হোপ এখন 'হোপফুল', বাংলাদেশকে সিরিজ হারাবেন

বাংলাদেশে সিরিজ জেতার স্বপ্ন দেখছেন হোপ। ছবি: প্রথম আলো
বাংলাদেশে সিরিজ জেতার স্বপ্ন দেখছেন হোপ। ছবি: প্রথম আলো

এক লহমায় কীভাবেই না বদলে গেল সবকিছু। দ্বিতীয় ম্যাচেই সিরিজ নির্ধারণ হয়ে যাবে কি না—এমন আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে শাই হোপের অনবদ্য এক ইনিংসে সিরিজে ফিরে এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুধু ফিরেই আসেনি, দুই ইনিংসেই স্লগ ওভারে যেভাবে খেলেছে তারা, তাতে আত্মবিশ্বাসও ফিরে পেয়েছে অনেকটাই। আজ বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়ে এখন সিলেটে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচেও জয়ের আশা পাচ্ছেন হোপ। বাংলাদেশের কাছে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ হারের জ্বলুনির পাল্টা দেওয়ার সুযোগটা নিতে চান তাঁরা।

টেস্ট সিরিজে নির্ধারিত ১০ দিনের অর্ধেকটা সময় মাঠে টিকতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডে সিরিজের শুরুটাও হয়েছে বাজে। এরপর আত্মবিশ্বাস খুইয়ে সিরিজ হারের অপেক্ষায় থাকার কথা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। বিরুদ্ধ পরিবেশে আরেকটি আত্মসমর্থনের দৃশ্য দেখার অপেক্ষাতেই ছিল সবাই। কিন্তু পিছিয়ে পড়া এক দলকেই জয় এনে দিলেন হোপ, কীভাবে? ‘যাই হোক না কেন, শুধু বিশ্বাস রেখেছি। আমরা এখানে ক্রিকেট খেলতে এসেছি, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসেছি এবং জিততে এসেছি। এটা তো সময়ের ব্যাপার যে আমরা বাধাটা কখনো না কখনো টপকাব।’

বাধা টপকানোর এ বিশ্বাসে ভর করেই এখন সিরিজটা নিজেদের দিকে নিয়ে যেতে চাইছেন হোপ, ‘অবশ্যই (সিরিজ জিততে চাই)। আমরা এখানে ম্যাচ জিততেই এসেছি। আমরা লড়তে এসেছি এবং ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চাই।’ ভারতে তিন সংস্করণেই হারের পর বাংলাদেশে সিরিজ জয়ের একটা সম্ভাবনা জাগাতে পেরে তাই ভালো লাগছে হোপের, ‘এশিয়াতে লম্বা একটা সফর হচ্ছে আমাদের। অবশেষে এটা করতে পেরে ভালো লাগছে। সবাই অনেক পরিশ্রম করেছে, তাই জয়টা পেয়ে সবাই খুশি। আমাদের আরও বেশি উদ্‌যাপন করা উচিত কারণ নিকট অতীতে আমরা খুব বেশি উদ্‌যাপন করার মতো কিছু পাইনি।’

প্রথম ম্যাচের সঙ্গে আজকের ম্যাচের পার্থক্যটা কোথায় ছিল? প্রথম ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করেও দুই শ পার করতে পারেনি দল। আজ তাড়া করেও আড়াই শ পার করে ফেলেছে উইন্ডিজ। হোপের চোখে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাই ভূমিকা রেখেছে, ‘আমাদের যত দ্রুত সম্ভব মানিয়ে নিতে হয়েছে। আমরা জানতাম প্রথম ১০ ওভারে স্পিন খেলতে হবে। আমরা তাই ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম এবং সেটা কাজে লেগেছে।’

পরিকল্পনা কাজে লাগানোর কথা বললেও ম্যাচে যা হয়েছে সেটা আগে থেকে ঠিক করে রাখা যায় না। অন্যপ্রান্তে একের পর এক উইকেট হারালেও হোপ ঠিকই রয়ে গেছেন। ৪০ ওভারের আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও উইন্ডিজ যে ৪ উইকেটে জিততে পারল এর পেছনে হোপের পূর্ণ অবদান। দলের ২৫৬ রানের মধ্যে ১৪৬ রানই করেছেন ওপেন করতে নামা এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। আটে নামা কিমো পলও দুর্দান্তভাবে সঙ্গ দিয়ে গেছেন। ম্যাচ শেষে হোপ তাই নিজের সঙ্গে পলকে নায়কের আসনে বসাচ্ছেন, ‘আমি জানতাম কাউকে লম্বা ইনিংস খেলতে হবে, আমার কাছে পুরো ৫০ ওভার ছিল। যতক্ষণ সম্ভব টিকে থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং ম্যাচ যেন জিতে ফিরতে পারি সেটাও নিশ্চিত করতে চেয়েছি। আমরা জানি কিমো খুব ভালো ব্যাট করে। ওর ওপর আমার পূর্ণ আস্থা ছিল। যতটুকু সম্ভব স্ট্রাইক পরিবর্তন করতে চেয়েছি আমরা। জানতাম এ উইকেটে নেমেই মারা সম্ভব না। তাই সে ম্যাচ জেতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে (ধৈর্য ধরে ব্যাট করেছে)।’