এইচবিডব্লু ফিরিয়ে আনা ছাড়া আর কিছু নেই!

ভারতের মাঠে পেসারদের তৃতীয় সেরা বোলিং করেছেন যাদব। ছবি: এএফপি
ভারতের মাঠে পেসারদের তৃতীয় সেরা বোলিং করেছেন যাদব। ছবি: এএফপি
>
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩১১ ও ১২৭
  • ভারত: ৩৬৭ ও ৭৫/০
  • ভারত ১০ উইকেট জয়ী
  • ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় ভারতের

এমন দৃশ্য খুব কম দেখা যায়। আম্পায়ার নিজ থেকে বোলারকে বলছেন ‘সরি!’

মাত্র একটি রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একটু হলেই পাল্টানো যায়, এমন সিদ্ধান্ত। ‘আম্পায়ার্স কল’ দেখে উইন্ডিজের খেলোয়াড়দের চেহারায় হতাশা, এমন অবস্থায় ফিক করে হেসে দিলেন আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড। বোলারের এমন হতাশায় হাসা ঠিক হয়নি ভেবেই এভাবে ক্ষমা চাওয়া। জেসন হোল্ডারও মজায় অংশ নিলেন। এগিয়ে এসে গোল্ডের ডান হাতের তর্জনী তুলে আউটের ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করলেন।

সিদ্ধান্তটা আউট দিলেও ভারতের হয়তো কিছু আসত-যেত না। কিন্তু প্রায় দুই যুগ আগের একটা স্মৃতি মাঠে ফিরে এসেছিল। ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে শচীন টেন্ডুলকারের একটি আউট নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। গ্লেন ম্যাকগ্রার বলে বাউন্সারে ডাক করতে গিয়েছিলেন টেন্ডুলকার। কিন্তু সে বল হাতের ওপরের অংশে লাগে তাঁর। ম্যাকগ্রার জোরালো আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। পরে সে বিতর্ক এইচবিডব্লু শিরোনামে বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল। লেগ বিফোর? আরে এ তো হ্যান্ড বিফোর উইকেট!

শচীনের মতোই উচ্চতার পৃথ্বী শ হোল্ডারের বাউন্সারে ডাক করতে গিয়ে হাতে বল লাগিয়েছেন। হোল্ডারের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। এরপরই দেখা গেল, কয়েক সেন্টিমিটারের জন্য আম্পায়ার্স কলের রক্ষাকবচ পেয়েছেন পৃথ্বী। আম্পায়ার আউট দিয়ে দিতেও পারতেন! দিলে ক্যারিয়ারের শুরুতেই শচীনের আরও একটি অধ্যায় নিজের নামের পাশে লিখিয়ে ফেলতে পারতেন শ! শেষ পর্যন্ত আম্পায়ার লেগ বাইয়ের সংকেত দিয়েছেন। হ্যান্ড বাই দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলেনও!

এ ঘটনাটিই শেষ বিকেলে যা একটু উত্তেজনা ছড়াল। দিনের বাকি অংশটা যে ভারতের একাধিপত্যের গল্প। প্রথম টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডের পর দ্বিতীয় টেস্টেও ১০ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত। ম্যাচটা এতটাই একপেশে হয়েছে, আজ সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে কেউ আলোচনা করতে চাইলে বাকি সব বাদ দিয়ে হয়তো শয়ের সেই হাতে বল লাগার গল্পটাই বলবেন!

অথচ দিনের শুরুতে ভারতের শেষ ৬ উইকেট তুলে নিয়ে অন্য কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন উইন্ডিজ বোলাররা। কিন্তু ব্যাটিংয়ে সেই পুরোনো গল্প। দ্বিতীয় বলে ফিরে গেছেন কার্লোস ব্রাফেট। অন্য ওপেনারও তাঁর সঙ্গী তিন ওভার পর। ভারতের স্পিন-ত্রয়ীর সামনে নতজানু হয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে ৭০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে সফরকারীরা। দলকে সেঞ্চুরি পার করে বিদায় হয়েছেন হোল্ডার। ১৯ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

৭২ রানের লক্ষ্য পেয়ে নামা ভারত শূন্য রানেই পৃথ্বীকে হারাতে পারত। কিন্তু হোল্ডারের বল এই ওপেনারের ব্যাটের কোনা ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের পাশ দিয়ে সীমানা পার হয়ে গেছে। পঞ্চম ওভারেও ভাগ্যকে সঙ্গী পেয়ে টিকে রইলেন পৃথ্বী। তাঁর আত্মবিশ্বাসে টান পড়ায় রান তোলার গতিতে শুরুতে তাই লোকেশ রাহুলই এগিয়ে ছিলেন। দিনের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেও উইন্ডিজ বোলারদের ভাগ্যে কোনো উইকেট জোটেনি। প্রথম ইনিংসের মতো এই ইনিংসেও ভুল করা চালিয়ে গেছেন বদলি উইকেটরক্ষক জাহমার হ্যামিল্টন। মাত্র ১৪ রান বাকি থাকায়, দিনের খেলা আরও আধ ঘণ্টা লম্বা করেছেন দুই আম্পায়ার। ৮ ওভারে ১৪ রানের নতুন লক্ষ্য!

রাহুল (৩৩*) ও পৃথ্বী (৩৩*) অত সময় নেননি। ৪ ওভার ১ বল পরই মাঠ ছেড়েছেন দুজন।