চার পেসার হলে চার স্পিনার কেন নয়

বাংলাদেশের স্পিনারদের দাপটে মোস্তাফিজ পুরো টেস্টে করেছেন ৪ ওভার বোলিং! ফাইল ছবি
বাংলাদেশের স্পিনারদের দাপটে মোস্তাফিজ পুরো টেস্টে করেছেন ৪ ওভার বোলিং! ফাইল ছবি

সবাই অভিষেকটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চান, তা তিনি যে দায়িত্বেই থাকুন না কেন। যদি ব্যক্তিগত ইনিংসের শুরুটা দর্শনীয় শট খেলে না হয়, হতাশ হবেন না। অনুপ্রেরণা নিতে পারেন বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডসের কাছ থেকে।

বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব নিয়ে প্রথমে গিয়েছিলেন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। টেস্ট সিরিজে এক বিভীষিকাময় সূচনা হয়েছিল তাঁর কোচিং ক্যারিয়ারের বাংলাদেশ-পর্ব। সেখানেই নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। পাঁচ মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই পৌনে তিন দিনেই হারিয়ে দিয়েছে রোডসের দল। তাতে যদি রোডস প্রতিশোধের আস্বাদ পান ক্ষতি কী!

স্পিনসহায়ক উইকেটে পৌনে তিন দিনে টেস্ট শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে রোডস তা উড়িয়ে দিয়ে চট্টগ্রামে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘দেখুন, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভারত, বাংলাদেশে আপনি টার্নিং উইকেটই আশা করবেন। শ্রীলঙ্কায় এখন ইংল্যান্ড খেলছে এবং সেটা টার্নিং উইকেটেই। বিশ্বের যেকোনো দল উপমহাদেশে এ ধরনের উইকেটের কথা মাথায় রেখেই আসে।’ রোডস মনে করিয়ে দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সেই প্রথম টেস্টের কথা। যেখানে সবুজ, বাউন্সি উইকেটে বল সাপের মতো সুইং করছিল। বাংলাদেশের উইকেটে স্পিনারদের দাপট দেখানোটা বরং রোডসের কাছে ক্রিকেটের উপভোগ্য একটা বিষয়।

এ ধরনের উইকেটে স্বাগতিকদের জন্যও যে বিপদ আছে, সেটি মানেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিনজন ভালো স্পিনারকে সামলে পাওয়া জয়ের আনন্দটা আপাতত উপভোগ করতে চান। নিজের চার স্পিনারকে নিয়ে তিনি দারুণ খুশি। চার স্পিনার খেলানোর পক্ষে তাঁর যুক্তি, ‘নাঈম খুবই সম্ভাবনাময়, অভিষেকেই ৫ উইকেট নেওয়াটা দুর্দান্ত। আমি মনে করি, মিরাজ ও নাঈম একই দলে খেলতে পারে। কারণ দুজন দুই ধরনের বোলার। সাকিব আর তাইজুলও অসাধারণ। দেখুন, ইতিহাস বলে টেস্টের অধিকাংশ দলে দুজন স্পিনার, তিনজন পেসার আর একজন অলরাউন্ডার থাকে। কিন্তু একটা সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ চারজন পেসার নিয়ে খেলত, এটা তাদের ধরন। এখন আমরা যদি মনে করি, চারজন স্পিনার খেলানো আমাদের ধরন, তাতে সমস্যা কোথায়? আমরা দেশের বাইরে ভালো খেলতে প্রস্তুত, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ দেশের মাটিতে ভালো দল হয়ে উঠুক, সেটাও আমি চাই।’

দেশের বাইরে ভালো খেলার যে স্বপ্ন রোডসের, তাতে মুমিনুল-খালেদরা তাঁকে ভীষণ আশা জোগান। চট্টগ্রামে প্রথম দিন থেকেই টার্ন করতে থাকা উইকেটে মুমিনুলের ব্যাটিং আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খালেদের আগ্রাসী বোলিং থেকে নিউজিল্যান্ড সফরে ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ কোচ। তবে চট্টগ্রামে মুমিনুল-তাইজুল-নাঈমই শুধু নন, রোডসের প্রাপ্তি দেখছেন আরেকটি। সেটি নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ফিরে পাওয়া, ‘আমি সাকিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই। সে যা করেছে, সেটা দুর্দান্ত। শারীরিকভাবে যতটা ফিট থাকার কথা, ততটা সে নয়। কিন্তু ও মাঠে অধিনায়ক হিসেবে যা করেছে, তা অনবদ্য। ও বাংলাদেশের জন্য, পুরো জাতির জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে চেয়েছে।’