জাজাইয়ের পর শুভাগত ঝড়

ঝড় তুলেছিলেন জাজাই। ছবি: প্রথম আলো
ঝড় তুলেছিলেন জাজাই। ছবি: প্রথম আলো

মিরপুরে কী হবে সেটা, সেটা ১৮ বছরের ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা দিয়েও বিচার করতে রাজি হননি রবি বোপারা। ভাগ্যিস করেননি, বিপিএলের প্রথম ম্যাচে রান তুলতে নাভিশ্বাস উঠছিল। আর দ্বিতীয় ম্যাচে হলো রান বন্যা! প্রথম ম্যাচে দুই দল মিলে ১৯বার সীমানা পার করলেন বল, আর ঢাকার দুই ওপেনার সেটা করে দেখালেন ১৭ বার। হ্যাঁ, মিরপুরের উইকেটেই। রাজশাহী কিংসের কপাল ভালো, ঢাকা ডায়নামাইটসের ঝড়টা সময়মতো সামাল দিতে পেরেছে তারা। না হলে ঢাকার স্কোরটা আজ ১৮৯ না হয়ে খুব সহজেই ২৫০ হতে পারত!

বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে? তবে একটু পরিসংখ্যানের আশ্রয় নেওয়া যাক। ২৬তম বলে পঞ্চাশ ছোঁয়া ঢাকা ৮ ওভারেই ৯৬ রান তুলে ফেলেছিল। পরের ওভারেই এক শ ছুঁয়ে ফেলেছে ডায়নামাইটস। উইকেটের ঘরে তখনো কোনো অঙ্ক বসেনি। প্রথম ৯ ওভারে ১০০ তোলা ঢাকা শেষ ৩ ওভারে তুলেছে ৪৭ রান, সেটাও বিনা উইকেটে। বাকি ৮ ওভারে ১০০ রান তোলা তো খুব একটা কঠিন ছিল না। ঢাকা মাঝের এই ৮ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তুলেছে মাত্র ৪২ রান। এ কারণেই প্রথম ইনিংস শেষেই ঢাকাকে বিজয়ী বলে দেওয়া যাচ্ছে না।

যেভাবে আজ ঝড় উঠেছিল। হজরুতুল্লাহ জাজাই ঝড় তুলতে অভ্যস্ত। কদিন আগেই আফগানিস্তানে এক ওভারে ছয় ছক্কা মেরেছেন। ইদানীং সুনীল নারাইনও কম যান না। তো এমন দুজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান দেখে মেহেদী হাসান মিরাজ প্রথম ওভারে নিজেই বল হাতে তুলে নিয়েছিলেন। অফ স্পিনার বলে কথা। প্রথম ওভারে এল মাত্র এক ছক্কা। মোস্তাফিজের পরের ওভারে মাত্র এক চার। মিরাজের পরের ওভারেই নড়েচড়ে বসতে হলো। এল তিন ছক্কা। মোস্তাফিজের ওভারে এল দুটি চার। আলাউদ্দীন বাবুর ওভারে চার ও ছক্কার মধ্যে কোনো মান অভিমান রাখা হয়নি। এক ছক্কার সঙ্গে এবার এল তিন চার। ৫ ওভারেই ৬৫ রান পেয়ে গেল ঢাকা।

সপ্তম ওভারেই ঝড় থামার সুযোগ ছিল। মোহাম্মদ হাফিজের তৃতীয় বলে আকাশে বল তুলে দিয়েছিলেন জাজাই। উইকেটরক্ষক জাকির সবাইকে থামিয়ে ক্যাচ ধরতে গেলেন, আর গ্লাভস থেকে বল ফেলে দিলেন। মাত্র ২২ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়া জাজাইয়ের ইনিংসটা তাই ২৩তম বলেই থামেনি। উদ্বোধনী জুটিটাও লম্বা হলো ৭০ রানের বেশি। সুনীল নারাইন ১১তম ওভারে গিয়ে হাফিজের বলে আউট হলেন ৩৮ রান করে। সঙ্গী হারানো জাজাইও বেশিক্ষণ টিকলেন না। আর ৬ রান পরেই ৭৮ করে ফিরলেন জাজাই। ৪১ বলে ৪টি চার ও ৭ ছক্কার ইনিংসের পরই ঢাকার ইনিংসে একটা ধস নামল। বিনা উইকেটে ১১৬ থেকে ১৩৬/৫ হয়ে গেল ৫ ওভারের মধ্যেই! সাকিব, পোলার্ড, নুরুল—সবাই আউট হয়েছেন হাস্যকরভাবে।

শুভাগত হোম ও আন্দ্রে রাসেল মিলে ঢাকা সামলে ওঠাতেই ঢাকার ইনিংসটা এত বড় হয়েছে। তুলনামূলক আগ্রাসী সঙ্গীকে টপকে আলোচনায় ছিলেন শুভাগতই। রাসেল যেখানে ২১ রান তুলতেই ১৯ বল ব্যবহার করে ফেলেছেন, সেখানে হোমের ৩৮ রান এসেছে মাত্র ১৪ বলে!