ঢাকায় আজ মাঠে নামছেন বিশ্বকাপ তারকা

বিশ্বকাপ খেলে আসা ফুটবলার এর আগেও ঢাকার ফুটবলে খেলেছেন। আজ ফেডারেশন কাপে মোহামেডান-বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচে অভিষেক হচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কোস্টারিকার ফুটবলার দানিয়েল কলিন্দ্রেসের। তিনি বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে পা রাখা চতুর্থ বিদেশি খেলোয়াড়। এর আগে ১৯৮৭ সালের লিগে প্রথমবারের মতো
আটাত্তরের বিশ্বকাপ খেলা ইরানি গোলরক্ষক নাসের হেজাজি ও ছিয়াশির বিশ্বকাপ খেলা দুই ইরাকি ফুটবলার সামির শাকির ও করিম মোহাম্মদ খেলেছিলেন।
আজ মাঠে নামছেন রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কোস্টারিকান ফুটবলার দানিয়েল কলিন্দ্রেস। বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলবেন তিনি।
আজ মাঠে নামছেন রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কোস্টারিকান ফুটবলার দানিয়েল কলিন্দ্রেস। বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলবেন তিনি।

শেষ হতে যাচ্ছে অপেক্ষার পালা। রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কোস্টারিকার স্ট্রাইকার দানিয়েল কলিন্দ্রেসের অভিষেক হতে যাচ্ছে ঢাকার ফুটবলে। প্রিমিয়ার লিগের নবাগত ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে খেলবেন তিনি। ফেডারেশন কাপে আজ মোহামেডান-বসুন্ধরা ম্যাচেই মাঠে নামবেন তিনি। খেলাটি শুরু হবে বিকাল ৩ টা ১৫ মিনিটে।

কলিন্দ্রেস অবশ্য ঢাকার ফুটবলে খেলা প্রথম বিশ্বকাপ-ফুটবলার নন। ১৯৮৭ সালে ঢাকার প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে আবাহনীতে খেলতে এসেছিলেন ১৯৮৬ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপ খেলা দুই ইরাকি ফুটবলার সামির শাকির ও করিম মোহাম্মদ আলভী। সামির শাকির অবশ্য পরবর্তী কালে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। সে মৌসুমেই মোহামেডানের কোচ কাম গোলরক্ষকের ভূমিকায় ছিলেন আটাত্তরের বিশ্বকাপে ইরানের প্রতিনিধিত্ব করা নাসের হেজাজি। এই বিখ্যাত ইরানি গোলরক্ষক সেবার লিগের একটি ম্যাচেই কিছুক্ষণ খেলেছিলেন (আবাহনীর বিপক্ষে ২১ মিনিট)। হেজাজিও বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হয়েছিলেন।

এর পাশাপাশি ১৯৮৭-৮৮ দুই মৌসুম মোহামেডানে খেলা নাইজেরিয়ান ফুটবলার এমেকা ইজিউগো পরবর্তী কালে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন। দেশের ফুটবলে যে দর্শক খরা বহু বছর ধরে চলছে, কোস্টারিকান ফুটবলার কলিন্দ্রেসের আগমনে সেই সমস্যার কিছুটা সমাধান হলেও হতে পারে।

কলিন্দ্রেস অবশ্য এক দিক দিয়ে সামির শাকির, করিম মোহাম্মদ ও নাসের হেজাজির চেয়ে আলাদা। রাশিয়া বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র ৪ মাস আগে। আর চার মাসের মাথাতেই তাঁকে নিয়ে এসেছে বসুন্ধরা কিংস। বিশ্বকাপে সার্বিয়া ও সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে মোট ৯৮ মিনিট মাঠে ছিলেন। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ছিলেন মূল একাদশেই , খেলেছেন ৮১ মিনিট পর্যন্তও। বিশ্বকাপে খেলা ফুটবলারের যোগ্যতার মানদণ্ড কত উঁচুতে, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। শুধু দেখার অপেক্ষা, ঢাকার ফুটবলে কতটুকু মানিয়ে নিতে পারেন এই কোস্টারিকান।

তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়ার জন্যও ক্লাবটিতে ভালো খেলোয়াড়েরও অভাব নেই। ফরোয়ার্ড লাইনে তাঁর জুটি হিসেবে নেওয়া হয়েছে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার মার্কোস ভিনিনিশয়াসকে। মাঝমাঠে আছেন কিরগিজস্তান জাতীয় দলের বখতিয়ার দুশোবেকভ। রক্ষণভাগ সামলানোর জন্য জেরার্ড পিকের সঙ্গে স্পেন অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দলে খেলা ডিফেন্ডার জর্জ গোটর। এ ছাড়া এই চার বিদেশির সঙ্গে ইমন বাবু, মাসুক মিয়া জনি, তৌহিদুল আলম সবুজ , মাহবুবুর রহমান সুফিলসহ এক ঝাঁক জাতীয় দলের ফুটবলার। দল নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। শুধু দেখার অপেক্ষা রসায়নটা ঠিকঠাক জমে কিনা!
এমন ঝলমলে তারকাদের বিপক্ষে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের দলটা একেবারেই সাদা মাটা। জাহিদ হাসান এমিলি, আতিকুর রহমান মিশু, মিঠুন চৌধুরীদের মতো সেরা সময় পেছনে ফেলে আসা বেশ কয়েকজন সিনিয়র ফুটবলারের সঙ্গে আনকোরা তরুণদের নিয়ে দল গড়েছে সাদা-কালো শিবির। দলে বিদেশি আছেন গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডিং ডার্বো, স্ট্রাইকার এনকোচা কিংসলে। এরাও নিজেদের সেরা সময়টা পেছনে ফেলে এসেছে অনেক আগে। আশার কথা এশিয়ান কোটায় এবার মোহামেডানে আসা জাপানি মিডফিল্ডার উরিয়ো নাগাতার মান যথেষ্ট ভালো। মোহামেডানের আছে ইংলিশ কোচ ক্রিস্টোফার ইভান্স। তিনি মাঝখানে চলে গেলেও আবারও ফিরে এসে দলের হাল ধরেছেন।

এমন জোড়াতালির দল নিয়ে তারকা সমৃদ্ধ বসুন্ধরার বিপক্ষে কতটা লড়াই করতে পারে মোহামেডান এখন দেখার বিষয় সেটিই। তবে বসুন্ধরা যতই শক্তিশালী হোক মোহামেডানের বড় শক্তি যে বিপুল দর্শক-সমর্থন, সেটি না বললেও চলছে। মোহামেডানের সাদা-কালো জার্সির ওজনটাও কিন্তু বিবেচনায় নিতে হবে।