বাংলাদেশকে জিতিয়ে কথা রাখল যে ছেলেটি...

সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টাইব্রেকারে পাকিস্তানের তিন শট ঠেকিয়ে নায়ক বদলি গোলরক্ষক মেহেদী হাসান।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টাইব্রেকারে পাকিস্তানের তিন শট ঠেকিয়ে নায়ক বদলি গোলরক্ষক মেহেদী হাসান।
>সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। এই সাফল্যের নায়ক কিশোরদের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান। সেমিতে ভারতের বিপক্ষে মূল গোলরক্ষক মিতুল মারমার বদলি হিসেবে খেলে টাইব্রেকারের দুটি শট ঠেকিয়েছিল সে। কিন্তু আজ ফাইনালে কেবল টাইব্রেকারের আগে মাঠে নেমে ঠেকাল পাকিস্তানের ৩ শট। নায়ক তো সে-ই!

সেমিফাইনালে ভারতকে হারানোর পর মেহেদী হাসান প্রতিজ্ঞা করেছিল, ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেবে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ দলের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান কথা রেখেছে। নিজেকে উজাড় করে দিয়েই দেশকে জিতিয়েছে সে। ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টাইব্রেকারের তিনটি শট ঠেকিয়ে দেশকে করেছে গর্বিত।

অথচ, এই মেহেদী কিন্তু কিশোর দলের ১ নম্বর গোলরক্ষক নয়। সেমিতে মূল গোলরক্ষক মিতুল লালকার্ড পাওয়ায় খেলতে পারেনি। কিন্তু মাঠে নেমেই বাজিমাত তার। ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারের দুটি শট ঠেকিয়ে দলকে ফাইনালে তুলল। ম্যাচেও দায়িত্ব নিয়ে খেলে বুঝিয়েছে, মূল গোলরক্ষক হওয়ার সব সামর্থ্যই আছে তার। আজ ফাইনালে মিতুল ফেরায় নির্ধারিত ৯০ মিনিট ডাগআউটে বসেই কাটাতে হয়েছে তাকে। কিন্তু সেমিতে টাইব্রেকার ঠেকানোয় তার ওপর একটা আস্থা তৈরি হয়েছিল কোচ মোস্তফা আনোয়ার পারভেজের। ফাইনালের নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১-এ শেষ হওয়ার পর ফলনির্ধারণী শুটআউটে মিতুলকে বদলে মেহেদীকেই নামান তিনি। কোচের আস্থার প্রতিদানটা কী দুর্দান্তই না দিল এই কিশোর গোলরক্ষক।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টাইব্রেকারে পাকিস্তানের তিন শট ঠেকিয়ে নায়ক বদলি গোলরক্ষক মেহেদী হাসান।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টাইব্রেকারে পাকিস্তানের তিন শট ঠেকিয়ে নায়ক বদলি গোলরক্ষক মেহেদী হাসান।

টাইব্রেকারে বাংলাদেশের প্রথম শটটি মিস হয়ে যাওয়ায় কিশোরদের হৃদয় তখন ভেঙে পড়ার উপক্রম। ভাঙা হৃদয় জোড়া লাগানোর কাজটি করল মেহেদী। পাকিস্তানের জুনায়েদ আহমেদের নেওয়া প্রথম শটটিই বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিল। কিন্তু বীর মেহেদীর গল্প তো তখন কেবল শুরু। অবিশ্বাস্যভাবে পাকিস্তানের দ্বিতীয় শটটাও ঠেকিয়ে দিল ডানদিকে ঝাঁপিয়ে।
৫ নম্বর শটে গড়াল ম্যাচের ভাগ্য। শেষ শটে পাকিস্তানের মুদাস্‌সর গোল করতে পারলে ৩-৩ সমতায় ফিরবে পাকিস্তান। এবারও সেই মেহেদী। শেষ শটটি ঠেকিয়ে দেশকে এনে দিল সাফের শিরোপা। সুপার-সাব গোলরক্ষক! ভাবা যায়!
আরও একবার অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ে সাফের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন দলের বিজ্ঞাপন যশোরের ছেলে মেহেদীই।