এমন অবিশ্বাস্য কাজ কীভাবে করলেন দুশবেকভ?

স্বাধীনতা কাপের শিরোপা হাতে বখতিয়ার দুশবেকভ। সংগৃহীত ছবি
স্বাধীনতা কাপের শিরোপা হাতে বখতিয়ার দুশবেকভ। সংগৃহীত ছবি
>বসুন্ধরা কিংসের মিডফিল্ডার বখতিয়ার দুশবেকভ যা করেছেন, বিশ্ব ফুটবলে এমন নজির আছে কি না সন্দেহ। ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে দুইটি ম্যাচ খেলেছেন কিরগিজস্তান জাতীয় দলের এই মিডফিল্ডার

এ যেন শ্যাম রাখি না কুল রাখি! আর দুই কুল রক্ষা করতে বড় ত্যাগ শিকার তো করতেই হয়। কিন্তু তাই বলে এত বড় ত্যাগ! বসুন্ধরা কিংসের মিডফিল্ডার বখতিয়ার দুশবেকভ যা করেছেন, বিশ্ব ফুটবলে এমন নজির আছে কি না সন্দেহ। ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে দুইটি ম্যাচ খেলেছেন কিরগিজস্তান জাতীয় দলের এই মিডফিল্ডার। সেটাও আবার প্রথম ম্যাচ কাতারে খেলে এসে পরের ম্যাচ বাংলাদেশে। দুই ম্যাচ মিলিয়ে তাঁকে মাঠে থাকতে হয়েছে প্রায় ২১০ মিনিট। ভাবা যায়!

বুধবার শেখ রাসেলকে হারিয়ে স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জয় করেছে বসুন্ধরা। শিরোপা মঞ্চে দুর্দান্ত খেলেছেন বখতিয়ার, তা সবারই জানা। কিন্তু এমন একটি প্রতিযোগিতা মূলক ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন, এটাই ছিল প্রত্যাশার বেশি। সেখানে দলকে ছায়া দিলেন পুরো ১২০ মিনিটই।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময়ে রাত সাড়ে এগারোটায় কাতারের বিপক্ষে শুরু হওয়া প্রীতি ম্যাচে কিরগিজস্তান জাতীয় দলের জার্সিতে পুরো সময় খেলেছেন বখতিয়ার। খেলা শেষে ভোর রাতেই ঢাকার বিমান ধরা। ক্লাবে ফিরতে ফিরতে প্রায় ঘড়িতে প্রায় সাড়ে এগারোটা। কোনো রকম মুখে কিছু তুলে নিয়ে আবার দলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উদ্দেশ্যে যাত্রা। আর স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে নেমে পড়লেন বিকেল সাড়ে চারটায়। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হওয়ার ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।

দুইটি ম্যাচেই ছিল প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছেন মিডফিল্ডার হিসেবে আর বসুন্ধরায় সেন্টারব্যাক। আন্তর্জাতিক ফুটবলে একদিনের ব্যবধানেও দুই ম্যাচ খেলার নজির নেই। সেখানে ১৬ ঘণ্টায় দুই ম্যাচ! কাতারের বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াই করে ১-০ গোলে হারে কিরগিজস্তান। আর ঢাকায় ১২০ মিনিটের খেলায় ২-১ গোলে জয় বসুন্ধরার। কীভাবে এমন কঠিন কাজ সাধ্য করে দেখালেন ২৩ বছর বয়সী বখতিয়ার? এশিয়ান কাপের প্রস্তুতির জন্য কাতারে চলমান জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকেই প্রথম আলোকে জানালেন কিরগিজ মিডফিল্ডার, ‘বিষয়টি কঠিন ছিল। কিন্তু ক্লাবকে আমি সাহায্য করতে চেয়েছিলাম বলেই মাঠে নামা। দুইটি ম্যাচ খেলার মধ্যে আমি ঘুমিয়েছি মাত্র দুই ঘণ্টা। দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আমার কষ্টটা সফল হয়েছে।’

স্বাধীনতা কাপের ফাইনাল খেলেই সে রাতেই জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার জন্য ঢাকা ছেড়েছেন বখতিয়ার। এর আগে নির্ধারিত ফিফা উইন্ডোতে জাপানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলার জন্য ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনাল খেলা হয়নি বখতিয়ারের। তাই এবারের ফাইনালটা হাতছাড়া করা যাবে না, এমন পণ করেই যেন কাতার থেকে রওনা হয়েছিলেন। দলের প্রতি খেলোয়াড়ের এমন ত্যাগের প্রশংসা করলেন বসুন্ধরা ম্যানেজার জোবায়ের নিপু, ‘প্রায় দুপুরের দিকে ক্লাবে ফিরে কোনো রকম খেয়েই মাঠে নেমে পড়েছে। দলের প্রতি এমন নিবেদন দেখে খুবই খুশি আমরা। আর ও যে আগের রাতে ম্যাচ খেলেছে, তা মাঠে একবারও মনে হয়নি।’