'২০১৫ বিশ্বকাপে আমরা বাংলাদেশের কাছে হেরেছিলাম...'

ইংল্যান্ড ওয়ানডে দলের বড় ভরসা হেলস খেলছেন রংপুরের হয়ে। ছবি: প্রথম আলো
ইংল্যান্ড ওয়ানডে দলের বড় ভরসা হেলস খেলছেন রংপুরের হয়ে। ছবি: প্রথম আলো
>ক্রিকেটের আবিষ্কর্তারা কখনো বিশ্বকাপ জেতেনি। টি-টোয়েন্টির বিশ্ব শিরোপা আছে বটে, কিন্তু তা দিয়ে তো আর বড় ট্রফিটার ক্ষুধা মেটে না। ফর্ম আর স্বাগতিক হওয়ার সুবাদে ইংল্যান্ড এবার অন্যতম দাবিদার। অ্যালেক্স হেলস জানালেন, দলের পরিবর্তনের শুরুটা হয়েছি গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার পর

প্রশ্ন: শুরুটা ভালো না হলেও এখন ফর্ম ফিরে পেয়েছেন। শেষ ম্যাচে সেঞ্চুরিও করলেন। বিপিএলটা নিশ্চয়ই উপভোগ করতে শুরু করেছেন...

অ্যালেক্স হেলস: হ্যাঁ, বেশ উপভোগ করছি এখন। আসলে চ্যাম্পিয়ন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে থাকাটা সব সময়ই দারুণ কিছু। দলে ভালো কিছু স্থানীয় ক্রিকেটার আছে, বিদেশিরাও বেশ ভালো। ব্যাটিংয়ে আমাদের রাইলি রুশোই সবার চেয়ে এগিয়ে। এ রকম ফ্র্যাঞ্চাইজির অংশ হতে পারাটাও অসাধারণ।
প্রশ্ন: বিপিএলে বিদেশিদের জন্য কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা থাকেই। ইংলিশ ব্যাটসম্যান বলে আপনার জন্য সেটি আরও কঠিন। কীভাবে করলেন কাজটা?
হেলস: ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে আসলেই কাজটা চ্যালেঞ্জিং। তবে আমার মনে হয় কন্ডিশন যে রকমই হোক, সেটা উপভোগ করা উচিত। আমার শুরুটা ভালো হয়নি। দু-একটা ম্যাচে তো ডাকও মারলাম। তবে আমি জানতাম বাংলাদেশে এটা হতে পারে। চেষ্টা করেছি ইতিবাচক থাকতে এবং এখন পর্যন্ত তা ভালোই কাজে দিচ্ছে।
প্রশ্ন: ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ মাঠেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন। এবার বিপিএলেও চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ১০০ করলেন। এটাকে নিশ্চয়ই এখন সৌভাগ্যের মাঠ বলবেন?
হেলস: হ্যাঁ, আমার খুব ভালো ভালো স্মৃতি তৈরি হয়ে গেল এখানে। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব ম্যাচই আমরা এখানে খেলেছিলাম। বিপিএলে এসেও অপেক্ষায় ছিলাম কখন চট্টগ্রামে আসব। এই উইকেটে, বিশেষ করে ফ্লাডলাইটে এখানে ব্যাটিং করাটা সব সময়ই আনন্দের। আশা করি, সামনের দুটি ম্যাচেও ভালো করব।
প্রশ্ন: বিপিএলের কোন জিনিসটা আপনাকে বেশি আকৃষ্ট করেছে?
হেলস: খেলার মান, মানটাই আগে। এখানকার খেলার মান আমাকে আসলেই মুগ্ধ করেছে। স্থানীয় ক্রিকেটাররা অসাধারণ, সঙ্গে বড় বড় বিদেশি ক্রিকেটারও আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তো প্রায় সবাইকেই দেখছি! তারা সবাই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে পড়ে। আমার জন্য নতুন মানুষের সঙ্গে মেশা এবং ক্রিকেটে নতুন বন্ধু খুঁজে নেওয়ার একটা জায়গা হয়ে গেল এটা।
প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টির পর তো টি-টেনেরও যুগ এসে যাচ্ছে। কোনটা বেশি ভালো লাগে?
হেলস: (হাসি) টি-টেন। এখানে সময় খুবই কম। প্রথম বল থেকেই মারতে হয়। এখন পর্যন্ত এটাই বেশি মজার মনে হচ্ছে। এটা নতুন একটা ধারণা হলেও আমি টি-টেন উপভোগ করি। খেলাটার ভবিষ্যৎ আছে।
প্রশ্ন: আর ১০০ বলের খেলা?
হেলস: হ্যাঁ, এটাও নতুন। তবে ১০০ বলের খেলা সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা নেই আমার। আমি এখন পর্যন্ত কোনো ট্রায়াল ম্যাচও খেলিনি, এটা সম্পর্কে খুব ভালো জানিও না। তবে যতটুকু শুনেছি, তাতে মনে হয় এটা খেলতে খারাপ হবে না। নতুন এই খেলাটা খেলার অপেক্ষায় আছি আমি।
প্রশ্ন: এবার ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলবেন। ইংল্যান্ডের কতটা সম্ভাবনা দেখছেন?
হেলস: চাপটা আমাদের ওপরই বেশি। কারণ গত বিশ্বকাপের পরের তিন বছরে আমরা যা করেছি, তা অসাধারণ। ২০১৫ বিশ্বকাপে আমরা বাংলাদেশের কাছে হেরেছিলাম। সেটা ধরলে পরিবর্তনটা দারুণ এবং এর সঙ্গী হতে পারাটা আমার জন্য চমৎকার কিছু। খুব ভালো কিছু খেলোয়াড় আছে দলে। জেসন রয়ের কথা বলতেই হয়, সে-ও এই টুর্নামেন্টে খেলছে। জস বাটলার আছে, গত বছর সেও বিপিএলে ছিল। ভালো খেলতে পারলে আমাদের ভালো সুযোগ থাকবে।
প্রশ্ন: লাল বলের ক্রিকেট থেকে দূরে সরে থেকে কোনো লাভ হয়েছে আপনার? এই সিদ্ধান্ত কতটা কঠিন ছিল?
হেলস: খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে লাল বলে খেলাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফরম্যাটটা সেখানে অনেক বড়। এ বছরই বিশ্বকাপ হবে। এ ছাড়া শীত ও গ্রীষ্মে যে পরিমাণ ক্রিকেট আমরা খেলি, মনে হচ্ছিল কিছু ছেড়ে দিয়ে আমার খেলায় ভালো একটা ভারসাম্য আনা উচিত। তাতে হয়তো সাদা বলের খেলায় আরও উন্নতি করতে পারব। তবে আবার আমি টেস্ট খেলব। বিশ্বকাপের পরই হয়তো দেখবেন আমি আবার লাল বলে খেলছি। খেলাটা অনেক বেড়ে গেছে বলেই ওই সিদ্ধান্ত। আমি শুধু নিশ্চিত করতে চেয়েছি, বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকার জন্য নিজের সেরাটা যেন দিতে পারি। এটা সাদা বলের ক্রিকেটে আমাকে আরও বেশি মনোযোগী করেছে।
প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে কী বলবেন? আপনার কি মনে হয়, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আরও উন্নতির জায়গা আছে?
হেলস: এখন পর্যন্ত আমার তো ভালোই লেগেছে। আমার মনে হয় বেশ কিছু তরুণ ব্যাটসম্যান একসঙ্গে সামনে এগিয়ে আসছে। এখানে ব্যাটিং করা এমনিতেই একটু কঠিন। কাজেই মাঝেমধ্যে এখানে লো স্কোরিং ম্যাচ হবে, সবাইকেই তা মানতে হবে। আবারও বলি, ব্যাটিংয়ের জন্য বাংলাদেশের উইকেট কখনো কখনো কঠিন মনে হতেই পারে। তারপরও ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল।