সালাকে পাওয়া গেছে, জানে নালা?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নালার এ ছবি সবার হৃদয় ভেঙে দিচ্ছে। সংগৃহীত ছবি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নালার এ ছবি সবার হৃদয় ভেঙে দিচ্ছে। সংগৃহীত ছবি

দুই সপ্তাহের অপেক্ষা শেষ হয়েছে। অপেক্ষার ফলটা মধুর হয়নি। দুই সপ্তাহ উদ্ধারকাজ চালানোর পর ইংলিশ চ্যানেলের তলদেশে মিলেছিল এমিলিয়ানো সালাকে বহনকারী সেই উড়োজাহাজের অস্তিত্ব। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা গেছে, প্রাপ্ত দেহটি নিশ্চিতভাবেই এমিলিয়ানো সালার। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের হদিস মেলায় ভেঙে গেছে একটি রূপকথার স্বপ্নও। নালার প্রিয় বন্ধুকে ফিরে পাওয়ার আশাও শেষ হয়ে গেছে সে সঙ্গে।

রূপকথার স্বপ্নটা সালাকে ঘিরেই। উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ইংলিশ চ্যানেলের ওপরে হওয়ায়, দুই সপ্তাহ পর কারও বেঁচে ফেরার আশা করাটা বোকামি ছিল। কর্তৃপক্ষ তাই উদ্ধার অভিযান চার দিন পরই থামিয়ে দিয়েছিল। তবু সালার পরিবার ও তাঁর বোন রোমিনার আকুল আহ্বানে সারা দিয়েছে সাধারণ মানুষ ও ফুটবলাররা। সবার অর্থায়নে চলেছে সালা ও পাইলট ডেভিড ইবোটনসনকে উদ্ধারের চেষ্টা। দুজনের পরিবারই অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বীকার করে নিয়েছিল, এ উদ্ধার অভিযান জীবিত কোনো মানুষের জন্য নয়। বরং মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার, প্রিয়জনকে আরেকবার দেখে কিছুটা সান্ত্বনা খুঁজে নেওয়ার।

তবু মানুষ স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করে, ভালোবাসার টানে অবুঝ কল্পনা করে নিতে চায়। নালার জন্য তো আরও বেশি। ফরাসি ক্লাব নঁতে খেলার সময় থেকেই সালার সঙ্গী নালা। এই পোষা কুকুরের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করে তবেই কার্ডিফ সিটির সঙ্গে চুক্তি করতে গিয়েছিলেন সালা। ফিরে এসে নালাকে কার্ডিফে নেওয়ার বন্দোবস্ত করে আবার ওয়েলসে ফিরছিলেন সালা। ২১ জানুয়ারি সেই যাত্রাটাই তাঁর অন্তিম যাত্রা হলো।

কিন্তু নালা তো এখনো সেটা জানে না। প্রিয় বন্ধুকে দেখার আশায় সে এখনো অপেক্ষায়। টানা দুই সপ্তাহ সালার দেখা পায়নি, এমন অভিজ্ঞতা যে তার কখনো হয়নি। সালার বোন রোমিনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নালার একটি ছবি দিয়েছেন, খোলা দরজা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে নালা। মনিব আসবেন, সে অপেক্ষাতে নালা অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আজ নিশ্চিতভাবেই জানা গেছে, নালার এ অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না। কোনো রূপকথা লেখা হচ্ছে না।

নালা তাঁর বন্ধুর দেখা আর পাবে না। রোমিনা তাই দ্বিতীয় সেরা কাজটিই করছেন, নালাকে নিজের করে নিচ্ছেন। টুইটারে সালা ও নালার ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘নালা, তোমার বিশ্বস্ত বন্ধু এখন আমাদের। আমরা কখনো তাকে দত্তক দেওয়ার কথা ভাবিনি। এ নিয়ে যারা চিন্তা করছেন, তাদের নিশ্চিতভাবেই জানাচ্ছি সেটা।’