'মনের বাঘ' খাচ্ছে ক্রিকেটারদের?

>
ভারতের কাছে হেরে আবারও স্বপ্ন ভঙ্গ! এবার হেরেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
ভারতের কাছে হেরে আবারও স্বপ্ন ভঙ্গ! এবার হেরেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।

কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ২ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। বারবার কেন তীরে এসে তরি ডুবছে বাংলাদেশের। বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে? ভারতের সঙ্গে পার্থক্যটা অভিজ্ঞতায় নাকি শক্তিমত্তায়? নাকি মনের বাঘেই কাবু হয়ে পড়ছেন ক্রিকেটাররা।

আবারও তীরে এসে তরি ডোবার গল্প লিখেছে বাংলাদেশ। এবার সিনিয়ররা নয়, জয়ের খুব কাছে এসে হারের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে যখন শ্বাসরুদ্ধকর সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ২ রানে হারলেন যুবারা, প্রশ্ন উঠল, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্যটা আসলে কোথায়? ভারত ক্রিকেটে পুরোনো দল, বড় দল বলেই কী খেলোয়াড়দের মধ্যে এই মানসিক বাধা দেয়াল তুলে দাঁড়াচ্ছে?

এ প্রশ্নে জোর আপত্তি আছে খালেদ মাহমুদের। কাল সেমিফাইনালের পর বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার উল্টো প্রশ্ন করলেন, ‘আমরা তিনটা এশিয়া কাপের ফাইনালিস্ট, এখন ছোট দল হই কীভাবে?’ বাংলাদেশ যদি ‘বড়’ দল হয়ে ওঠে তবুও কেন গেরোটা কাটতে পারছে না? মাহমুদের ব্যাখ্যা, ‘আমরা ফাইনাল জিততে পারছি না, এটা বলতে পারেন। এখানে ভাগ্যের একটা ব্যাপার থাকে। ক্রিকেটে অনেক সময় ভাগ্যের ছোঁয়া লাগে। হয়তো ভাগ্য আমাদের পক্ষে কথা বলছে না। হয়তো ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা ছোটখাটো ভুল করছি। এটা ঠিক যে সিনিয়র দলের এখন ম্যাচ জেতা শিখে ফেলা উচিত। কিন্তু জুনিয়র (যুব) দলের এটা মাত্র শুরু। বিশ্বাস করি এরা (ব্যর্থতা) থেকে বের হয়ে আসবে। সামনে অনেক সিরিজ আছে। আশা করি পরের (যুব) বিশ্বকাপের আগে আমরা একটা গোছাল দল পেয়ে যাব।’

কাল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সামনে দারুণ সুযোগ ছিল ফাইনালে ওঠার। নানা বাঁক পেরিয়ে বাংলাদেশ জয়ের খুব কাছে চলেও গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মাত্র ২ রান দূরে থেকে পা হড়কানো। রোববারের ফাইনালে ভারত-শ্রীলঙ্কা যখন অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে, বাংলাদেশকে সেটি দেখতে হবে ‘দর্শক’ হয়ে। কেন এবারও পারল না বাংলাদেশ? মাহমুদ পুরোনো ব্যাখ্যাটাই দিলেন, মনের বাঘে খেয়েছে যুবাদেরও, ‘আমি মনে করি তাদের একটা ভালো অভিজ্ঞতা হলো। আমরা জেতার খুব কাছাকাছি গিয়েছি, কিন্তু প্যানিক করে হেরেছি। এটা হয়েছে বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতার অভাবে। ওরা এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে আশা করি। ফাইনাল খেলতে পারলে খুব ভালো লাগত। তবুও প্রথম ম্যাচে হারের পর তারা যেভাবে খেলেছে সেটা প্রশংসনীয়। শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে রান রেটের হিসেব ছিল। ভারতের সঙ্গেও লড়াই করেছে। এ দল ভবিষ্যতে অনেক দূরে যাবে।’

এশিয়া কাপে ফাইনালে শেষ বলে হেরেছে বাংলাদেশের সিনিয়াররা। এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনাল হারল জাতীয় দল। খেলায় হার-জিত থাকতেই পারে কিন্তু বড় ম্যাচে স্নায়ুর পরীক্ষায় উতরে যাওয়াটা যে খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তে এভাবে বারবার হোঁচট খেতে থাকলে বাংলাদেশের নামের পাশে ক্রিকেটের নতুন ‘চোকার’ তকমা যোগ হতে সময় লাগবে না!