১০০ ওভারে মীমাংসা শেষ বলেও হলো না

১০০ ওভার লড়েও টাই মেনে নিতে হলো দুই দলকে। ছবি: এএফপি
১০০ ওভার লড়েও টাই মেনে নিতে হলো দুই দলকে। ছবি: এএফপি

নখ কামড়ে একাকার করার দশা। শেষ বল করতে আসছেন উমেশ যাদব। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ৫ রান। মাঠে ফিল্ডিং দলের কোনো হেলমেট পড়ে না থাকলে কিংবা ওভার থ্রোর সাহায্য না পেলে এ রান পাওয়া সম্ভব নয়। তাই ছক্কাই ভরসা। শাই হোপের ব্যাট যখন অফ স্টাম্পের বাইরের বলটার ছোঁয়া পেল, সঙ্গে সঙ্গে বোঝা গেছে আর যাই হোক ছয় হচ্ছে না। কিন্তু বুলেটের গতিতে ছোটা সে বলের ও নিয়ে ভাবতে বয়েই গেছে। ঝাঁপিয়ে পড়া থার্ড ম্যানের হাতের ছোঁয়া নিয়ে ভারতের আক্ষেপ বাড়াল। তারপর ম্যাচটা টাই করে পার হলো সীমানা! ১০০ ওভারের জমজমাট ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের শেষে তাই হারল না কেউ।

শেষ পাঁচ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৩৬ , হাতে ৫ উইকেট। ৪ ওভার শেষে সমীকরণ দাঁড়াল ২৭ রানে। মামুলি এক কাজ! কিন্তু সেটাকে কঠিন করে ফেলল ৪৭তম ওভার। ১৮ বলে দরকার ২২ রান। চাহাল বল হাতে নিয়ে ম্যাচটা প্রায় একাই হেলিয়ে দিলেন ভারতের দিকে। তাঁর বলে রান আউট হলেন জেসন হোল্ডার। ৬ বলে দিলেন মাত্র ২ রান। ১২ বলে দরকার ২০ রান। মোহাম্মদ শামি সেটাকে ৬ বলে ১৪ রান বানিয়ে দিলেন।

প্রচণ্ড চাপের মুখে উমেশ যাদব বল শুরু করলেন। প্রথম বলে এক রান এল, দ্বিতীয় বলে লেগ বাইয়ে এল চার রান। তৃতীয় বলে ২ রান। চতুর্থ বলে আউট নার্স। ২ বলে দরকার ৭ রান। দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেও ভিলেন হওয়ার পথে হোপ। পঞ্চম বলে ২ রান নিয়ে সমীকরণটা হাতের নাগালে রাগলেন হোপ। কিন্তু আশা জাগিয়ে জয় এনে দিতে পারলেন না শেষ বলে।

এ এমন এক ফল দুই দলই না পারছে আনন্দ করতে, না পারছে হতাশা জানেতে। শেষ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ফেলায় যদি মন খারাপ হয় ভারতের, তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুঃখ আরও বেশি। ৩২২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩২ ওভার শেষ হওয়ার আগেই করে ফেলেছিল ২২১ রান। ১০৯ বলে ১০১ রান নিতে পারবে না সফরকারীরা, এটা তখন কে ভাবতে পেরেছিল! ৭৮ রান তুলতেই তিন উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। সেখান থেকে আশাটা ফিকে হয়ে যায় তাদের। এর পরেই ফেলে শিমরন হেটমায়ার আগের ম্যাচে শেষ দিকে ঝড় তুলে সেঞ্চুরি করেও দল জেতাতে পারেননি। আজ তাই আগে ভাগেই ঝড় তুলেছেন। ৬৪ বলে ৪ চার ও ৭ ছক্কায় ৯৪ রান করে আউট হয়েছেন, জয় তখনো ১০১ রান দূরে। কিন্তু হোপ তো ছিলেন!

হোপ শেষ পর্যন্ত রয়ে গেছেন। কিন্তু অন্যপ্রান্তে কেউ সাহায্যের হাত বাড়াননি। তাই ১৩৪ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসটি তাই ব্যর্থ হতে বসেছিল প্রায়। শেষ বলের আগে হোপ নিজেও বাউন্ডারি মারতে না পারায় কিছুটা দায় তাঁকেও নিতে হবে। শেষ পর্যন্ত আরেকটি জমজমাট ম্যাচ উপহার দেওয়াই সান্ত্বনা হয়ে থাকল হোপের।
এর আগে ১৫৭ রানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে ১০ হাজারি ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। কোহলির দারুণ ইনিংসেই শুরুতে পথ হারিয়েও ৩২১ রানের বড় এক স্কোর পেয়েছিল ভারত। বিশাখাপত্নমে অবশ্য সে স্কোরও জয় এনে দিতে পারেনি ভারতকে।