মার্চেই ফিরছেন রোনালদো, আর মেসি?

মেসি রোনালদোকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেখা যাবে আবার। ফাইল ছবি
মেসি রোনালদোকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেখা যাবে আবার। ফাইল ছবি
>

সবকিছু ঠিক থাকলে পর্তুগালের হয়ে ১৫৫তম ম্যাচটি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো খেলবেন আগামী ২২ মার্চ। লিওনেল মেসিও জাতীয় দলে ফিরছেন বলে আভাস মিলেছে

বছরের শেষভাগটা জাতীয় দলের বাইরে কাটিয়েছেন দুজনই। রাশিয়া বিশ্বকাপের পর থেকেই বিশ্রামে সময়ের অন্যতম দুই সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। মেসিকে নিয়ে গুঞ্জন ছিল, আর কখনো হয়তো আর্জেন্টিনার জার্সিতে খেলতেই দেখা যাবে না তাঁকে! আর রোনালদোকে নিয়ে লোকেরা বলেছে অন্য কথা—হয়তো ধর্ষণ কেলেঙ্কারির কারণেই পর্তুগালের অধিনায়ককে জাতীয় দলে ডাকা হচ্ছে না!

সংবাদমাধ্যম আর ফুটবল সমর্থকদের এসব কথার মাঝে মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন মেসি ও রোনালদো। কিন্তু দুই দলেরই কোচরা বলে গেছেন, সময় হলেই জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যাবে তাঁদের। আর্জেন্টিনার ভারপ্রাপ্ত কোচ স্কালোনি তো দিন কয়েক আগেও বলেছেন, নতুন বছরেই দেশের জার্সিতে মাঠে নামবেন মেসি। আর রোনালদো? এ বছর পর্তুগালের হয়ে তাঁর মাঠে ফেরার খবরটি নিজেই দিয়েছেন। পর্তুগালের ক্রীড়া দৈনিক রেকর্ডকে ৩৩ বছর বয়সী রোনালদো বলেছেন, ‘২০১৯ সালে (জাতীয় দলে) ফিরতে আমি উন্মুখ হয়ে আছি।’

ফ্রান্সের কাছে ৪–৩ গোলে হেরে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিয়েছে আর্জেন্টিনা। এরপরই মেসি ঘোষণা দিয়েছিলেন ২০১৮ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে আর খেলবেন না, থাকবেন বিশ্রামে। রোনালদো ও রকম ঘোষণা না দিলেও বিশ্বকাপের পর আর জাতীয় দলের হয়ে কোনো ম্যচ খেলেননি। এই সময়ে ৬টি ম্যাচ খেলেছে পর্তুগাল। ৩টি জয়ের পাশাপাশি ৩টি ম্যাচে করেছে ড্র। জায়গা করে নিয়েছে নেশনস লিগের চূড়ান্ত পর্বে।

এই ম্যাচগুলোতে রোনালদো কেন খেলেননি? এত দিন পর সেটা জানিয়েছেন রোনালদো নিজেই। পর্তুগালের টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে এ মৌসুমেই জুভেন্টাসে নাম লেখানো তারকা ফরোয়ার্ড। নতুন জায়গায় মানিয়ে নিতে তাঁর একটু বেশি পরিশ্রম করার প্রয়োজন ছিল। জুভেন্টাসে একটু বেশি সময় দিতেই জাতীয় দল থেকে বিশ্রাম চেয়েছিলেন রোনালদো। রেকর্ড পত্রিকায় তিনি বলেছেন, ‘আমি বলেছিলাম, মৌসুমের প্রথম অর্ধে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারব না। তারাও রাজি হয়েছিল। আমার এখন ৩৩ বছর বয়স। মাত্রই একটি দেশ থেকে আরেকটি দেশে এসেছি। এখানকার কাজের ধরন, সতীর্থ, ব্যক্তিগত রুটিন—সবই নতুন ছিল। আমার মনে হয়েছে, মৌসুমের প্রথম অর্ধে জাতীয় দলে বিশ্রামে থাকাটাই ভালো হয়েছে।’

রোনালদোর কৌশলটা কাজেও লেগেছে বলতে হবে। জুভেন্টাসের হয়ে সব প্রতিযোগিতায় খেলা ২৪ ম্যাচে গোল করেছেন ১৫টি, গোলে সহায়তা ৮টি। জুভেন্টাসের হয়ে প্রথম গোল পেতে অবশ্য ৪ ম্যাচ লেগেছে রোনালদোর। সিরি ‘আ’র চতুর্থ ম্যাচে সাসসুয়োলোর বিপক্ষে জোড়া গোল দিয়ে সেই যে শুরু, আর পেছন ফিরে তাকাননি। ১৯ ম্যাচ শেষে ১৪ গোল নিয়ে সিরি ‘আ’র সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন পর্তুগাল অধিনায়কই।

তা না হয় হলো, কিন্তু নতুন বছরে পর্তুগালের হয়ে কবে মাঠে নামবেন রোনালদো? খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না তাঁর ভক্তদের। সবকিছু ঠিক থাকলে ২২ মার্চ লিসবনে ইউক্রেনের বিপক্ষে ইউরো ২০২০–এর বাছাইপর্বের ম্যাচটি দিয়েই জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে ফিরবেন রোনালদো, যেটি হবে পর্তুগালের হয়ে তাঁর ১৫৫তম ম্যাচ।

মেসি কবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরবেন, সে দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থা আভাস দিয়ে রেখেছে, আগামী কোপা আমেরিকার আগেই জাতীয় দলে দেখা যাবে মেসিকে। ২০১৯ সালে টানা তৃতীয় বছরের মতো কোপার আসর বসছে। এবারের আয়োজক ব্রাজিল। জুন-জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের কোপা আমেরিকা।