ক্লাসিকো একাদশে মেসির সঙ্গী কারা?

এল ক্লাসিকোর সম্মিলিত দলে থাকবেন কারা?
এল ক্লাসিকোর সম্মিলিত দলে থাকবেন কারা?

মৌসুমের দ্বিতীয় এল ক্লাসিকো আজ। বাংলাদেশ সময় রাত দুইটায় কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ন্যু ক্যাম্পে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হচ্ছে বার্সেলোনা। এমন এক ম্যাচের আগে কোন দল কেমন একাদশ বানাবে সে আলোচনা চলছে। আবার এমন ম্যাচের আগে কোন দল বেশি বিশ্রাম পেল, সে নিয়ে বিতর্কও চলছে। এমন উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচের আগে আরেকটু বিতর্কের জন্ম দেওয়া যেতেই পারে। বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের দুই দল মিলিয়ে একাদশ বানালে সেখানে কারা থাকবেন?

এত দিন এমন আলোচনায় দুটো নাম মুখস্থ লিখে দেওয়া যেত। লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ফর্মে থাকুন বা না থাকুন (যদিও তেমন খুব কমই দেখা গেছে), দলের অবস্থা যেমনই হোক, ক্লাসিকোর সম্মিলিত একাদশে এ দুজনের জায়গা পাকা ছিল। কিন্তু এবার জুভেন্টাসে চলে গিয়ে একটি স্থান ফাঁকা করে গেছেন রোনালদো। আর বর্তমানে দুই দলের খেলোয়াড়দের ফর্মেও বেশ উঠানামা দেখা যাচ্ছে। দুই দলই ৪-৩-৩ ফরমেশন নিয়ে মাঠে নামতে পছন্দ করায় একাদশ সে অনুযায়ীই বানানো হয়েছে। ফর্ম অনুযায়ী দুই দলের সম্মিলিত একাদশ যেমন হতে পারে

গোলরক্ষক
মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন (বার্সেলোনা)
ক্যাসপার চিলেসেন চোটে না পড়লে গোলরক্ষক পজিশন নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হতো। কোপা দেল রেতে বার্সা চিলেসেনকেই নামায়। তখন রিয়ালের কেইলর নাভাস নাকি চিলেসেন, এই প্রশ্ন জাগত। কিন্তু এই চিলেসেন চোট পাওয়ায় আজ মাঠে নামবেন টের স্টেগেন। অবিশ্বাস্য ফর্মে থাকা এই গোলরক্ষক তাই স্বাভাবিকভাবেই সম্মিলিত একাদশে জায়গা পাচ্ছেন।

রক্ষণ
দানি কারভাহাল (রিয়াল মাদ্রিদ)
বার্সেলোনা কোচ এখন তাঁর রাইটব্যাক নিয়ে সন্তুষ্ট নন। নেলসন সেমেদোর বদলে মিডফিল্ডার সার্জি রবার্তোকেই বেশি পছন্দ তাঁর। গত মৌসুমে দুর্দান্ত পারফর্ম করে আস্থার জবাব দিয়েছিলেন রবার্তো। কিন্তু এ মৌসুমে সে পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারেননি। সে তুলনায় চোটভুক্ত দানি কারভাহাল রক্ষণ ও আক্রমণে রিয়ালের বড় ভরসার নাম।

সার্জিও রামোস (রিয়াল মাদ্রিদ)
মৌসুমের শুরুতে বাজে ফর্ম কাটিয়ে উঠেছেন সার্জিও রামোস। গত কয়েক ম্যাচে রিয়ালের জয়রথের পেছনে রামোসের দুর্দান্ত ডিফেন্সিভ কাজের ভূমিকাই বেশি। আর ডেড বল (ফ্রি কিক, কর্নার) সিচুয়েশনে রামোসের হেড তো বহুদিন ধরেই রিয়ালের আক্রমণের অংশ।

জেরার্ড পিকে (বার্সেলোনা)
বার্সেলোনা এ মৌসুমের বেশ বড় একটা সময় স্যামুয়েল উমতিতিকে পাচ্ছে না। গত মৌসুমের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে হারিয়েও যে ক্লাব নিয়মিত বাধা উতরে আসছে, রক্ষণে খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না তার কারণ জেরার্ড পিকে।

জর্ডি আলবা (বার্সেলোনা)
গত কয়েক বছর ধরেই উয়েফা কিংবা ফিফার সেরা লেফট ব্যাক পজিশনটা নিজের করে নিয়েছেন মার্সেলো। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের এই ব্রাজিলিয়ান ফুলব্যাক এ মৌসুমে ফর্ম হারিয়ে ফেলেছেন। চোট ও বন্ধু রোনালদোর অনুপস্থিতি মিলিয়ে নিজের ছায়া হয়ে আছেন মার্সেলো। গত এক মাসে তো তাঁর চেয়ে একাডেমির রেগুলিনকেই বেছে নিয়েছেন রিয়াল কোচ সোলারি। তাই রক্ষণের বাঁ দিকে ঢুকে পড়েছেন বার্সার হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা জর্ডি আলবা।

মধ্যমাঠ
লুকা মদরিচ (রিয়াল মাদ্রিদ)
বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় ও বর্তমান ব্যালন ডি’অর জয়ী মৌসুমের শুরুতে খুব বাজে সময় কাটিয়েছেন। অবশেষে ফর্ম ফিরে পেয়েছেন মদরিচ, এতেই যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে রিয়াল। ২০১৯ সালে নতুন রিয়াল মাদ্রিদের দেখা মিলছে, এর পেছনে মদরিচই মূল ভূমিকা রাখছেন।

সার্জিও বুসকেটস (বার্সেলোনা)
মধ্যমাঠের এ পজিশনে ভালো কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী আছে। রিয়ালের হয়ে কাসেমিরো এবং বার্সেলোনার হয়ে আর্তুর খুব ভালো খেলছেন। কিন্তু বুসকেটসকে একাদশ থেকে ছিটকে ফেলার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

ইভান রাকিতিচ (বার্সেলোনা)
এখানে টনি ক্রুস আসতে পারতেন। কিন্তু চোটের কারণে বেশ অনেক দিন মাঠের বাইরে ছিলেন ক্রুস। এল ক্লাসিকোতে মাঠে নামলেও তাঁর পারফরম্যান্স কেমন হবে, একটু কৌতূহল থাকছেই। সে তুলনায় বার্সেলোনার মধ্যমাঠ নিয়ন্ত্রণ করা রাকিতিচকে বেছে নেওয়া বেশি যুক্তিযুক্ত।

আক্রমণ
লিওনেল মেসি (বার্সেলোনা)
এল ক্লাসিকোর একাদশে তাঁর জায়গা পাকা। এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল যে তাঁর। এবার আছেনও দুর্দান্ত ফর্মে। ২৭ ম্যাচেই ২৯ গোল তাঁর। সতীর্থদের দিয়ে ১৭টি গোল বানিয়ে দিয়েছেন।

লুইস সুয়ারেজ (বার্সেলোনা)
এবার আগের ধার দেখা যাচ্ছে না তাঁর মাঝে। তবু ২৯ ম্যাচে ১৬ গোল তাঁর। আর মেসির সঙ্গে তাঁর রসায়ন সব সময়ের মতোই ভয়ংকর আছে এবারও।

করিম বেনজেমা (রিয়াল মাদ্রিদ)
রোনালদোর বিদায়ের পর রিয়ালের গোল করার মূল দায়িত্বটা নেওয়ার কথা ছিল গ্যারেথ বেলের। কিন্তু রোনালদোর আড়ালে থেকে গত ৫ মৌসুম কাটানো বেল এবারও নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। চোট ও ফর্মহীনতা তাঁকে ভোগাচ্ছে। সেদিন থেকে ২০১৯ সালে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন বেনজেমা। কোপা দেল রেতে ৪ গোলসহ মৌসুমে ১৮ গোল তাঁর।