সবার শেষেই থাকল খুলনা

মুশফিকুর ও ইয়াসিরের মতো ভাগ্য বদলে দেওয়া কোনো জুটি গড়তে পারেনি খুলনা। ছবি: প্রথম আলো
মুশফিকুর ও ইয়াসিরের মতো ভাগ্য বদলে দেওয়া কোনো জুটি গড়তে পারেনি খুলনা। ছবি: প্রথম আলো

ঘরোয়া ক্রিকেটে শেষ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতানোর কীর্তি আছে তাইজুল ইসলামের। ব্যাটিং দক্ষতা তাই একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। কিন্তু রান তাড়া করতে নামা দলের হয়ে ১৩তম ওভারেই যখন নামতে হয় এই বাঁহাতি স্পিনারকে, তখন বুঝে নিতে হয় তাঁর দল ভালো অবস্থায় নেই। বিশেষ করে লক্ষ্যটা যদি হয় বিপিএলের ইতিহাসেরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ! ২১৫ রানের লক্ষ্যে নামা খুলনা টাইটানস ষষ্ঠ উইকেট হারিয়েছে ১৩তম ওভারে। ম্যাচটাও যে তারা জেতেনি সেটাও নতুন করে বলাটা বাহুল্য ঠেকতে পারে। বরং অন্য এক তথ্য জানিয়ে দেওয়া যাক, আজকের ২৬ রানের হারে সিলেট পর্বটাও সবার নিচে থেকেই শেষ করল খুলনা।

সপ্তম ম্যাচে দলের ষষ্ঠ হার এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। নিজের দ্বিতীয় বলেই হেলমেটে বল লেগে উইকেটের পড়ে যাওয়ার পর প্রতি আক্রমণে দিনের দ্রুততম ফিফটিটা আশাও জাগিয়েছিল। কিন্তু ২৫ বলে পঞ্চাশ তোলা মাহমুদউল্লাহ পরের বলেই বোল্ড আউট হয়ে গেলেন। ৩ চার ও ৪ ছক্কার ইনিংসটার সঙ্গে সঙ্গে ডুবেছে খুলনার সব আশাও। কারণ ১১ ওভার শেষে খুলনার স্কোর তখন ১০২ হলেও উইকেটের ঘরে জ্বলজ্বল করা সংখ্যাটি ছিল ৫!

দুই শ ছাড়ানো স্কোর তাড়া করার জন্য যেমন শুরু প্রয়োজন খুলনার শুরুটা হলো ঠিক তাঁর উল্টো। দ্বিতীয় বলে পল স্টারলিং ফিরে গেলেন। আল আমিন ও জুনায়েদ সিদ্দিকও চতুর্থ ওভারের মধ্যে ড্রেসিংরুমে ফিরলেন। রান তখনো বিশ ছাড়ায়নি। মাহমুদউল্লাহর হেলমেট উড়িয়ে দেওয়া চতুর্থ ওভার শেষে খুলনার স্কোর ২৩/৩।

পঞ্চম ওভারে তাইজুল ইসলামকে পেয়ে খোলস ছেড়ে বের হলেন ব্রেন্ডন টেলর ও মাহমুদউল্লাহ। সানজামুল, দাসুন শানাকা আর নাঈম হাসানের বলে রীতিমতো উৎসব শুরু করলেন দুজন। কিন্তু ক্রমাগত স্লগ করার নেতিবাচক ফলটাও মিলল দ্রুত। ৯ ওভারে ৮৬ রান তোলা খুলনার পঞ্চম উইকেট পড়ল দশম ওভারের প্রথম বলেই। নাইমকে আরেকটি ছক্কা মারতে গিয়ে বোল্ড টেলর (১৬ বলে ২৮)। মাহমুদউল্লাহ বিদায় নেওয়ার খানিক পড়েই বিদায় নিলেন আরিফুলও, উইকেটে আসা ডেভিড ভিসে ঠিকভাবে থিতু হওয়ার আগেই!

এটাই দুঃখ বারিয়ে দিয়েছে খুলনা। ম্যাচের ফল যে এতটা ভদ্রস্থ দেখাচ্ছে, এর কৃতিত্ব ভিসের। তাইজুলকে সঙ্গে নিয়ে ৩৫ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েছেন ভিসে। ২ চার ও ৪ ছক্কায় চিটাগাংকে ভয়েই ফেলেছিলেন ভিসে। কিন্তু অন্যপ্রান্তে তাইজুলের বদলে প্রকৃত কোনো ব্যাটসম্যান না থাকায় ২০ বলের ওই লড়াইয়ে ম্যাচ জিতিয়ে আসতে পারেননি। খালেদ আহমেদের বলে ভিসের (৪০ রান) বিদায়ের পর ম্যাচের বাকি সময়টা পরিণত হয়েছে আনুষ্ঠানিকতায়। ২০ বলে ২২ রান করে তাইজুল দলকে শুধু ১৮৮ রানের সান্ত্বনাই এনে দিতে পেরেছেন।