ধর্ষণের অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্ত রোনালদোর সাজানো জীবন

ধর্ষণের অভিযোগে নিজেকে বরাবরই নির্দোষ দাবি করে এসেছেন রোনালদো
ধর্ষণের অভিযোগে নিজেকে বরাবরই নির্দোষ দাবি করে এসেছেন রোনালদো
>যুক্তরাষ্ট্রের এক মডেল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন, এ খবর পুরোনো। এই অভিযোগে রোনালদোর মত মহাতারকার ভাবমূর্তিতে আঘাত লাগবে, এটাই স্বাভাবিক। ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই ব্যাপারটাই যেন নতুন করে তুলে ধরলেন পর্তুগিজ রাজপুত্র।

বিশ্বব্যাপী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থক। তিনি কীভাবে কথা বলেন, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন কেমন, ইত্যাদি নিয়ে আগ্রহীদের সংখ্যা অনেক। অগণিত ভক্তদের সামনে নিজের ক্যারিয়ারে তিল তিল করে ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি গড়ে তোলার পর যদি ধর্ষণের মতো অভিযোগ ওঠে, তাহলে রোনালদোর অবস্থা কেমন হয়, সেটি সহজেই অনুমান করা যায়। ব্যাপারটা এখনো অভিযোগের পর্যায়ে আছে, কিন্তু অভিযোগটা যদি সত্যি সত্যি প্রমাণিত হয়ে যায়, তাহলে পর্তুগিজ তারকাই পরিণত হবেন গণধিকৃত এক ব্যক্তিত্বে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মডেল ক্যাথরিন মায়োরগার করা ধর্ষণের অভিযোগটি রোনালদোর ব্যক্তিগত জীবনকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছে। এটা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। ফুটবল সাময়িকী ফ্রান্স ফুটবলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোনালদো সেই অভিজ্ঞতার কথাই বলেছেন, ‘এই অভিযোগ আমার ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলছে। আমার ভাবমূর্তির ওপরে প্রভাব ফেলছে, যে ভাবমূর্তি বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষের কাছে উদাহরণস্বরূপ। আমার পরিবারে আমার সঙ্গী আছে, চার সন্তান আছে, একজন বয়স্কা মা আছে, ভাইবোন আছে। আমি সব সময় আমার পরিবারের কাছে থাকার চেষ্টা করি। এই মিথ্যা অভিযোগে তারা সবাই বেশ রেগে গিয়েছে, তারা বিশ্বাসই করতে পারছে না আমি এ রকম করতে পারি। আমি কখনই তাদের এ রকম রাগান্বিত অবস্থায় দেখিনি।’
বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজ কীভাবে নিয়েছেন পুরো ব্যাপারটি? তাঁর প্রতিক্রিয়াই বা কি? রোনালদো বলেছেন তিনি জর্জিনাকে বোঝাতে যথাসাধ্যে চেষ্টা করেছেন, ‘আমি ওকে সবকিছু বুঝিয়ে বলেছি। আমার ছেলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো জুনিয়র, ও তো এখনো অত কিছু বোঝে না। পরিবারের সবার জন্য আমার অনেক খারাপ লাগে।’
বলা হচ্ছে, ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটাচ্ছিলেন রোনালদো। এ সময় নেভাদার লাস ভেগাসের এক নৈশক্লাবে তিনি ক্যাথরিন মায়োরগাকে ধর্ষণ করেন এবং সেটি গোপন রাখতে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলারে সমঝোতা করেন। মায়োরগার দাবি, ধর্ষণের পরদিনই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আইনজীবী ও রোনালদোর আইনি দলকে নাকি জানানো হয়েছিল, তারা সমঝোতা করলে পুলিশ আপত্তি করবে না। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়া ও রোনালদো-ভক্তদের কাছ থেকে হয়রানির কথা ভেবে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ মেনে নেন মায়োরগা ও তাঁর আইনজীবী। সে সঙ্গে এ তথ্য কখনো প্রকাশ করা যাবে না, চুক্তিপত্রে এই স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় বাদীর কাছ থেকে। ‘হ্যাশট্যাগ মিটু’ আন্দোলনের পর ক্যাথরিন নিজের পরিচয় প্রকাশের সাহস পেয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।