মেসির জন্য এভাবে ব্যালন ডি'অরের তালিকায় থাকাটাও অপমান!

আর্জেন্টিনার জার্সিতে নিষ্প্রভ থাকাটাই কাল হয়েছে মেসির জন্য। ছবি: টুইটার
আর্জেন্টিনার জার্সিতে নিষ্প্রভ থাকাটাই কাল হয়েছে মেসির জন্য। ছবি: টুইটার

লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রাজত্ব এখন লুকা মদরিচের দখলে। শেষ ১০ বছর ধরে যে আসনের ধারেকাছে কাউকে ভিড়তে দেননি মেসি ও রোনালদো, গতকালের রাতে সেখানে দিব্যি বসে গেছেন মদরিচ। সেই ২০০৭ সালে ব্রাজিলিয়ান রিকার্ডো কাকা ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন। এর পর থেকে ব্যালন ডি’অর মানেই মেসি আর রোনালদোর নাম। একজন চ্যাম্পিয়ন হলে আরেক জন রানারআপ, বড় জোড় তৃতীয় বা চতুর্থ। রোনালদো দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও সময়ের পালাবদলে মেসি এবার পঞ্চম। মেসির মতো ফুটবলারের জন্য ব্যাপারটা তো অপমানজনকই!

ব্যালন ডি’অরের জন্য লিওনেল মেসি মনোনীত হয়ে আসছেন ২০০৬ সাল থেকে। সেবারই প্রথম ব্যালন ডি’অরের সংক্ষিপ্ত তালিকায় প্রবেশ করে ২০তম হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বার্সেলোনা তারকাকে। ২০০৭ সালে ব্যালন ডি’অরের আরও কাছে চলে আসা। সেবার কাকা ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পেছনে থেকে তৃতীয়। পরের বছর আরও একধাপ এগিয়ে রোনালদোর পেছনে থেকে রানারআপ হওয়া। পরের বছর থেকেই সোনালি ট্রফির নেশা পেয়ে বসে মেসিকে। ২০০৯ থেকে ২০১২ টানা চার ও দুই বছর বিরতি দিয়ে আবার ২০১৫ সাল সোনালি ট্রফি হাতে তোলা। যে বছরগুলো জিততে পারেননি, সে বছর রানারআপ পুরস্কার ছিল তাঁর জন্য নির্ধারিত। গত ১১ বছরে কোনোবারই সেরা তিনের বাইরে যেতে হয়নি মেসিকে। কিন্তু এবারই প্রথমবারের মতো পিছিয়ে পাঁচ নম্বরে।

বছরটা খুব একটা ভালো যায়নি মেসির। বার্সেলোনাকে নিয়ে লা লিগা আর কোপা ডেল রে জিতলেও চ্যাম্পিয়নস লিগে ছিলেন নিষ্প্রভ। কোয়ার্টার ফাইনালে রোমার বিপক্ষে তাঁদের মাঠে ৩-০ গোলের হারের ম্যাচে ছিলেন পুরোপুরি নিজের ছায়ায়। চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনাকেও ফিরতে হয় খালি হাতেই। ব্যালন ডি’অর প্রতিযোগিতার বাজারে সবচেয়ে বড়ভাবে পিছিয়ে গেছেন রাশিয়া বিশ্বকাপে। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে দলের সঙ্গে মেসি নিজেও ব্যর্থ। গ্রুপ পর্বে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি মিস, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হার। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে কষ্টের জয়। আর ফ্রান্সের বিপক্ষে যেখানে তাঁকে প্রয়োজন ছিল দলের, সেখানে বড় ফেল।

বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ব্যর্থতায় যে তাঁকে ব্যালন ডি’অরের প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে দিয়েছে, এই নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যেহেতু তালিকায় তাঁর আগে রোনালদো ছাড়াও রয়েছেন মদরিচ, আঁতোয়ান গ্রিজম্যান ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। 

তবে চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন মেসি। ইতিমধ্যে গোল করেছেন ১৫টি আর করিয়েছেন ৮টি। কে জানে হয়তো সামনে ব্যালন ডি’অরেই আবার হাসতে পারেন খুদে জাদুকর। দেয়ালে পিঠ ঠেকলেই যে তাঁর সেরাটা বের হয়ে আসে, তা আগে দেখা গেছে অনেকবার।