জিম্বাবুয়ে স্পিনে দুর্বল, শুনে হাসলেন তিনি!

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্পিন দিয়েই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বাংলাদেশ। ছবি: আনিস মাহমুদ, সিলেট
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্পিন দিয়েই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বাংলাদেশ। ছবি: আনিস মাহমুদ, সিলেট
>স্পিন দিয়েই জিম্বাবুয়েকে ঘায়েল করতে পরিকল্পনা আঁটছে বাংলাদেশ। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ মানতে চাইলেন না জিম্বাবুয়ে স্পিনে দুর্বল।

পরিসংখ্যান-রেকর্ড যেটাই বলুক, বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে অন্তত এই একটা জায়গায় সমান থেকে শুরু করতে যাচ্ছে সিলেট টেস্ট। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই দলের কারও অভিজ্ঞতা নেই টেস্ট খেলার। মেহেদী হাসান মিরাজ বলছেন, আগে যেহেতু খেলেননি, তাই উইকেট নিয়ে তাঁদের যেমন স্পষ্ট ধারণা নেই, জিম্বাবুয়েরও নেই।

জিম্বাবুয়ের স্পষ্ট ধারণা না থাকতেই পারে। তাই বলে বাংলাদেশের থাকবে না! উপমহাদেশের বাইরের দল এলেই তো বাংলাদেশ স্পিনসহায়ক উইকেটে টেস্ট খেলে। বাংলাদেশের শক্তির দিকে বিবেচনা করেই স্পিন-সহায়ক উইকেট তৈরি করা হয়। এবার কি সেটির ব্যতিক্রম হবে? মিরাজ এখনই বলতে পারছেন না কিছুই। তবে তাঁর কথায় ইঙ্গিত থাকল, বাংলাদেশ হাঁটবে চেনা পথেই, ‘আশা করি, স্পিনাররা ভালো করবে। আজ উইকেট দেখলাম, বল একটু টার্ন করছিল। ম্যাচ খেলার মতো প্রস্তুতি নিলাম। সামনে আরও সময় আছে। আশা করি, ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারব।’

জিম্বাবুয়ে যখন চট্টগ্রামে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ নিয়ে ব্যস্ত, বাংলাদেশ তখন সিলেটে কন্ডিশন সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা নিয়ে ফেলছে। জিম্বাবুয়েকে যে পুরোনো ছকেই আটকাতে হবে। পুরোনো ছক বলতে, অবশ্যই ধারালো স্পিন আক্রমণ। আর জিম্বাবুয়ে যে স্পিনে দুর্বল, সেটি অতীতেই দেখা গেছে। ‘জিম্বাবুয়ে স্পিনে দুর্বল’ কথাটা শুনে মিরাজ তো হেসেই বাঁচেন না, ‘ওরা দুর্বল কোথায়?’ হাসিটা কোনোমতে থামিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, ওদের একটা চাপ থাকবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের স্পিনারদের ভালো করতে হবে। কাউকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। আশা করি, ভালো একটা টেস্ট হবে। আর সিলেটে আগে কখনো টেস্ট খেলা হয়নি, উইকেট নতুন। উইকেট সম্পর্কে আমরাও ভালো করে জানি না, ওরাও জানে না। দুই দলের জন্যই চ্যালেঞ্জিং হবে। যারা ভালো করবে, তারাই জিতবে।’

ক্রিকেটীয় সৌজন্য মেনে জিম্বাবুয়েকে সমীহ করছেন মিরাজ। কিন্তু পরিসংখ্যানটা নিশ্চয়ই তাঁর অজানা নয়, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল তিন বোলারের দুজনই স্পিনার—সাকিব আল হাসান ও এনামুল হক জুনিয়র। জিম্বাবুয়ের যে ২০৩ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা, এর ১১৭টি অর্থাৎ ৫৭ শতাংশ উইকেটই স্পিনারদের। এবারও বাংলাদেশের স্পিনাররাই হয়তো কঠিন পরীক্ষা নেবেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের। আর যেহেতু সাকিব নেই, এই সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে মিরাজকে। বাংলাদেশ দলের তরুণ অফ স্পিনার অবশ্য যেকোনো দায়িত্ব নিতেই প্রস্তুত। এবারও পিছপা হচ্ছেন না, ‘হ্যাঁ, বড় দায়িত্ব থাকবে। সাকিব ভাই থাকলে দায়িত্ব একটু কম থাকে। টেস্টে ভালো বোলিং করতে হবে। তাইজুল-অপু ভাই (নাজমুল ইসলাম) আছেন। আমি আছি। স্পিনারদের দায়িত্ব নিয়ে বোলিং করতে হবে।’

মাহমুদউল্লাহ ও ইমরুল কায়েস ছাড়া বাকি ১৩ জনকে দেখলে মনে হবে বাংলাদেশ দল যেন কচিকাঁচার আসর! এর মধ্যে টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন চারজন। অভিজ্ঞতায় খুব একটা এগিয়ে না থাকলেও বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী করছে একটা বিষয়, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে! নাহ, এটা আবার মিরাজকে বলতে যাবেন না। হাসতে হাসতে তাঁর আবার পেটে খিল লেগে যাবে!