ক্রিকইনফোর বর্ষসেরায় মাশরাফি, মুশফিক ও লিটন

মাশরাফির সঙ্গে মুশফিক ও লিটনের পারফরম্যান্সও জায়গা পেয়েছে ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা তালিকায়। ফাইল ছবি
মাশরাফির সঙ্গে মুশফিক ও লিটনের পারফরম্যান্সও জায়গা পেয়েছে ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা তালিকায়। ফাইল ছবি

বছর শেষ হলেই শুরু হয়ে যায় সেরাদের খোঁজখবর নেওয়া। আইসিসি আজই ২০১৮ সালের বর্ষসেরাদের পুরস্কার ঘোষণা করেছে। প্রথমবারের মতো সেরা খেলোয়াড়, টেস্ট ও ওয়ানডের সেরার পুরস্কার—তিনটিই জিতেছেন একজন, বিরাট কোহলি। দ্বিতীয়বারের মতো বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা করে নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। আইসিসির সেরাদের দলে বাংলাদেশের অন্য কেউ না থাকলেও ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা পারফরম্যান্সে ভালোভাবেই আছে বাংলাদেশের উপস্থিতি।

বর্ষসেরা ব্যাটিং পারফরম্যান্সের মধ্যে ইএসপিএন ক্রিকইনফোর বিচারক প্যানেল বাংলাদেশের দুটি পারফরম্যান্স রেখেছেন। দুটিই এশিয়া কাপের ঘটনা। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রায় অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিকুর রহিম। ৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল দল। মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে ইনিংসকে থিতু এনে দিয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু বড় একটা জুটির পর আবারও ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। লোয়ার অর্ডারকে নিয়েই লড়াই চালিয়ে গেছেন। ভাঙা হাত নিয়ে নামা তামিমকে নিয়ে দশম উইকেট জুটিতে ১৬ বলে ৩২ রান এনে দিয়ে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন অফুরন্ত আত্মবিশ্বাস। বাংলাদেশের ইতিহাসেরই সেরা ইনিংসটিই হয়তো সেদিন খেলেছিলেন মুশফিক। দুবাইয়ে মুশফিকের ১৪৪ রানের ইনিংসটি তাই ক্রিকইনফোর সেরা ব্যাটিং পারফরম্যান্সের মধ্যে জায়গা নিয়েছে অনায়াসে।

এশিয়া কাপেরই আরেকটি ইনিংস জায়গা করে নিয়েছে ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা পারফরম্যান্সে। এশিয়া কাপ ফাইনালে লিটন দাসের ইনিংসটি অনন্য হয়ে থাকবে। দলের ২২২ রানের ইনিংসে তাঁর অবদানই ছিল ১২১! কিন্তু শুধু রানের সংখ্যা নইয়, লিটনের ইনিংসটি মনে থাকবে তাঁর ব্যাটিং শৈলির জন্য। বহুদিন পর কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান এতটা সৌন্দর্যপূর্ণ আগ্রাসন দেখাতে পেরেছেন। জসপ্রীত বুমরার বলে এগিয়ে এসে খেলা, যুজবেন্দ্র চাহালকে মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে আছড়ে ফেলা, অন্যপ্রান্তের ব্যর্থতার মাঝেও দ্রুতগতিতে রান তোলা—অনেক দিন মনে রাখার মতো এক ইনিংসই ছিল লিটনের। এশিয়া কাপে দলের হারও সে ইনিংসকে ম্লান করতে পারেনি।

দুই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ক্রিকইনফোর সেরা পারফরমারদের মধ্যে আছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। ওয়েস্ট সফরের শুরুটা ভয়ংকর হয়েছিল বাংলাদেশের জন্য। ধবল ধোলাই হওয়া ভগ্ন আত্মবিশ্বাস নিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে সাকিব ও তামিমের দারুণ এক জুটিতে ২৭৯ রান পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সে রানটাও হয়তো যথেষ্ট হতো না যদি মাশরাফি বল হাতে জ্বলে উঠতেন। ইনিংসের শুরুতে এভিন লুইসকে ফিরিয়েছেন। পরে এসে ঝড় তোলার অপেক্ষায় থাকা জ্যাসন হোল্ডার, আন্দ্রে রাসেল ও অ্যাশলি নার্সকে ফিরিয়ে দিয়েছেন মাশরাফি। ৩৭ রানে ৪ উইকেট পাওয়া সে পারফরম্যান্সও জায়গা পেয়েছে ক্রিকইনফোর সেরা পারফরম্যান্সে।

এ বছর টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঘরের মাঠে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ। তবে এককভাবে তেমন দুর্দান্ত কিছু দেখাতে না পারায় ক্রিকইনফোর বর্ষসেরার তালিকায় আসেনি কোনো বোলার বা ব্যাটসম্যানের পারফরম্যান্স।