের পলকে স্কোর হয়ে গেল ৯ উইকেটে ১৬১, ২২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট নেই! বাংলাদেশ আরও বিপাকে, এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৯ করা শামীমও আছেন!

তখনই চরম উত্তেজনা, ৩৯ বলে বাংলাদেশের দরকার ১২ রান। ভারতের ১ উইকেট। স্নায়ুক্ষয়ী মুহূর্তে বাংলাদেশের শেষ উইকেট যখন ধীরে ধীরে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখনই সেই পুরোনো গল্প। আরও একবার তীরে এসে তরি ডুবল বাংলাদেশের। কথা হচ্ছে, এই আফসোস, এই আক্ষেপের শেষ কোথায়? কী সিনিয়র দল, কী যুব দল—সবখানে কি শুধু দুঃখের গল্পই লেখাই হবে? বাংলাদেশ কি ক্রিকেটের নতুন ‘চোকার’ হতে যাচ্ছে?