ঢাকার ফুটবলে এবার গোল করার লোকের অভাব নেই!

বিশ্বকাপে খেলা স্ট্রাইকার দানিয়েল কলিন্দ্রেস এবার খেলবেন বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগে। ফাইল ছবি
বিশ্বকাপে খেলা স্ট্রাইকার দানিয়েল কলিন্দ্রেস এবার খেলবেন বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগে। ফাইল ছবি
>

২৭ অক্টোবর শুরু হতে যাচ্ছে নতুন ফুটবল মৌসুম। শিরোপার লড়াইয়ে থাকা দলগুলো প্রতিটি বিভাগে কেমন শক্তিশালী সেটিই বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে এই প্রতিবেদনে। রক্ষণভাগ ও মাঝমাঠের পর আজকে থাকছে আক্রমণভাগের আয়োজন। গত দুই দিন রক্ষণ ও মধ্যমাঠ নিয়ে বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিটি দলের শক্তিমত্তার বিচার হচ্ছে ১০০ নম্বরের মধ্যে। এতে রক্ষণভাগ পাচ্ছে ৪০, মাঝমাঠ ৩০ আর আক্রমণভাগ ৩০। ফলে অঙ্ক কষেই বুঝে নেওয়া যাবে নতুন মৌসুমে কাগজে-কলমে কোনো দলের শক্তি কেমন।

নতুন মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ দুর্দান্ত সব ফরোয়ার্ড। রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলা স্ট্রাইকার থেকে শুরু করে ঢাকায় খেলার অপেক্ষায় আছেন ২০১৬ কোপা আমেরিকা খেলা স্ট্রাইকার। তাই এবার পুরো মৌসুমজুড়ে দারুণ সব গোল দেখা যাবে বলেই বিশ্বাস দেশের ফুটবলপ্রেমীদের।

আক্রমণভাগ নিয়ে মূল্যায়ন করেছেন চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে বসুন্ধরা কিংসে নাম লেখানো শেষ মৌসুমে স্থানীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ আট গোল করা স্ট্রাইকার তৌহিদুল আলম সবুজ। অঙ্ক মেলাতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি দলেই থাকছে বিদেশি স্ট্রাইকারের প্রতি নির্ভরশীলতা। তবে এর একটা ভালো দিকও আছে। দেশীয় ফুটবলে স্ট্রাইকার খরার মধ্যে এই মান সম্মত বিদেশি স্ট্রাইকাররা দেশের ফুটবলের জন্য কিছুটা হলেও আশীর্বাদ হয়ে আসবেন।

বসুন্ধরা কিংস ২৫/৩০
বিশ্বকাপে কোস্টারিকার জার্সিতে খেলা দানিয়েল কলিন্দ্রেসকে নিয়ে এসেছে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে নবাগত বসুন্ধরা কিংস। এমন একজন স্ট্রাইকার থাকা মানেই গোল নিয়ে হাপিত্যেশ করতে হবে না ক্লাবটির। তাঁর সঙ্গী হিসেবে আছেন ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার মার্কোস ভিনিশিয়াস। ৪-৩-৩ ফরমেশনে এই দুজনের সঙ্গে দেখা যাবে গত মৌসুমে স্থানীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা তৌহিদুল আলম। এ ছাড়া আছেন জাতীয় দলের আরও দুই ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল ও মতিন মিয়া। স্বাভাবিকভাবে নতুন মৌসুমের সবচেয়ে ক্ষুরধার আক্রমণভাগ বসুন্ধরারই। নিজের দলের আক্রমণভাগকেই সর্বোচ্চ ২৫ নম্বর দিয়েছেন তৌহিদুল।

আবাহনী লিমিটেড ২৩/৩০
পুরোনো পরীক্ষিত নাইজেরিয়ার স্ট্রাইকার সানডে চিজোবা তো আছেনই। নতুন যোগ দিয়েছেন ২০১৬ সালে শতবর্ষী কোপা আমেরিকা খেলা হাইতিয়ান স্ট্রাইকার কেভিন বেলফোর্ট। স্বাভাবিকভাবে আক্রমণভাগে দারুণ এক জুটি। এদের সঙ্গে আছেন স্থানীয় নাবিব নেওয়াজ জীবন ও রুবেল মিয়া। হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বারপ্রান্তে থাকা দলের আক্রমণভাগকে নিজেদের থেকে দুই কম—২৩ দিচ্ছেন সবুজ।

শেখ জামাল ২০/৩০
বিদেশি কোটায় চারজনই ফরোয়ার্ড। কিন্তু এদের মধ্যে পরীক্ষিত আছেন শুধু গত প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ ১৫ গোল করা গাম্বিয়ান স্ট্রাইকার সলোমন কিং। বাকিদের মধ্যে নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার সেইনি বোজাং গতবার দলের সঙ্গে থাকলেও বয়স কম হওয়ায় তাঁকে নিবন্ধন করানো হয়নি। নতুন এসেছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লুসিয়ানো আরাইয়া পেরেজ ও কিরগিজস্তান জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড ডেভিড টিথ। নতুনেরা ঢাকায় কতটা মানিয়ে নিতে পারেন, তাঁর ওপরেই নির্ভর করছে ধানমন্ডির ক্লাবের জ্বলে ওঠা।

শেখ রাসেল ১৭/৩০
গত মৌসুমে শেখ জামালের জার্সিতে ১৫ গোল করা নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার রাফায়েল অনব্রোকে নিয়েছে শেখ রাসেল। তাঁকে সঙ্গে আছেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার অ্যালেক্স রাফায়েল। এশিয়ান কোটায় কিরগিজস্তানের আজিজভ আলিশারকভও আছেন। চার বিদেশির তিনজনই ফরোয়ার্ড। এদের সঙ্গে আছেন জাতীয় দলের উদীয়মান উইঙ্গার বিপলু আহমেদ। সাইফুল বারি টিটুর আক্রমণভাগ তৌহিদের কাছে পাচ্ছে ১৭।

সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব ১৬/৩০
গত মৌসুমে খেলা উল্লেখযোগ্য কোনো পুরোনো ফরোয়ার্ডই নেই। বিদেশি কোটায় কানাডিয়ান স্ট্রাইকার জোনাথন কর্দোবা ও রাশিয়ান স্ট্রাইকার ডেনিস বলশাকোভ যোগ দিয়েছেন। ঢাকার মাঠের নতুন এই দুই অতিথি কতটুকু জ্বলে উঠতে পারে, তাই দেখার অপেক্ষা। তবে তরুণ হলেও গত মৌসুমে শেখ জামালের জার্সিতে দুর্দান্ত খেলা জাভেদ খানের ভরসা রাখছে সাইফ। ইংলিশ কোচ স্টুয়ার্ট হলের আক্রমণভাগ পাচ্ছে ১৬ নম্বর।

চট্টগ্রাম আবাহনী ১৪/৩০
গত মৌসুমে শেখ জামালে খেলা গাম্বিয়ান স্ট্রাইকার মোমোদুহ বাহকে নিয়েছে চট্রগ্রামের ক্লাবটি। বিদেশি কোটায় আরও একজন ফরোয়ার্ড নাইজেরিয়ান উগোচুকু মাগালান। স্থানীয়দের মধ্যে আছেন সোহেল মিয়া। চট্টগ্রামের ক্লাবটি পাচ্ছে ১৪ নম্বর।