নতুন 'গতি তারকা'র অভিষেক তাহলে হচ্ছে না?

বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের সামনে অনুশীলনে খালেদ আহমেদ। ছবি: শামসুল হক
বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের সামনে অনুশীলনে খালেদ আহমেদ। ছবি: শামসুল হক
>

সিলেটে প্রথম টেস্ট। এই টেস্টে কোন একাদশ মাঠে নামাবে বাংলাদেশ? প্রতিটি ম্যাচের আগেই একাদশ নিয়ে লুকোছাপা থাকে টিম ম্যানেজমেন্টে। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের একাদশ নিয়েও চলছে একই লুকোছাপা। তবুও নানা সূত্র, অধিনায়কের কথা কিংবা কন্ডিশন দেখে একটা ধারণা তো পাওয়াই যায়।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের হাতে চালিত স্কোরবোর্ডে দুই দলেরই একাদশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্কোরবোর্ডের সেই বাংলাদেশ একাদশ এমন—ইমরুল, লিটন, মমিনুল, মুশফিকুর, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুল, মিরাজ, তাইজুল, নাজমুল, শফিউল ও মোস্তাফিজুর।

স্কোরবোর্ডে দেওয়া একাদশ নিয়েই যে বাংলাদেশ কাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্ট খেলতে নামবে, সেটির কোনো নিশ্চয়তা নেই। এটি নমুনা একাদশ মাত্র। ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়া কখনো কখনো টেস্টের আগের দিনই একাদশ জানিয়ে দেয়। এমনকি ইদানীং ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও জানিয়ে দেন তাঁর দলের একাদশটা কী হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এই সংস্কৃতি এখনো চালু হয়নি। প্রতিটি ম্যাচের আগেই একাদশ নিয়ে লুকোছাপা করেন টিম ম্যানেজমেন্ট। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের একাদশ নিয়েও চলছে একই লুকোছাপা। তবুও নানা সূত্র, অধিনায়কের কথা কিংবা কন্ডিশন দেখে একটা ধারণা তো পাওয়াই যায়।

সিলেটের উইকেট কেমন হবে, গত কদিনে নানা কথাই শোনা গেছে। ইমরুল কায়েস বললেন, ব্যাটিং-সহায়ক উইকেট হতে পারে। কোচ স্টিভ রোডস বললেন, উইকেট 'ট্রিকি' হবে, সবার জন্যই হয়তো কিছু থাকবে। মেহেদী হাসান মিরাজ জানালেন, টার্ন থাকতে পারে। তাহলে দাঁড়াল কী? প্রথমবারের মতো সিলেটে টেস্ট হচ্ছে, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে যে কোনো ধারণা পাবেন, সে উপায়ও নেই। তবে যেহেতু দেশের মাঠে খেলা, বাংলাদেশের চাহিদা মেনেই উইকেট তৈরি করার কথা ভারতীয় কিউরেটর সঞ্জীব আগারওয়ালের।

২৮ অক্টোবর সিলেটে প্রথম অনুশীলনেও বাংলাদেশ দল দেখেছে, উইকেটে কিছুটা ঘাস আছে। সেই ঘাস এখন অনেকটাই উধাও। বাংলাদেশ কোচ অবশ্য শুরুতে চেয়েছিলেন একটা টেস্ট অন্তত ঘাসের উইকেট খেলতে। সিলেটে যে সেটি হচ্ছে না, নিশ্চিত। বাংলাদেশ সিরিজের প্রথম টেস্টেই চায় জয় নিশ্চিত করতে। আর জয়ই যদি হয় শেষ কথা, তাহলে বলাই যায় বাংলাদেশ পুরোনো পথেই হাঁটছে। টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্য তো আকার-ইঙ্গিতে বোঝালেন, এ টেস্ট পাঁচ দিনে গড়ায় কি না সন্দেহ! তার মানে ঘূর্ণি উইকেটেই জিম্বাবুয়েকে চ্যালেঞ্জ জানাবে মাহমুদউল্লাহর দল।

স্কোরবোর্ডে নমুনা একাদশ। ছবি: প্রথম আলো
স্কোরবোর্ডে নমুনা একাদশ। ছবি: প্রথম আলো

উইকেট যদি স্পিন-সহায়ক হয়, বাংলাদেশ স্কোয়াডে থাকা কোনো স্পিনারকেই হয়তো বসিয়ে রাখবে না। খেলানো হতে পারে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, দুই বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলাম—তিনজনকেই। তিন স্পিনার খেললে পেস আক্রমণে থাকতে পারেন দুজন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দারুণ বোলিং করা আবু জায়েদ যদি একাদশের বাইরে থাকেন সেটি হবে অবাক হওয়ার মতোই। বরং একাদশের বাইরে থাকার সম্ভাবনা আছে মোস্তাফিজুর রহমানের। চোট প্রবণ এই বাঁহাতি পেসারকে সিরিজের একটি টেস্টে খেলাতে চায় বিসিবি ও টিম ম্যানেজমেন্ট।

মোস্তাফিজ বিশ্রামে থাকবেন সিলেটে নাকি ঢাকায়, সেটিই দেখার। তবে টেস্ট দলের চমক, নতুন ‘গতি তারকা’ পরিচিতি পাওয়া খালেদ আহমেদের যে অভিষেকের অপেক্ষা বাড়ছে, সেটির ইঙ্গিত থাকল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কথায়, ‘খালেদ বাংলাদেশের জন্য ভালো সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়। বলে গতি আছে আর সুইংও করাতে পারে। ভবিষ্যতে সে অনেক ভালো করবে।’

মাহমুদউল্লাহ তো জানিয়ে রাখলেন, তিন স্পিনার ও এক পেসার নিয়ে খেলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না! চার বোলার, সাত ব্যাটসম্যান নাকি পাঁচ বোলার, ছয় ব্যাটসম্যান—এতটুকু ধাঁধা মেলানোর বাকি। আর যা-ই হোক, অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ অবশ্য পরিষ্কার জানিয়েছেন, এই টেস্টে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাঁরা যাবেন না, ‘প্রথম ম্যাচে হয়তো তেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা নাও করতে পারি। আমরা সেরা একাদশ নিয়েই খেলব। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাস করি যে আমাদের শুরুটা যখন ভালো হয় আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেড়ে যায়।’