মাঝমাঠে ছড়ি ঘোরাবে কারা?

নতুন মৌসুমে বিভিন্ন দলের মাঝমাঠের শক্তি বিশ্লেষণ করেছেন ইমন বাবু। ফাইল ছবি
নতুন মৌসুমে বিভিন্ন দলের মাঝমাঠের শক্তি বিশ্লেষণ করেছেন ইমন বাবু। ফাইল ছবি

মাঝমাঠকে বলা হয় যেকোনো ফুটবল দলের হৃৎপিণ্ড। গোলমুখে একের পর এক বল বাড়িয়ে প্রতিপক্ষের ওপর চাপটা ধরে রাখেন মাঝমাঠের সৈনিকেরাই। সেই বাড়ানো বল থেকেই আসে ফল নির্ধারণী গোল। আবার এই মাঝমাঠের খেলোয়াড়েরাই প্রতিপক্ষের আক্রমণ অঙ্কুরেই নষ্ট করেন। তাই ফুটবলে মাঝমাঠটা হওয়া চাই অনেক শক্তিশালী ও দক্ষ।

সে কারণেই দল গঠনের সময় মাঝমাঠের খেলোয়াড়েরা পান আলাদা গুরুত্ব। এবার বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন মৌসুমে সর্বোচ্চ টাকা পেয়েছেন মাঝমাঠের দুই খেলোয়াড় ইমন বাবু ও জামাল ভূঁইয়া। ৬৫ লাখ টাকায় আবাহনী লিমিটেড থেকে বসুন্ধরা কিংসে নাম লিখিয়েছেন ইমন। আর মাসিক সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায় সাইফ স্পোর্টিংয়েই থেকে গিয়েছেন জামাল। এবারের মৌসুমে মাঝমাঠে কোন দল কেমন করবে, সেটি বিশ্লেষণ করলেন ইমন বাবু।

গতকাল রক্ষণভাগ নিয়ে বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিটি দলের শক্তিমত্তার বিচার হচ্ছে ১০০ নম্বরের মধ্যে। এতে রক্ষণভাগ পাচ্ছে ৪০, মাঝমাঠ ৩০ আর আক্রমণভাগ ৩০। ফলে অঙ্ক কষেই বুঝে নেওয়া যাবে নতুন মৌসুমে কাগজে-কলমে কোনো দলের শক্তি কেমন।

ঢাকা আবাহনী লিমিটেড: ২৫/৩০

পাস, পাস আর পাস। ফুটবলের ভাষায় যাকে বলে ‘ফ্লুইড ফুটবল’। আবাহনীর মাঝমাঠ এমন পাসিং ফুটবলেরই বিজ্ঞাপন দেখিয়ে শেষ দুই মৌসুমে লিগ শিরোপা জিতেছে। এবার ইমন বাবু দল ছেড়ে যাওয়ায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁরা। তবে নতুন প্লেমেকার হিসেবে ইতিমধ্যে অনুশীলনে নিজেকে প্রমাণ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার মিডফিল্ডার মিনহোয়েক কোকে। নতুন এসেছেন মামুনুল ইসলাম। আর পুরোনো সোহেল রানা আর আতিকুর রহমান ফাহাদ চোট কাটিয়ে এখন পুরোপুরি সুস্থ। সব মিলিয়ে নিজের পুরোনো ক্লাবকে মধ্যমাঠে সর্বোচ্চ ২৫ নম্বর দিয়েছেন ইমন।

বসুন্ধরা কিংস: ২৩/৩০ 

প্রিমিয়ার লিগের নতুন দলটিতে যোগ দিয়েছেন ইমন বাবু, চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে মাসুক মিয়া জনি, এশিয়ান কোটায় কিরগিজস্তান জাতীয় দলের মিডফিল্ডার বখতিয়ার দুশোবেকভ। এ ছাড়া মাঝমাঠে খেলানো হতে পারে মাহবুবুর রহমান সুফিল ও মতিন মিয়াকেও। নামের বিচারে বসুন্ধরার মাঝমাঠ কিন্তু বেশ শক্তিশালীই। তবে নিজের দলকে আবাহনীর চেয়ে দুই নম্বর কম দিয়েছেন ইমন।

সাইফ স্পোর্টিং: ২০/৩০
বল দখলের লড়াইয়ে দেশসেরা হোল্ডিং মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়া সাইফেরই। সঙ্গ দেওয়ার জন্য আছেন তরুণ আল আমিন। নতুনে যোগ দিয়েছেন শাহেদুল আলম ও কোরিয়ান মিডফিল্ডার শিউংগিল পার্ক। একাদশে খেলার মতো ভালো খেলোয়াড় থাকলেও কিছুটা ভোগাতে পারে বেঞ্চের অনভিজ্ঞতা। ইংলিশ কোচ স্টুয়ার্ট হলের মাঝমাঠকে ২০ দিয়েছেন ইমন।

চট্টগ্রাম আবাহনী: ১৯/৩০
অভিজ্ঞ মোনায়েম খান রাজুর সঙ্গে আছেন কৌশিক বড়ুয়া ও নাঈমুর রহমান শাহেদ। এ ছাড়া এশিয়ান কোটায় নেওয়া কিরগিজস্তান জাতীয় দলের ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল ট্যাগোকে খেলানো হতে পারে হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে। বেঞ্চ তেমন শক্তিশালী নয়। চট্টগ্রামের দলটিকে ১৯ নম্বর দিচ্ছেন ইমন।

শেখ জামাল ধানমন্ডি: ১৮/৩০
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে পুরোনোদের মধ্যে আছেন জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, মোহাম্মদ আলি, মাজহারুল সৌরভ ও ওমর ফারুক। মাঝমাঠে যেকোনো দলকে ঠেকানোর জন্য তাঁরা যথেষ্ট। কিন্তু একজন প্লে-মেকারের বড্ড অভাব ধানমন্ডির ক্লাবটিতে। নাইজেরিয়ার কোচ জোসেফ আপুসির দলের মাঝমাঠকে ১৮ নম্বরের বেশি দিতে পারছেন না ইমন।

শেখ রাসেল: ১৮/৩০
বড় আশা করে যাকে নেওয়া হয়েছিল সেই মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাঁটুর অপারেশন করে মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন। কবে নাগাদ ফিরবেন, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পুরোনোদের মধ্যে উল্লেখ করার মতো আছেন শুধু ফজলে রাব্বি। নতুন এসেছেন মোহাম্মদ সোহেল ও কিরগিজ মিডফিল্ডার আজিজভ আলিশার। শেখ রাসেলের অন্যান্য বিভাগের চেয়ে মাঝমাঠটা একটু দুর্বলই বলা যায়। ইমনের দৃষ্টিতে ১৮ পাচ্ছে সাইফুল বারি টিটুর মাঝমাঠ।