এবার নিউজিল্যান্ডে অন্য কিছু হবে!

>
নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের জয়ের উচ্ছ্বাসের ছবিটা বিরলই। ফাইল ছবি
নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের জয়ের উচ্ছ্বাসের ছবিটা বিরলই। ফাইল ছবি

২০০১ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১টি ম্যাচ খেলেছে। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির এই ২১ ম্যাচের প্রতিটাই হেরেছে বাংলাদেশ। তবে এবার...

একটুর জন্য! হ্যাঁ, একটুর জন্যই শতভাগ তৃপ্তির আস্বাদ নেওয়া গেল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্ট আর ওয়ানডে সিরিজে হারানোর পর টি-টোয়েন্টি সিরিজটা থাকছে ছোট একটি দীর্ঘশ্বাসই হয়েই। না থাক ক্যারিবীয়দের সেই সোনালি দিন, তবু বিশ্ব ক্রিকেটের বড় নাম তো বটেই। দেশের মাটিতে শাই হোপ-শিমরন হেটমায়ারদের হারিয়ে ত্রিমুকুট মাথায় তুলতে পারলে সামনের নিউজিল্যান্ড সফরে তা হতো অনেক বড় অনুপ্রেরণা।
তারপরও সাদা পোশাকের ক্রিকেটে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জুলাই-আগস্টের ধবলধোলাইয়ের জবাবটা দেওয়া গেছে সেটাই বা কম কিসে! ওয়ানডে সিরিজে শেষ ম্যাচে গিয়ে সিরিজ জয়ের স্বস্তিটাই বরং সঙ্গী হচ্ছে।

টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে লিটন দাসের কথাই ভাবুন। যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন দুরন্ত ছন্দে তছনছ করেছেন উইন্ডিজের পেস বোলিং। শেষ টি-টোয়েন্টির পর সংবাদ সম্মেলনে কোচ স্টিভ রোডস প্রাপ্তির তালিকায় তুলে এনেছেন লিটনের ব্যাটের ঝলকানিও। যদিও লিটনের ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি জানা যায়নি। কেমন কাটল উইন্ডিজ সিরিজ জানতে চাইতেই কাল বললেন, ‘ভাই, এটা নিয়ে কথা বলা যাবে না। নিষেধ আছে।’

তা লিটন নীরব থাকলেও স্টিভ রোডস বেশ তৃপ্ত। উইন্ডিজ সিরিজের প্রাপ্তি নিয়েই পাড়ি জমাতে চান নিউজিল্যান্ড সফরে। বিশ্বকাপের আগে সেখানেই যে শেষ প্রস্তুতির সুযোগ। জিম্বাবুয়ে-ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাসটা ব্ল্যাক ক্যাপদের বিপক্ষেও কাজে লাগবে বলে আশাবাদী তিনি। পরশু টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই ইংলিশ কোচ বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি সিরিজের পারফরম্যান্স বা ফল নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না। তবে (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) ওয়ানডে সিরিজ জেতা এবং তার আগে জিম্বাবুয়ে সিরিজ আমাদের বেশ ভালো গেছে। এই দুই সিরিজেই দলের পারফরম্যান্সে একটা ভারসাম্য লক্ষ করবেন। নিউজিল্যান্ডে ঠিক এই জিনিসটাই আমাদের প্রয়োজন হবে। নিউজিল্যান্ডে আমরা খানিকটা ইংল্যান্ডের মতো কন্ডিশন পেতে পারি এবং এক দিনের ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা বেশ শক্তিশালী। বিশ্বকাপের আগে সেখানে ভালো প্রস্তুতির সুযোগ আছে।’

নিউজিল্যান্ড সিরিজ আসতে সেই ফেব্রুয়ারি। আপাতত কদিনের ছুটি কাটাতে কাল রাতে ইংল্যান্ডে রওনা হওয়ার কথা রোডসের। ফিরবেন ১২ জানুয়ারি, ১৫ তারিখের মধ্যে নিউজিল্যান্ড সফরের দল ঘোষণার কথা। তারপর ছাত্রদের নিয়ে পূর্ণোদ্যমে আবার মাঠে নেমে পড়বেন তিনি। ছুটিতে যাওয়ার আগে কাল দুপুরে অবশ্য মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কার্যালয়ে নিউজিল্যান্ড সফর নিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, আলোচনা হয়েছে উইন্ডিজ সিরিজে দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করা সাব্বির খানের সঙ্গেও।

প্রধান নির্বাচকের কণ্ঠেও কোচের কথার অনুরণন। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারে একটু আক্ষেপ অবশ্য আছে, তবে পারফরম্যান্সে ভারসাম্য ফেরার সন্তুষ্টি আছে আরও বেশি, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজে (টি-টোয়েন্টি) সিরিজ জয় অনেক বড় পাওয়া ছিল। এখানেও (দেশের মাটিতে) বড় সুযোগ ছিল, সেটা হাতছাড়া হয়ে গেছে। এই কাছাকাছি যাওয়া, কম্পিটিশন করা একটা দলের ভারসাম্যের ইঙ্গিত দেয়।’
প্রাপ্তির হিসাব মিলিয়েছেন প্রধান নির্বাচক, ‘টানা দুটি সিরিজে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। অনেক তরুণ খেলোয়াড় ভালো করেছে। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের মধ্যে টেস্ট ক্রিকেটে একটু ফর্মের ঘাটতি ছিল, তারা ফর্ম ফিরে পেয়েছে। একটা ভারসাম্য তৈরি হয়েছে। নতুন ও অভিজ্ঞদের এই পারফরম্যান্স অবশ্যই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে কাজে লাগবে। আমরা খুবই সন্তুষ্ট পারফরম্যান্সে।’

মিনহাজুল চান এই ছন্দটাই যেন থাকে নিউজিল্যান্ড সফরে। ২০১৬-১৭–এর নিউজিল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা দুঃস্বপ্নে মোড়া, তিন সিরিজেই ধবলধোলাই। ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে পর্যন্ত হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এবারের সফরে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন প্রধান নির্বাচকের কণ্ঠে, ‘আমরা খুব সন্তুষ্ট যে একটা ভারসাম্য এসেছে, ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং—সব দিক থেকে। সামনে যে সিরিজগুলো আছে সেখানে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।’