আফসোস জাগিয়ে হার বাংলাদেশের

গোটা ম্যাচেই বিপলুকে এভাবেই বন্দী করে রেখেছে ফিলিপাইনের ডিফেন্ডাররা। ছবি: শামসুল হক
গোটা ম্যাচেই বিপলুকে এভাবেই বন্দী করে রেখেছে ফিলিপাইনের ডিফেন্ডাররা। ছবি: শামসুল হক
>

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ফিলিপাইনের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ।

আর কয়টা সুযোগ পেলে গোলের রাস্তা খুঁজে পেত বাংলাদেশ? ম্যাচ শেষে প্রশ্নটা উঠলে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কারণ বাংলাদেশের দুই ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন ও তৌহিদুল আলম সবুজের বেশ কয়েকটা গোল মিস, যার খেসারত বাংলাদেশকে দিতে হয়েছে ফিলিপাইনরে কাছে ১-০ গোলে হেরে। বাংলাদেশকে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য পূরণ ফিলিপাইনের। বাংলাদেশ গ্রুপ রানার্সআপ। ১০ অক্টোবর কক্সবাজারে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে লাল-সবুজের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ফিলিস্তিন।

লাওসের বিপক্ষে দুদলই প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়ায় সেমিফাইনাল নিশ্চিত ছিল। লড়াইটা ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। তার আড়ালে লড়াই ছিল আরেকটা—ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টুর্নামেন্টের সেরা দল ফিলিস্তিনকে এড়ানো। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দুটো সমীকরণই মেলাল ফিলিপাইন।

লাওসের বিপক্ষে একাদশ থেকে চারটি পরিবর্তন নিয়ে দল সাজিয়েছিলেন বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। হারলেও এটা বলতেই হবে, বাংলাদেশ খেলেছে দুর্দান্ত। প্রথমার্ধটা সমান সমান লড়াই হলেও দ্বিতীয়ার্ধের পুরো সময়ে শাসন করেছে লাল-সবুজের দল। কিন্তু গোল হাতছাড়ার খেসারত দেওয়ায় হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্বাগতিকদের।

ভাগ্যের ছোঁয়া পেলে শুরুতেই গোল পেতে পারত বাংলাদেশ। রহমতের লম্বা থ্রোয়ে ফিলিপাইন পোস্টে তপুর হেড (ফ্লিক)। ফিলিপাইন গোলরক্ষক লরি মিশেল কাসাসের হাতে লেগে এক ডিফেন্ডারের মাথার ছোঁয়ায় ক্রসবারে। সেখান থেকে জীবনের হেড আরেক ডিফেন্ডারের গায়ে। গোল হতে হতেও হলো না। ২০ মিনিট পরে বাংলাদেশের গোল হজমটাও হতাশায় মোড়ানো। জামাল ভূঁইয়ার বদলে আজকের ম্যাচের অধিনায়কত্ব পাওয়া ডিফেন্ডার তপু বর্মণের ভুলে ফিলিপাইনকে এগিয়ে দেন ড্যানিয়েল। উড়ে আসা একটি বল তপু বুক দিয়ে নামাতে গিয়ে তুলে দেন প্রতিপক্ষের অধিনায়ক মিশাগের পায়ে। বক্সের ওপর থেকে মিশাগের ছোট্ট একটা পাস। মালয়েশিয়ান সুপার লিগে পেরেকের হয়ে খেলা এই ফরোয়ার্ডের বাড়ানো বলটা নিয়ে মিডফিল্ডার কেনসিরো মিশেলের গড়ানো শট জালে। বাংলাদেশ অধিনায়ক ও রক্ষণের বড় ভরসা তপু স্লাইডিং ট্যাকল করেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পারলেন না।এই গোলটিই শেষ পর্যন্ত হয়ে রইল ম্যাচের মীমাংসা।

দ্বিতীয়ার্ধে দেখা গেল এক দুর্দান্ত বাংলাদেশ দল। পাসের পর পাসের মালা গেঁথে দুই উইং দিয়ে আক্রমণ করল। কখনো মাঝের করিডর দিয়েও প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা ছিল জীবন-সবুজদের। কিন্তু ওই গোলের সামনে গিয়েই গোলমাল পাকিয়ে ফেলায় পরিকল্পিত আক্রমণগুলো নস্যাৎ হয়েছে। ৫০ মিনিটে সবুজের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে ইনসাইড–আউটসাইড ডজে বক্সে ঢুকেছিলেন জীবন। কিন্তু বক্সের সামনে গিয়েও পোস্টেই শট নেওয়ার সাহস দেখাতে পারলেন না। উল্টো মিস পাস! ৭০ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটাও নষ্ট করেছেন গত ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা জীবন। ডান প্রান্ত থেকে তৌহুদুল আলম সবুজের ক্রসে ফ্লাইং হেডে পোস্টেই রাখতে পারলেন না। দুই মিনিট পরে আরও একটা সুযোগ পেলেন সবুজ। ইমন বাবুর নেওয়া কর্নার ফিলিপাইন গোলরক্ষক গ্রিপে নিতে ব্যর্থ হলে সবুজের সামনে পড়ে। তাঁর ভলি বার উঁচিয়ে বাইরে।