ঘুম জাগানো দিনটা পাকিস্তানের

দুই বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই সেঞ্চুরি হাফিজের। ছবি: এএফপি
দুই বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই সেঞ্চুরি হাফিজের। ছবি: এএফপি
>

* দুবাইয়ে প্রথম দিন শেষে ৩ উইকেটে ২৫৫ রান পাকিস্তানের
* ১২৬ রান করেছেন মোহাম্মদ হাফিজ

টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে ঘুমপাড়ানি দিনটা উপহার দিয়েছিল এ দুই দল। কে জানে এবারের দুবাই টেস্টের শেষ দিনটা ১১ অক্টোবর বলেই কি না সে দিনকে মনে করিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা জেগেছিল কি না! শেষ সেশনে অস্ট্রেলিয়া ঘুরে দাঁড়ানোর আগ পর্যন্ত যে ঘুম পাড়ানোর আদর্শ এক ওষুধ বলে বিবেচিত হচ্ছিল দুবাই টেস্ট। টেস্ট ক্রিকেটের নেতিবাচক বিজ্ঞাপনে রূপ নিতে যাওয়া দিনটা প্রাণ পেয়েছে শেষ বিকেলে। তৃতীয় সেশনে অস্ট্রেলীয় বোলাররা নিজেদের খুঁজে পাওয়ায় দিনটা ৩ উইকেটে ২৫৫ রান নিয়ে শেষ করেছে ‘স্বাগতিক’ পাকিস্তান।

১৯৫৬ সালে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান। করাচি টেস্টের প্রথম দিনে মাত্র ৯৫ রান এসেছিল। টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে বিরক্তিকর এক দিন বলে একেই বেছে নিয়েছেন অনেকে। সেদিন তবু বোলাররা ১২ উইকেট পেয়েছিলেন বলে ব্যাটসম্যানরা অজুহাত দেখাতে পারবেন, কিন্তু আজ পাকিস্তান কি দেখাবে?

দুবাইয়ের উইকেটে যে বোলারের জন্য কিছু নেই, সেটা মুদ্রা নিক্ষেপের মুহূর্তেই বোঝা গেছে তা। একে তো ব্যাটিং স্বর্গ, তার ওপর আরব আমিরাতের উত্তাপ। নাথান লায়নের হাতে নবম ওভারেই বল তুলে দিলেন অধিনায়ক টিম পেইন। হ্যাঁ, স্টিভ স্মিথের নিষেধাজ্ঞার সুবাদে অন্তত আগামী মার্চ পর্যন্ত টেস্টে পেইনের কাঁধেই দলের দায়িত্ব। অধিনায়কের দায়িত্ব না হয় পেইন নিয়েছেন। কিন্তু ব্যাটসম্যান স্মিথের শূন্যস্থান কে পূরণ করবেন? সে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ট্র্যাভিস হেডকে। ইনিংস উদ্বোধনে নিষিদ্ধ ডেভিড ওয়ার্নারের জায়গাটা যেমন পেয়ে গেছেন টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট অ্যারন ফিঞ্চ। এ দুজনের সঙ্গেই টেস্ট অভিষেক হয়েছে ম্যারনাস ল্যাবুসচেইনের।

তুলনামূলক পরিচিত ফিঞ্চ বা হেড নয় প্রথম দিন ল্যাবুসচেইনের নামই উচ্চারণ করতে হলো বেশি। কারণ, সম্পূর্ণ ব্যাটসম্যানবান্ধব এক পিচে উইকেটের আশায় ল্যাবুসচেইনের হাতেও উঠেছিল বল। এমন উইকেটে মাথা কুটে মরেছেন আগের দিনেই পার্শ্ব চরিত্র মেনে নেওয়া মিচেল স্টার্ক। বিরুদ্ধ কন্ডিশনে ভালো বল করলেও আরাধ্য উইকেটের দেখা পাননি। প্রথম দুই সেশনে তাঁর মতোই হতাশায় কেটেছে দুই বছর পর টেস্ট খেলতে নামা পিটার সিডলের। আর এ সুযোগে দুই বছর পর ফেরা আরেকজন বুঝে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। ২০১৬ সালের আগস্টের পর এই প্রথম টেস্ট খেলতে নামা হাফিজ চা বিরতির আগেই দশম সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন। তাঁর চেয়ে ভালো খেললেও রান তোলায় পিছিয়ে ছিলেন ইমাম-উল-হক (৭৬)।

এ দুজনের সাবধানী ব্যাটিংয়ে ব্যাটিং স্বর্গেও প্রথম সেশনে মাত্র ৮৯ রান তুলেছে পাকিস্তান। দ্বিতীয় সেশনে রান তোলার গতি বেড়েছে, ৩০ ওভারে এসেছে ১১০ রান। তৃতীয় সেশনে রানের গতিটা বাড়তেও পারত। কিন্তু ৫৪ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওপেনিং জুটিতে দ্বি শতক তোলার জাতীয় রেকর্ড গড়েই বিদায় নিয়েছেন ইমাম। ২০৫ রানে লায়নের বলে ইমামের বিদায়ের পর খুব বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকেননি হাফিজও। হাফিজকে আউট করেই নিজের প্রত্যাবর্তন উদ্‌যাপন করেছেন সিডল। সাবেক অধিনায়ক আজহার আলী রান তোলার গতি আরও কমিয়ে দিয়েও দিন পার করে আসতে পারেননি। ৮০ বলে ১৮ রান করে ফিরেছেন জন হল্যান্ডের বলে ক্যাচ দিয়ে।