রোনালদো কেন খেলছেন না?

বিশ্বকাপের পর থেকেই জাতীয় দলে খেলছেন না রোনালদো। ফাইল ছবি
বিশ্বকাপের পর থেকেই জাতীয় দলে খেলছেন না রোনালদো। ফাইল ছবি

লিওনেল মেসিকে আর্জেন্টিনার জার্সিতে ২০১৮–তে আর দেখা যাবে না। ২০১৯–এর কোপা আমেরিকার আগে মেসিকে আর পাওয়ার আশা সম্ভবত আর্জেন্টাইনরাও করছেন না। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও কি একই পথে হাঁটছেন? আরেকটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার পর জাতীয় দলের হয়ে আপাতত না খেলার সিদ্ধান্তে মেসিকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত কি নিয়েই ফেলেছেন রোনালদো?

উয়েফা নেশনস লিগে এক ম্যাচ হাতে রেখেই গ্রুপের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করেছে পর্তুগাল। ইতালি ও পোল্যান্ডের গ্রুপ থেকে এমন সাফল্য আরও বড় করে দেখাচ্ছে রোনালদোর অনুপস্থিতি। বিশ্বকাপের পর থেকেই যে পর্তুগালের জার্সিতে আর দেখা যাচ্ছে না ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে। উরুগুয়ের কাছে শেষ ষোলোতে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। গ্রুপ পর্ব রোনালদোর নৈপুণ্যে পার হলেও শেষ ষোলোতে আর ঝলক দেখাতে পারেননি রোনালদো। সে হতাশাই কি তাঁকে জাতীয় দল থেকে দূরে রাখছে?

জাতীয় দল থেকে এখনো অবসরের ঘোষণা দেননি রোনালদো। পর্তুগালের অনেক দর্শকই আশা করেন, ২০২২ বিশ্বকাপেও থাকবেন রোনালদো। ২০২০ ইউরোতে তো তাঁকে ছাড়া দল গঠনের কথা চিন্তাও করতে পারছে না তারা। শুধু পর্তুগালই নয়, প্রতিপক্ষ দলগুলোও যে তাঁকে মাঠে দেখতে চায়। গতকাল ইতালির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে গ্রুপের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করেছে পর্তুগাল। এমন ম্যাচের আগে পর্তুগালের অনুপস্থিতিতে খুশি হওয়ার কথা ছিল ইতালির। কিন্তু কোচ রবার্তো মানচিনি রোনালদোকে মাঠে দেখতে চেয়েছেন ফুটবলের ভালোর জন্যই, ‘ক্রিস্টিয়ানো বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। সে মাঠে থাকলে ম্যাচটা অবশ্যই অন্য রকম হতো, কারণ তাঁর বিশেষ ক্ষমতা আছে। ওকে দেখতে পেলেই ভালো লাগত। সে মাঠে থাকলে ম্যাচটা আরও দুর্দান্ত হতো।’

গোলশূন্য ম্যাচের পর মানচিনির কথাটাই সত্যি মনে হচ্ছে। আর এ ম্যাচে রোনালদোর উপস্থিতি কাম্য ছিল আরেকটি কারণে। রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে এবারই জুভেন্টাসে পাড়ি জমিয়েছেন রোনালদো। গতকালের ম্যাচটি হয়েছে ইতালির সান সিরোতে। ফলে এ ম্যাচ খেলার জন্য তাঁকে বাড়তি ক্লান্তির মুখোমুখিও হতে হতো না। যে ক্লান্তিকেই প্রথমে রোনালদোর নেশনস লিগ না খেলার ঢাল বানানো হয়েছিল। নেশনস লিগের প্রথম পর্বে রোনালদোকে স্কোয়াডে না ডাকার ব্যাপারে পর্তুগিজ কোচ সান্তোসের যুক্তিটা অমনই ছিল, ‘খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আর সে জুভেন্টাসে যাওয়ার পর এখনো মানিয়ে নিচ্ছে সবকিছুর সঙ্গে। আমরা বুঝতে পারছি, এ ম্যাচগুলোতে তাঁর উপস্থিতিটা কারও জন্যই হয়তো ভালো হবে না।’

রোনালদোর তুরিনে মানিয়ে নেওয়ার পর্বটা শেষ হয়ে ওঠার কথা রোনালদোর। নতুন ক্লাবের হয়ে সেই পুরোনো রোনালদোর দেখা মিলছে। জুভেন্টাসের জার্সিতেও গোল করছেন নিয়মিত, ক্লাবকে ইতিহাসের সেরা শুরু এনে দিয়েছেন। ফলে রোনালদোকে পর্তুগালের জার্সিতে দেখার আগ্রহটাও বাড়ছে। কোচ সান্তোসও সে দলে, ‘পৃথিবীতে কোনো দল নেই, যারা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে চায় না বলতে পারবে। সে সব সময় গুরুত্বপূর্ণ, সে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় এবং এটাই যথেষ্ট। আশা করি পরবর্তী ব্যালন ডি’অর জিতেই তাঁর প্রতিভার ভান্ডার এবং ও যে বিশ্বসেরা সেটা অস্বীকার করে নেওয়া হবে।’

কিন্তু এতেও রোনালদোকে পর্তুগালের জার্সিতে কবে দেখা যাবে, এ প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। এ সপ্তাহেই পোল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁকে যে দেখছে না বিশ্ব, সেটা স্কোয়াডে থাকা নামগুলোই বলে দিচ্ছে। তাহলে কবে? সান্তোসের উত্তর আশা জাগাচ্ছে না। মার্চে পর্তুগালের পরবর্তী আন্তর্জাতিক সূচি প্রসঙ্গেও কোচের কণ্ঠে অনিশ্চয়তা, ‘দেখা যাক। এখনো অনেক দেরি আছে।’