অস্ট্রেলীয় ভাষ্যকারকে ব্ল্যাকআউট করে দিচ্ছে ভারত!

মায়াঙ্ককে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ঝামেলায় পড়েছেন ও`কিফ। ছবি: এএফপি
মায়াঙ্ককে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ঝামেলায় পড়েছেন ও`কিফ। ছবি: এএফপি

বাংলাদেশের প্রশংসা করে বিরাগভাজন হয়েছিলেন হার্শা ভোগলে। চাকরি হারাতে হয়েছিল। দীর্ঘ দিন বেকার থাকার পর আবারও ক্রিকেট ধারাভাষ্য ও টিভি পণ্ডিত হিসেবে ফিরেছেন। ভোগলের মতো অতটা কঠিন না হলেও, বিচিত্র এক অভিজ্ঞতা পেতে হচ্ছে কেরি ও’কিফকে। চলতি সিডনি টেস্টে যখনই তিনি ধারাভাষ্য দিচ্ছেন, তাঁর বদলে অন্যদের ধারাভাষ্য শোনাচ্ছে সনি ইএসপিএন। অনুমান করা হচ্ছে, আগের টেস্টে অভিষিক্ত মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে নিয়ে খোঁচা মেরে কথা বলায় এই শাস্তি।

অস্ট্রেলিয়ার হোম সিরিজ প্রচারের দায়িত্বে আছে ফক্স ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তাদের ফিড নিয়েই যেটি ভারতে সম্প্রচার করছে সনি পিকচার নেটওয়ার্কের খেলার চ্যানেলগুলো। কোনো ঝামেলা না বাড়াতেই সনি ও’কিফকে ব্ল্যাকআউট করছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। খবরটি অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি কেউ। তবে মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে নিয়ে আগের টেস্টে করা তাঁর মন্তব্য ভারতীয় সমর্থকদের খেপিয়ে দিয়েছিল। এ নিয়ে টুইটারে এক পশলা ঝড় বয়ে গেছে।

তিন ইনিংসের ক্যারিয়ার। দুটিতেই সত্তরের ইনিংস খেলে এরই মধ্যে নজর কেড়েছেন মায়াঙ্ক। মেলবোর্নে অভিষেকের সময় মায়াঙ্কের ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্দান্ত ফর্ম নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল ধারাভাষ্য কক্ষে। কথা হচ্ছিল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি নিয়ে। এ সময় ও’কিফ মন্তব্য করেন, মায়াঙ্কের ট্রিপল সেঞ্চুরিটি এসেছিল রেলওয়ের ক্যানটিন কর্মীদের নিয়ে গড়া দলের বিপক্ষে। কথাটার মধ্যে কতটা নিরীহ হাস্যরস ছিল, কতটা বিদ্রূপ; তা তো বলা কঠিন। তবে ভারতীয় সমর্থকেরা ভালোভাবে নেয়নি এই মন্তব্য। অনেকে বলছেন, এ ধরনের কথা বলা বর্ণবাদী আচরণের শামিল।

সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে এতটা হইচই হবে ভাববেই পারেন ও’কিফ। এর আগে তিনি বলেছেন, তাঁর বলা কথাকে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, এটা অন্যায়। তিনি কী ভেবে কী বলেছেন, সেটা ধরে নিয়ে রায় দেওয়া ঠিক হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি ক্ষমাও চান। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। এত দিন সনি যেটা করত, সেটা হলো নিজেদের স্টুডিও থেকে ৩০ মিনিট ধারাভাষ্য দেওয়া হতো। এরপর অস্ট্রেলিয়া থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত ধারাভাষ্য দেখানো হতো। কিন্তু ও’কিফ যদি ধারাভাষ্য কক্ষে থাকেন, সে ক্ষেত্রে আর এ নিয়মে কাজ করা হচ্ছে না।

ঘটনার দিন মার্ক ওয়াহ ব্যাখ্যা করছিলেন ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের ৫০ গড় অস্ট্রেলিয়ায় ৪০ এর কাছাকাছি থাকবে, তখন মায়াঙ্কের ব্যাটিং দেখে ও’কিফ বলেছিলেন সে অনুযায়ী ত্রি শতক রেলওয়ের ক্যানটিনের ছেলেদের বিপক্ষে এসেছে। পরে এ মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন, ‘ভারতের প্রথম শ্রেণিতে আগারওয়াল অনেক রান করেছে এ নিয়েই কথা বলছিলাম। আমি মোটেও ভারতের ক্রিকেটের মান নিয়ে কথা বলিনি। ওটা মজা ছিল। অনেক বেশি রান তাই বলেছিলাম। যদি কেউ এতে মনঃক্ষুণ্ন হয় তবে দুঃখিত।’

রবি শাস্ত্রী এর কড়া উত্তর দিয়েছিলেন। মায়াডোর ৭৬ রানের ইনিংসের পর বলেছিলেন, ‘ও কেরিকে একটা জবাব দিয়েছে। আর সেটা হলো, যখন তুমি ক্যানটিন খুলবে তখন মায়াঙ্ক এসে কফির গন্ধ শুকে যাবে। সে দেখতে চায় ভারতে যে কফি ছিল সেটার গন্ধ ভালো নাকি এখানকারটা।’

এরপরও অবশ্য ও’কিফের আচরণ খুব একটা বদলায়নি। সে টেস্টের চতুর্থ দিনেই ভারতীয়দের নাম নিয়ে রসিকতা করেছেন। বলেছেন, ‘কেন আপনি আপনার ছেলের নাম চেতেশ্বর জাদেজা রাখবেন!’