এভাবেই ব্যাট করতে হবে, বোঝালেন সাদমান

সাদমান ইসলাম। ফাইল ছবি
সাদমান ইসলাম। ফাইল ছবি
>

চার ব্যাটসম্যান পেয়েছেন ফিফটির দেখা, চারজন আউট না হয়ে গিয়েছেন স্বেচ্ছা–অবসরে আর চার শর বেশি রান এসেছে এক দিনেই (৪১১/৬)। নিউজিল্যান্ডে প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনে এমন আশাব্যঞ্জক ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। দলের ওপেনার সাদমান ইসলাম জানালেন তাঁর ফিফটি তুলে নেওয়ার রহস্য

বয়স পঁচিশের নিচে। নামের পাশে মাত্র এক টেস্ট। কিন্তু অনেকের কাছে নিজের জাত চেনাতে একটা টেস্ট কিংবা একটা ইনিংসই যথেষ্ট। গত নভেম্বরে মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯৯ বলের সেই ইনিংস (৭৬) দিয়েই সাদমান ইসলাম বুঝিয়ে দেন, টেস্ট আঙিনায় তিনি থাকতেই এসেছেন। আর সাদমানের এই প্রতিজ্ঞায় প্রথম বড় পরীক্ষা হলো নিউজিল্যান্ড সফর। বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যান যেখানে ঘোল খেয়ে যান, সেই নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে সাদমানের শুরুটা কিন্তু বেশ আশাব্যঞ্জক। হোক না প্রস্তুতি ম্যাচ, এমন কঠিন কন্ডিশনে প্রথম পরীক্ষাতেই ৬৭ নম্বর (পড়ুন রান) পাওয়া খেলো ব্যাপার নয়। ফার্স্ট ডিভিশনে পাস!

ওয়ানডে সিরিজে রান পাননি বেশির ভাগ ব্যাটসম্যান। খেদটা বোধ হয় তামিম-লিটনদের মনে ছিল। বার্ট সাটক্লিফে আজ প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনেই সেই খেদ মেটানোর চেষ্টা করেছেন ব্যাটসম্যানেরা। এই সুবাদে চার ব্যাটসম্যান পেয়েছেন ফিফটির দেখা, চারজন আউট না হয়ে গিয়েছেন স্বেচ্ছা–অবসরে আর চার শর বেশি রান এসেছে এক দিনেই (৪১১/৬)। চারে চার মিলিয়ে প্রথম দিনটা তাহলে মন্দ কাটেনি? সাদমান জানালেন এমন দিন কাটানোর রহস্য।

ফিফটির মুখ দেখেছেন সাদমান, লিটন, মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ। ৪১ রান করা সৌম্য সরকার ছাড়াও স্বেচ্ছা অবসরে গিয়েছেন লিটন, মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ। দিনের খেলা শেষে সাদমান জানালেন, অচেনা কন্ডিশনে ব্যাটিং করে আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের উইকেট কেমন, সে সমন্ধেও ধারণা পেয়েছেন। বাংলাদেশের এই ওপেনার বলেন, ‘আজ ব্যাটিংয়ে ভালো আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। কীভাবে খেলতে হবে, সেটাও একটু জানছি। উইকেটটা কেমন হতে পারে, ওটাও একটু ধারণা হয়েছে। আজ আমাদের দলের সবাই ভালো ব্যাটিং করেছে।’

কিউই পেসার অ্যাডাম মিলনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিচিত মুখ। তিনি ছাড়াও এড নাটাল, বেন শিয়ার্স ও ডেল ফিলিপসের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটে পরীক্ষিত পেসারদের নিয়ে একাদশ সাজিয়েছিল কিউইরা। সাধারণ মানের পেসারদের বিপক্ষে হয়তো বাংলাদেশ ভালো ব্যাটিং করছে—এমন ধারণা পোষণকারীদের ভুল ভাঙাতেই সাদমান বললেন, ‘ওদের পেস বোলার, যাদের মুখোমুখি হয়েছিল ভালো বোলিংই করে। কুইক (গতিময়) বোলারদের বিপক্ষেই আমরা আজ রান করেছি। চেষ্টা থাকবে আজ আমরা যেমন ব্যাটিং করেছি, টেস্টেও তেমন করার। আর আজকে সবাই নিজেকে উজাড় করে দিয়ে ব্যাট করছে। আশা করছি, টেস্টেও সবাই তা ধরে রাখবে।’

নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে ভারী বাতাসের সঙ্গে ক্রিকেটারদের লড়াইয়ের ব্যাপারটি নতুন কিছু নয়। বোলিংয়ের সময় বাতাসে বল এদিক-ওদিক হয় কিংবা প্রত্যাশিত জায়গায় বল ফেলা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যাটিংয়েও সুইং সামলানোর ক্ষেত্রে বেশ অসুবিধা হয়। সাদমানের জন্য এই অভিজ্ঞতা নতুন হলেও টিম ম্যানেজমেন্টের টোটকা মেনেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। আট দিন আগে নিউজিল্যান্ডে পা রাখার সুফলটা তিনি পেয়েছেন আজকের প্রস্তুতি ম্যাচে। আগে গিয়ে কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছেন ভালোভাবেই।

২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনেও অনেক বাতাস ছিল। বলা হয়েছে, ওয়েলিংটন ও হ্যামিল্টনে খেলতে হলে এ রকম বাতাসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। আমি তো আট দিন আগে এসেছি, অনুশীলনে সব সময়ই এমন বাতাস ছিল। কোচ নিল ম্যাকেঞ্জিও বলেছেন, এমন বাতাসে বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। চেষ্টা করবে একটু দেরি করে খেলতে। বল যে রকমই আসুক, শরীরে নিয়ে খেলতে। আমি এসব মেনেই চেষ্টা করেছি। দেরি করে খেলেছি। বল কেমন হয়, সেটি শেষ পর্যন্ত দেখার চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয়েছে, আগে আসার (নিউজিল্যান্ডে) জন্য হয়তো আজ আমি একটু মানিয়ে নিতে পেরেছি।’

বৃহস্পতিবার হ্যামিল্টনে শুরু হবে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট।