টানা হারেই চ্যাম্পিয়নের মন্ত্র দেখছেন মাশরাফি

এখনো অধিনায়কের মুখে হাসি ফোটেনি। ছবি: প্রথম আলো
এখনো অধিনায়কের মুখে হাসি ফোটেনি। ছবি: প্রথম আলো
>সিলেটে পরের ম্যাচটা জিতলে মাশরাফির রংপুরের জয়ের হার হবে ৫০ শতাংশ। ৬ ম্যাচের তিনটিতে জয়। গতবারও রংপুর ৬ ম্যাচের তিনটিতে জিতে শুরু করেছিল বিপিএল। কষ্টেসৃষ্টে শেষ চারে ওঠার পর সেই রংপুরই হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। এবার সেই শুরুর খারাপ সময় থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজছেন মাশরাফি।

মাশরাফি বিন মুর্তজার দল হেরে যাওয়ায় একটা সুবিধাজনক দিক পাওয়া যাচ্ছে। বিপিএলে ম্যাচের আগে বা পরে কথা বলার জন্য বিদেশিদের বদলে দেশের ক্রিকেটারদের বেশি করে চান সাংবাদিকেরা। মাশরাফির দল যেদিনই হারছে, অন্য কাউকে ঠেলে না পাঠিয়ে অধিনায়ক নিজে হাজির হয়ে যাচ্ছেন। পরাজয়ের দায় মাথায় নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি যদি হতে হয়, অধিনায়কই না হয় হলেন!

মাশরাফি নিজে ম্যাচ হারের আরেকটা সুবিধাজনক দিক দেখছেন। ৫ ম্যাচের তিনটা হেরে গেছে দল। গতবারও বিপিএলে রংপুরের শুরুটা এমন যাচ্ছেতাই হয়েছিল। সেই রংপুরই তো শেষে চ্যাম্পিয়ন! যা হারার এখন হেরে যা জেতার পরেই না হয় জিতবে দল! সাংবাদিকেরা কেউ বলেনি, তবে মাশরাফি নিজেই মনে করিয়ে দিলেন, গতবার রংপুর ছয় ম্যাচের তিনটাতেই হেরে গিয়েছিল। এমনকি কোয়ালিফায়ার পর্বেও রংপুর গিয়েছিল চতুর্থ দল হয়ে। সেখানে তিন ম্যাচের দুটিতে গেইল-বিস্ফোরণ তো ট্রফিই এনে দিল! মাশরাফি আসলে বলতে পারতেন, গতবার রংপুর হেরেছিল প্রথম চার ম্যাচের তিনটাতেই!

মাশরাফি তাই বলছেন, গতবারের স্মৃতিই হতে পারে রংপুরের জন্য প্রেরণার, ‘গত বিপিএলে আমরা ৬ ম্যাচের ৩টিতে জিতে শুরু করেছিলাম। যেটা বললাম, ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন তো অবশ্যই। তবে গতবারও আমাদের এভাবেই খেলতে হয়েছে পুরো টুর্নামেন্টে। এখন আমাদের মানসিকভাবে খুব শক্তিশালী হতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার শক্তি থাকতে হবে। পাশাপাশি শারীরিকভাবে ফিট থাকতে হবে। সমন্বয় থাকতে হবে। শর্টকাট কোনো উপায় নেই। আমাদের শতভাগ ক্রিকেট খেলতে হবে।’

ঘুরে দাঁড়ানো কতটা কঠিন, সেটাও মাশরাফি মনে করিয়ে দিলেন, ‘অবশ্যই কঠিন। বিশেষ করে টানা দুটি ম্যাচ এভাবে (জিততে জিততে হেরে গেলে) হারলে তো আরও কঠিন। দুটো ম্যাচই আমাদের জেতা উচিত ছিল। পরপর এভাবে হারলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যায়। আসলে এখান থেকে বের হওয়ার শর্টকাট কোনো উপায় নেই। সামনের ম্যাচে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম আর নিজেদের উজাড় করে দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। কিছুই সহজ নয়, তবে একটা জয় হয়তোবা দলের ছন্দ বদলে করে দিতে পারে। গত আসরেও আমরা ছয় ম্যাচের তিনটা জিতেছিলাম। যদি পরের ম্যাচটা জিতি, এবার আমাদের ছয় ম্যাচের তিনটায় জয় হবে। আসলে টি-টোয়েন্টিতে আমরা ছন্দটা ধরতে পারছি না। বিশেষ করে খুবই প্রয়োজনীয় মুহূর্তে।’

যতই আশার বাণী শোনান, জেতা ম্যাচ এভাবে হেরে গেলে কোনো অধিনায়কেরই তা ভালো লাগার কথা নয়। গত ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেই ম্যাচটা হেরেছে তাঁর দল। আজ তো প্রায় প্রায় পুরোটাতেই আধিপত্য ছিল ঢাকার। মাশরাফি এই হতাশাটা লুকিয়ে রাখতে পারলেন না, ‘আপনি যদি সর্বশেষ দুটি ম্যাচের হারের ধরন দেখেন। ২২ বলে ২৯ রান ৭ উইকেট হাতে এমন ম্যাচ আমরা হেরেছি। আজকে তো প্রায় প্রতি বলে এক রান করে তুললেই হতো। উচিত ছিল সেটল হয়ে খেলা। ৬ ওভারের পরই তো খেলার সমীকরণ হয়ে গেল বলে বলে রান। এখানে তো এমন কোনো চাপ ছিল না যে ম্যাচ জিততে পারব না। যেভাবে আমরা ম্যাচ হেরেছি সেটা কোনোভাবেই অন্য কিছু দিয়ে অজুহাত হতে পারে না।’