বোলার নয়, শুধু বল খেলতে চান সাদমান

টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার পর কোচ স্টিভ রোডসের ব্যাটিং ক্লাসে সাদমান ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো
টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার পর কোচ স্টিভ রোডসের ব্যাটিং ক্লাসে সাদমান ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো
>

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেই টেস্ট অভিষেক ঘটলে ক্যারিবীয় পেসারদের সামলাতে হবে সাদমান ইসলামকে। তবে কার বল খেলতে হবে, সেটি নেই সাদমানের ভাবনায়। তিনি শুধু বলটাই খেলতে চান

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পাঁচ বছর কতটা সময়? উত্তরটা আপেক্ষিক। তবে সাদমান ইসলাম মনে করছেন, এই পাঁচ বছরেই তিনি যথেষ্ট পরিণত। পরিণত হয়েই এসেছেন জাতীয় দলে। পরিণত হয়েই এখন তিনি টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায়।

৪২টি ম্যাচ খেলে ৪৬.৫০ গড়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩০২৩ রান সাদমানের। ১৬ ফিফটির সঙ্গে ৭ সেঞ্চুরি—টেস্ট দলে নাম ওঠার আগে এই হলো সাদমানের পুঁজি। নির্বাচকদের রাডারে ছিলেন অনেক দিন থেকে। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং আকৃষ্ট করে কোচ স্টিভ রোডসকে। এরপরই ২৩ বছর বয়সী বাঁহাতি ওপেনার চলে আসেন জাতীয় দলের ছাতার নিচে।

তাঁর ওপর কোচ, নির্বাচকদের আস্থা দেখে সাদমানেরও মনে হচ্ছে, তিনি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার জন্য প্রস্তুত। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কাল সাংবাদিকদের বলছিলেন, ‘একজন ব্যাটসম্যান যখন জাতীয় দলে খেলতে যায়, তার একটু পরিপক্ব হয়ে যাওয়াই ভালো। আমার মনে হয়, আমি যেমন খেলেছি, হয়তো আমি একটু পরিপক্ব হয়েছি। প্রস্তুতি ম্যাচটিও ভালো খেলেছি। নির্বাচকদের কাছেও মনে হয় কিছুটা ভালো মনে হয়েছে। সে কারণেই আমার সুযোগ এসেছে।’

ব্যাটিং নিয়ে কোচের সঙ্গেও এর মধ্যে কথা হয়েছে সাদমানের। প্রস্তুতি ম্যাচের ইনিংসটা আরেকটু লম্বা হওয়া উচিত ছিল মনে বলে করেন রোডস। সঙ্গে জানিয়েছেন ডিফেন্স নিয়ে কাজ করার কথাও, ‘কালকের (পরশুর) ম্যাচটিতে আমার ডিফেন্সটা দেখেছেন উনি। উনি যেভাবে আমাকে ডিফেন্স করার কথা বলেছেন, সেভাবে করতে পারলে আরও ভালো হবে এবং আমি আরও বেশি সময় উইকেটে থাকতে পারব। স্পিনটাও আরও ভালো খেলতে পারব।’

আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামার আগেই সাদমান জানেন ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সঙ্গে এর পার্থক্য। আর জানেন বলেই বোঝেন, পার্থক্যটা কীভাবে কমিয়ে আনতে হবে। কীভাবে ইনিংস সাজাতে হয়, ‘আমি যেহেতু অনেক ম্যাচ খেলেছি, তাই জানি কীভাবে ইনিংসটা গুছিয়ে নিতে হবে। এই বিষয়টি যদি জানা থাকে তাহলে আমার মনে হয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটু হলেও ভালো করার সুযোগ থাকে।’

এই সিরিজেই খেলার সুযোগ হলে সাদমানকে সামলাতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের। তবে কার বল খেলতে হবে, সেটি তাঁর ভাবনায় নেই। তিনি শুধু বলটাই খেলতে চান, ‘বাংলাদেশেরও তো অনেক জোরে বল করার মতো পেসার আছে। বোলারের নাম নিয়ে চিন্তা করলে হয়তো খারাপ হবে। আমি ঠিক করেছি, বল আসবে আর আমি শুধু খেলব।’ কীভাবে খেলবেন, ঠিক করে রেখেছেন সেটিও, ‘সুযোগ এলে সব সময় যেভাবে খেলে আসছি, সেভাবেই খেলব। কীভাবে নিজেকে গুছিয়ে নিতে হয়, পারফর্ম করতে হয় এবং কীভাবে বড় রান করতে হয়, এগুলো ঠিক রাখতে হবে।’

নিজে বাঁহাতি ওপেনার, ছোটবেলা থেকে সাদমানের আদর্শও আরেক বাঁহাতি ওপেনার—তামিম ইকবাল। কী কাকতালীয়, চোটের কারণে তামিম দলের বাইরে বলেই আজ দলে সাদমান! সুযোগ পেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তামিমের অভাবটা কি ভুলিয়ে রাখতে পারবেন তিনি?

লম্বা সময় ধরে ব্যাটিং করার নেশাটা যাঁর রক্তে এই বয়সেই ঢুকে গেছে, টেস্ট খেলার স্বপ্নপূরণে কোচদের ঘড়ি ধরা হিসাবের বাইরেও যিনি অনুশীলন করে গেছেন, তাঁর কাছে আশা করতে দোষ কী!