বেশি দর্শক যখন দুশ্চিন্তার কারণ!

>
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশ-ফিলিপাইন গ্রুপ পর্বের ম্যাচে উপচে পড়েছিল দর্শক। ছবি: প্রথম আলো
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশ-ফিলিপাইন গ্রুপ পর্বের ম্যাচে উপচে পড়েছিল দর্শক। ছবি: প্রথম আলো

গোল্ডকাপ সেমিফাইনালে কক্সবাজারে আজ মাঠে নামবে তাজিকিস্তান ও ফিলিপাইন। আগামীকাল দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের ম্যাচ নিয়ে দর্শকদের চাপ অনেক বেশি।

দর্শকেরা খেলার প্রাণ। আয়োজকদের সব সময়ের প্রত্যাশা মাঠে আসুক দর্শকেরা। কিন্তু দর্শকদের চাপই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কক্সবাজার জেলা ফুটবল কর্তাদের। আজ বাদে কাল কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সেমিফাইনালে ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ সমর্থকদের মধ্যে এমন সাড়া ফেলেছে যে দর্শকদের মাঠে জায়গা দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আয়োজকেরা।

কক্সবাজার জেলা স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা মাত্র ১০ হাজার। ইতিমধ্যেই জানা গেছে, বাংলাদেশ ম্যাচের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয়রা তো মানতেই চাচ্ছেন না, ঘরের মাঠে জাতীয় দলের খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত হতে হবে তাঁদের। দর্শকেরা খেলা দেখতে এসে মাঠে না ঢুকতে পারলে কী হবে, এ নিয়ে চিন্তিত কক্সবাজার জেলা ফুটবল সংস্থার সহসভাপতি বিজন বড়ুয়া, ‘স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা মাত্র ১০ হাজার। কিন্তু দর্শকদের সাড়া তো এর চেয়ে অনেক বেশি। অনেক মানুষ খেলা দেখতে মাঠে এলে তো বিপদে পড়ে যাব আমরা।’ বিজন বড়ুয়ার কথাতেই বোঝা যায় দর্শকের চাপটা কত বেশি।

জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলার অবশ্য বিকল্প পথও ভেবে রেখেছেন, ‘স্টেডিয়ামের বাইরে প্রজেক্টরে খেলা দেখানোর কথা ভাবছি আমরা। আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করি সম্ভব হবে।’

ঢাকার বাইরে ফুটবল মানেই টইটম্বুর গ্যালারি। আর যদি জাতীয় দলের খেলা হয়, তাহলে তো কথাই নেই! বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সিলেট পর্বে বাংলাদেশ-ফিলিপাইন ম্যাচে উপচে পড়েছিল দর্শক। টিকিট কেটে মাঠে না ঢুকতে পারা দর্শকও ছিল অনেক। পরের দিন খেলা দেখতে না পারা দর্শকদের চার গুণ টাকা ফেরত দিয়েছে সিলেট জেলা ফুটবল সংস্থা। অর্থাৎ ৫০ টাকার টিকিট কেটেও যারা মাঠে ঢুকতে পারেননি, তাঁদের হাতে ফেরত দেওয়া হয়েছে ২০০ টাকা। সিলেট পর্ব শেষে এখন কক্সবাজারে যে কী হয়!

কক্সবাজারবাসী হয়তো ভাবতেই পারেননি, ফিলিস্তিন, ফিলিপাইন, তাজিকিস্তানের মতো তিনটি বিদেশি দলের পা পড়বে সমুদ্রশহরে! কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভেবেছে, কক্সবাজারে খেলা আয়োজন করলে দেশের পর্যটনেও তা বড় ভূমিকা রাখবে। এ কারণেই ফুটবলীয় অবকাঠামোয় কক্সবাজার অনেক পিছিয়ে থাকলেও এখানেই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আকর্ষণীয় দুটি ম্যাচ দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে অপেক্ষার প্রহরই গুনছে কক্সবাজার।

স্থানীয় দর্শকদের জন্য আরও বড় চমক জাতীয় দলে কক্সবাজারের চার স্ট্রাইকার তৌহিদুল আলম সবুজ, উইঙ্গার মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা ও গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। তবে আগামীকাল সবুজেরই শুধু একাদশে থাকার সম্ভাবনা আছে। বদলি নামতে পারেন উইঙ্গার ইব্রাহিমও ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। ঘরের মাঠে ভালো খেলে দর্শকদের আনন্দ উপহার দিতে চান বলে জানিয়েছেন সবুজ, ‘ঘরের মাঠে খেলার আনন্দই আলাদা। আমাদের কাজ হবে দর্শকদের খুশি করে দেওয়া।’

দর্শকদের খুশি করতে জয়ের বিকল্প নেই। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে জয় হতে পারে দর্শকদের জন্য বড় পাওয়া।