ক্রিকেটে একটা বৈশ্বিক ট্রফির স্বপ্ন মাশরাফি-সাকিবদের

সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, তামিম ইকবাল: বাংলাদেশ ক্রিকেটের পঞ্চপাণ্ডব। ছবি: শামসুল হক
সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, তামিম ইকবাল: বাংলাদেশ ক্রিকেটের পঞ্চপাণ্ডব। ছবি: শামসুল হক
>

মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ হচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালি প্রজন্মের ৫ প্রতিনিধি। মাশরাফি এ বছর বিদায় নিলে ২০১৯ বিশ্বকাপের পর আর হয়তো কোনো আইসিসির টুর্নামেন্টে এক সঙ্গে দেখা যাবে না তাদের। ‘পঞ্চপাণ্ডব’ থাকতে থাকতে কি বাংলাদেশ পারবে কোনো ট্রফি জিততে? নতুন বছরের প্রথম দিনে তাদের স্বপ্নের কথা জেনে নেওয়া যাক


অতীতের পাতায় চলে গেছে ২০১৮। স্বাগত ২০১৯। বছরটা বাংলাদেশ ক্রিকেটে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, এটি যে বিশ্বকাপের বছর। অন্য দুই সংস্করণের তুলনায় ওয়ানডেতে ধারাবাহিক সাফল্য, অন্তত ছয়জন ক্রিকেটারের আছে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা। স্বাভাবিকভাবেই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।

কিন্তু বাস্তবতা যে বড্ড কঠিন। বড় ট্রফি দূরে থাক, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ কখনো কোনো ফাইনালই জেতেনি। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি অবশ্য আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ছিল, তবে সে টুর্নামেন্টের কোনো ম্যাচই ওয়ানডে হিসেবে গণ্য হয় না। কখনোই ফাইনাল না জেতার তিক্ত তথ্যটা জানার পরও স্বপ্ন দেখতে হয়। বড় ট্রফি, বড় মঞ্চে আলো ছড়াতে বাংলাদেশ আগামী মে-জুনে-জুলাইয়ে খেলতে যাবে বিশ্বকাপ। বেলজিয়াম যেমন ২০১৮ ফুটবল বিশ্বকাপ খেলেছে তাদের সোনালি প্রজন্মে সওয়ার হয়ে। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপও বাংলাদেশ খেলতে যাবে তার সোনালি প্রজন্মের ওপর আস্থা রেখে। মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ হচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালি প্রজন্মের ৫ প্রতিনিধি—যাঁরা এক সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন এক দশকের বেশি সময় ধরে, যাঁরা এক সঙ্গে খেলেছেন ১০০-এর বেশি ওয়ানডে।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ দিয়ে শেষ করার ইচ্ছে মাশরাফির, এই বিশ্বকাপের পর তাই আর কোনো আইসিসির টুর্নামেন্টে এক সঙ্গে পাওয়া যাবে না ‘পঞ্চপাণ্ডব’কে। পাঁচ তারকা থাকতে থাকতে কি বাংলাদেশ পাবে একটা বৈশ্বিক শিরোপার স্বাদ? প্রশ্নটা বিভিন্ন সময় করা হয়েছিল তাঁদের। নতুন বছরের প্রথম দিনটা হচ্ছে স্বপ্নের কথা বলার দিন, আশার গান শোনানোর দিন। অন্য সময় প্রকাশ না করে এ দিনে তাই জানানো হলো তাঁদের স্বপ্নের কথা—

মাশরাফি বিন মুর্তজা
‘বৈশ্বিক শিরোপা জিততে আসলে ভাগ্যের সহায়তা দরকার, শুধু ভালো খেললেই হবে না। তাহলে তো দক্ষিণ আফ্রিকার তিন-চারটা বিশ্বকাপ জেতার কথা ছিল। ওই লাকটা থাকতে হবে। একই সঙ্গে ভালোও খেলতে হবে। নির্দিষ্ট টুর্নামেন্টে ভালো খেলতে হবে। তবে শুধু পাঁচজনকে দিয়ে বিশ্বকাপ জেতা সম্ভব নয়। দল হিসেবে খেলতে হবে। তবে কোনো শিরোপা জয় একটা দলের মানদণ্ড নয়। ধারাবাহিক ভালো খেলাই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। এটা ঠিক, জুনিয়ররা ২০১৫ সালে যেভাবে খেলেছিল, সেভাবে খেলতে পারলে অনেক কিছু সম্ভব ছিল। ওদের অনেক ভূমিকা আছে। আর সিনিয়রদের সমর্থন তো আছেই।’

সাকিব আল হাসান
‘সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। ওয়ানডেতে আমরা ভালো একটা দল। কন্ডিশন আমাদের পক্ষে না থাকলেও যে ভালো করব না, তা নয়। আমাদের উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। তবে কিছু একটা করেই ফেলব, সেটিও বলা ঠিক হবে না।’

তামিম ইকবাল
‘অবশ্যই সম্ভব। এই সম্ভবকে সত্যি করতে হলে আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হবে। দল হিসেবে ভালো করতে হবে। দুই-তিনজনে বড় ট্রফি জেতা সম্ভব নয়।’

মুশফিকুর রহিম
‘আমাদের অবশ্যই স্বপ্ন দেখা উচিত ২০১৯ বিশ্বকাপে ভালো করার। বিশ্বকাপের সূচিটা যেভাবে করা হয়েছে তাতে অবশ্যই ভালো করা উচিত। আমরা পাঁচজন যেভাবে ভালো খেলছি, যদি ফিট থেকে খেলতে পারলে আশা করি ভালো কিছু আশা করতেই পারি।

মাহমুদউল্লাহ
‘বিশ্বাসটা আমাদের আছে, আমরা বড় কোনো টুর্নামেন্ট জিততে পারব। এর আগে আমরা ৪-৫টা ফাইনাল খেললাম। ফাইনালে শেষ যে বাধাটা সেটা আমরা পার হতে পারছি না। এ বিষয়ে আমাদের মনোযোগ আছে। আমাদের যেকোনো ক্যাম্প শুরু হলে মাশরাফি ভাই এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলছে, পরে সুযোগটা আবার এলে আমাদের কী করা উচিত, যেভাবে খেলেছি আগে, কী ভিন্ন চিন্তা করলে আমরা এটা কাটিয়ে উঠতে পারি, এসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলি। এ জিনিসগুলো খুঁজে বের করা, কোন জায়গায় আমাদের ঘাটতি আছে এটা কাটিয়ে উঠতে হবে। সামনে যদি এ ধরনের সুযোগ আসে, বলব যে আমি অন্তত এ সুযোগ হারাতে চাই না।’