৭১ বছরের ইতিহাস ডাকছে কোহলির ভারতকে

খুদে ভক্তের সঙ্গে কোহলির সেলফি। আজ সিডনিতে। ছবি: এএফপি
খুদে ভক্তের সঙ্গে কোহলির সেলফি। আজ সিডনিতে। ছবি: এএফপি
>

১৯৪৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া সফর করছে ভারত। কখনো অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জেতা হয়নি। এবার সেই উজ্জ্বল সম্ভাবনার সামনে বিরাট কোহলির ভারত

একটা কীর্তি এরই মধ্যে গড়েছে ভারত। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমের পর এই প্রথম অস্ট্রেলিয়া সফরে দুটি টেস্ট জিতেছে তারা। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি ধরে রাখা তাই নিশ্চিত তাদের। কিন্তু বিরাট কোহলিরা আরও বড় কীর্তির সামনে দাঁড়িয়ে। সিডনিতে বাংলাদেশ সময় কাল বৃহস্পতিবার ভোরে শুরু সিরিজের শেষ টেস্টটা না হারলেই প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া থেকে সিরিজ জিতে ফিরবে কোনো ভারতীয় দল। সুযোগটা কি নিতে পারবেন কোহলিরা?

এ মুহূর্তে মনে হচ্ছে, না নিতে পারার কোনো কারণ নেই। ঐতিহ্যগতভাবেই অস্ট্রেলিয়া সফরে গেলে ভারত সিডনিতে খেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকে সবচেয়ে বেশি। কারণ অন্য যেকোনো মাঠের চেয়ে সিডনি অনেক বেশি স্পিনবান্ধব। এখানেই ভারত কিছুটা সুযোগ পায় নিজেদের শক্তিটা দেখানোর। কোহলিরা এবার সেই সিডনিতে নামছেন সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে। এমন দারুণ মঞ্চ আর কবে পেয়েছে ভারত!

আরও একটা জায়গায় এবার এগিয়ে ভারত। চিরকাল অস্ট্রেলিয়া গিয়ে ভালো পেস বোলারের অভাবে ভুগেছে ভারত। সেই দলেরই পেসার জসপ্রীত বুমরা এখন পর্যন্ত ২০ উইকেট নিয়ে সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক। যেখানে তিন অস্ট্রেলিয়ান পেসার প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক ও জস হ্যাজলউডের উইকেট যথাক্রমে ১৪, ১২ ও ১১টি করে। এর আগে কখনো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কোনো সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হতে পারেননি কোনো ভারতীয় পেসার।

যদি চিরাচরিত ঐতিহ্য মেনে সিডনি স্পিনিং উইকেটই থাকে, তাহলেও লাভটা হবে সম্ভবত ভারতেরই। হ্যাঁ, অস্ট্রেলিয়া দলেও এই সময়ের অন্যতম সেরা স্পিনার নাথান লায়ন আছেন। পার্থে যিনি ৮ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন । তবে একা লায়নের কাঁধে সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে মনে হয় না নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে অস্ট্রেলিয়া। পার্থে ভারত কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার না খেলালেও মেলবোর্নেই দলে ফিরিয়েছে রবীন্দ্র জাদেজাকে। ৫ উইকেট নিয়ে সেটার প্রতিদানও দিয়েছেন জাদেজা, যেখানে লায়ন পেয়েছেন মাত্র ১ উইকেট। ওদিকে অ্যাডিলেডে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৬ উইকেট নিয়ে চোটে পড়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন ফিট হয়ে গেছেন প্রায়। স্পিনবান্ধব উইকেট হলে সিডনিতে তাঁর ফেরা প্রায় নিশ্চিত। অধিনায়ক কোহলিই আভাস দিয়েছেন, ‘ও ম্যাচ খেলার মতো ফিটনেসের খুব কাছাকাছি। আমার মনে হয়, সিরিজের শেষ টেস্টটা খেলার জন্য সে মুখিয়ে আছে।’

স্পিনের লড়াইয়ে জেতার জন্যই সম্ভবত অস্ট্রেলিয়া দলে ডাকা হয়েছে লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার মারনাস লাবুশেনকে। মেলবোর্নে সুযোগ পাওয়া মিচেল মার্শের জায়গা নিতে পারেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার দুশ্চিন্তা অবশ্য শুধু স্পিন নয়, ব্যাটিংও। এই সিরিজে এখন পর্যন্ত সেঞ্চুরি নেই কোনো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানের। প্রথম ছয়জনের মধ্যে ৩০-এর ওপরে গড় শুধু পাঁচ নম্বরে ব্যাট করা ট্রাভিস হেডের। মেলবোর্নের দুই ইনিংসে ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ করেছেন ৮ ও ৩। কিন্তু বিকল্প ওপেনারের এতই অভাব যে তাকেই রেখে দিতে হচ্ছে দলে! এমনি এমনি তো আর স্মিথ-ওয়ার্নারের জন্য আক্ষেপ করছেন না অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক টিম পেইন। কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার নিজেই বলেছেন, ‘দলের দরজায় যারা কড়া নাড়ছে, ওদের কারও ব্যাটিং গড়ই ভালো নয়। আমাদের ব্যাটিং নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে।’
এ সুযোগটা কেন নেবে না ভারত!