ম্যারাডোনা আর একটি কালো ফেরারির গল্প

কালো ফেরারি পাওয়ার জন্য ম্যারাডোনা কত কিছুই না করেছেন!
কালো ফেরারি পাওয়ার জন্য ম্যারাডোনা কত কিছুই না করেছেন!
>ডিয়েগো ম্যারাডোনার ফুটবল-কীর্তি নিয়ে কোনো কথাই হবে না। আর্জেন্টিনাকে প্রায় এক হাতেই ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। নিজের প্রতিভা দিয়েই সর্বকালের অন্যতম সেরা এক কিংবদন্তি তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে কেন যেন প্রচণ্ড খামখেয়ালি এক মানুষ। গতকাল ছিল তাঁর জন্মদিন। এ উপলক্ষে তাঁর খামখেয়ালির একটা গল্প শুনলে কেমন হয়!

বিশ্বকাপ জিতে ডিয়েগো ম্যারাডোনা তখন সবে ইতালি ফিরেছেন। নাপোলির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ইতালি ফিরেই তাঁর খেয়াল হলো, একজন দামি তারকা হিসেবে একটি চোখ ধাঁধানো গাড়ি খুবই প্রয়োজন। যেই ভাবা, সেই কাজ। নাপোলির মালিক করাদো ফেরলাইনোকে ফরমাশ করলেন, একটা ফেরারি লাগবে তাঁর। তাও যেমন তেমন ফেরারি না। ১৯৮৭ মডেলের ফেরারি টেস্টারোসাই চাই তাঁর।

ফেরারি কেনা হলো। নতুন গাড়ি দেখতে ম্যারাডোনা গেলেন তাঁর মুখপাত্র গিলের্মো কোপোলার সঙ্গে। তবে সেই ফেরারি পছন্দ হলো না ম্যারাডোনার! কিন্তু কেন? লাল নয়, কালো রঙের ফেরারি চেয়েছিলেন যে তিনি!
তখন ফেরারি টেস্টারোসা মডেলের গাড়িগুলো কেবল লাল রঙেরই তৈরি হতো। সে ব্যাপারটা ম্যারাডোনাকে জানানোও হলো। কিন্তু আর্জেন্টাইন তারকা নাছোড়। কালো টেস্টারোসাই দরকার তাঁর। সেই সঙ্গে গাড়িটি হতে হবে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত, সঙ্গে থাকতে হবে গান শোনার স্টেরিও। সবাই পড়ে গেলেন মহা হুজ্জতে। সে সময় ফেরারির এই টেস্টারোসা স্পোর্টস কারে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ–ব্যবস্থা থাকত না, থাকত না গান শোনার স্টেরিওও।

ম্যারাডোনা গাড়িটি নিলেন না। তাহলে উপায়? ফেরারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়ে কেনা গাড়িটি কালো রং করা হলো আরও ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার খরচ করে। সে সময় এই মডেলের গাড়ি ছিল কেবল পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসন আর চলচ্চিত্র তারকা সিলভারস্টার স্ট্যালনের।

সাধের এই গাড়িটা বেশি দিন ব্যবহার করতে পারেননি ম্যারাডোনা। মাত্র বিশ হাজার কিলোমিটারের মতো চালাতে পেরেছিলেন গাড়িটাকে, পরে স্প্যানিশ এক সংগ্রাহকের কাছে বেচে দিয়ে আর্জেন্টিনায় চলে যান ম্যারাডোনা, কেননা এত দামি গাড়ি নিয়ে আর্জেন্টিনায় ফেরত যাওয়া সম্ভব ছিল না। সেই সংগ্রাহক এত বছর ধরে পরম মমতায় গাড়িটার রক্ষণাবেক্ষণ করে পরে ২০১৪ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার ইউরো দিয়ে গাড়িটা বেচে দেন।