আশরাফুলকে 'নাই' করে দিয়েছে যে সম্ভাবনাময় তরুণ

বিপিএলে নজর কেড়েছেন ইয়াসির আলী। ছবি: প্রথম আলো
বিপিএলে নজর কেড়েছেন ইয়াসির আলী। ছবি: প্রথম আলো
>মোহাম্মদ আশরাফুল বিপিএলের শুরুর দিকে দুটি ম্যাচ খেলেছেন। এরপর দৃশ্যপটেই নেই। আশরাফুলের জায়গায় সুযোগ পেয়ে যে দারুণ খেলছেন ইয়াসির

বিপিএলের আগে খুব বেশি মানুষ তাঁকে চিনতেন, জোর দিয়ে বলা যাবে না। বিপিএলের মতো মঞ্চ নিজেকে চেনানোর। এবার খুব কম তরুণই পেয়েছেন সেভাবে নজর কাড়তে। তাঁদের মধ্যে আছেন ইয়াসির আলী। চিটাগং ভাইকিংসের এই তরুণ পারফরম্যান্স দিয়েই নিজেকে আলাদা করে ফেলেছেন। ৭ ম্যাচে ৩ ফিফটিতে ২৫৩ রান। ইয়াসিরের যে ব্যাপারটি সবার চোখে পড়ছে, সেটি হচ্ছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজটা দারুণ বোঝেন। কিন্তু সে হিসেবে ধুমধাড়াক্কা ব্যাপারটা নেই তাঁর ব্যাটিংয়ে। বরং ব্যাকরণ মেনেই যতটা আগ্রাসী হওয়া যায়, তিনি সেটি হন। এবারের বিপিএল থেকে আগামীর বাংলাদেশের জন্য পাওয়া এই ইয়াসির।

ইয়াসিরের পারফরম্যান্স নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত চিটাগাং ভাইকিংস আর বাংলাদেশ হাই পারফরম্যান্স কোচ সাইমন হেলমট। তিনি আজ জানিয়েছেন ইয়াসিরের গড়ে ওঠার গল্পটা, ‌‘একাডেমিতে আমি ইয়াসিরকে যখন প্রথম দেখি, সে বেশ তরুণ। সে যথেষ্ট প্রতিভা নিয়েই এসেছিল। কিন্তু ফিটনেসে কিছুটা উন্নতি করার দরকার ছিল। ফিল্ডিংয়েও কিছুটা পিছিয়ে ছিল। সে সব করেছে। ফিটনেস ও ফিল্ডিংয়ের মান বাড়িয়েছে। এখন দেখুন সে তাঁর ব্যাটিংটাকে অন্য একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সে যখন ব্যাটিং করতে যায়, এসবই তাঁকে আত্মবিশ্বাস এনে দেয়।’

টি-টোয়েন্টিতে ইয়াসিরের বিভিন্ন ধরনের শট খেলার সামর্থ্য হেলমটকে আনন্দিত করছে সবচেয়ে বেশি, ‘সে টি-টোয়েন্টিতে ক্রিকেটীয় শটই খেলে। সে ড্রাইভ করে, কাট, পুল সবই করে। সে আবার জোরে পাওয়ার হিটও করতে পারে। মিড উইকেটের ওপর দিয়ে মারে, মারে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে ইয়াসির দারুণ সম্ভাবনাময়। আমরা তাঁকে নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত।’

কেবল ইয়াসির নন। বিসিবির হাই পারফরম্যান্স কোচ হিসেবে হেলমট খুশি অন্য তরুণদের নিয়েও। বিশেষ করে বলেছেন সিলেট সিক্সার্সের আফিফ হোসেন, চিটাগংয়ের আবু জায়েদ ও খালেদ আহমেদের কথা। টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হিসেবে বিপিএল নিয়েও দারুণ আশাবাদী অস্ট্রেলীয় টি-টোয়েন্টি দলের সাবেক এই সহকারী কোচ, ‘বিপিএলের এটাই সবচেয়ে দারুণ দিক। এই টুর্নামেন্ট থেকেই প্রতিভা উঠে আসে। আমরা বেশ কয়েকজনকেই দেখছি, যারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারে। এ দিকটা থেকে চোখ সরিয়ে ফেলার কোনো উপায় নেই। টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হিসেবে বিপিএল দারুণ। এখানে দারুণ প্রতিযোগিতা হয়। দারুণ দারুণ সব বিদেশি ক্রিকেটার খেলতে আসেন। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের খেলোয়াড়দেরও আমরা দেখি। তারাও দারুণ। এই টুর্নামেন্টে আমরা খেলোয়াড়দের উন্নতি ভালোভাবেই লক্ষ করছি।’

আফিফকে নিয়ে হেলমটের মন্তব্য, ‘সিলেটের আফিফ উন্নতির দিকে হাঁটতে শুরু করেছে। এটা করে যেতে হবে। তাঁর এখন নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আফিফ, ইয়াসির ছাড়াও বিপিএলে বেশ কিছু তরুণ বোলার চোখে পড়েছে। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়াতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিপিএল দিয়ে আমরা বুঝতে পারি জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করতে আমাদের হাতে কী ধরনের প্রতিভা আছে।’