মোস্তাফিজকে না খেলানোর ব্যাখ্যা দিলেন কোচ

>

হ্যামিল্টন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। দলে মোস্তাফিজুর রহমানের না থাকার ব্যাখ্যা দিলেন হেড কোচ স্টিভ রোডস

আবু জায়েদ, খালেদ আহমেদ ও ইবাদত হোসেন। নামগুলো সাজানো হয়েছে টেস্ট ম্যাচের অভিজ্ঞতা বিচারে। জায়েদ খেলেছেন ৩ ম্যাচ, খালেদ ১ ম্যাচ আর ইবাদত টেস্ট আঙিনায় অভিষিক্ত হলেন এই ম্যাচ দিয়ে। অর্থাৎ, হ্যামিল্টন টেস্টে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ দলের তিন পেসারের ঝুলিতে মাত্র ৪ টেস্টের অভিজ্ঞতা। কাল টেস্টের প্রথম দিন এবং আজ দ্বিতীয় দিন মিলিয়ে ৪ উইকেটে ৪৫১ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে তিন পেসার মিলে ২২৬ রান দিলেও কেউ কোনো উইকেট পাননি। স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্নটি ওঠে, মোস্তাফিজুর রহমান দলে নেই কেন?

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের হেড কোচ স্টিভ রোডস। ছবি: বিসিবি
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের হেড কোচ স্টিভ রোডস। ছবি: বিসিবি

মোস্তাফিজ দলের সঙ্গে থাকলেও একাদশে নেই। প্রথম টেস্টে তাঁকে খেলায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ আগেই বলেছেন, মোস্তাফিজের টানা ৩ টেস্ট খেলা কঠিন! কেন কঠিন? কারণ ‘ওয়ার্ক লোড’— ওয়ালশ মোস্তাফিজের ক্ষেত্রে সেটি যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখার পক্ষে। বারবার চোটে পড়ায় বাঁ হাতি পেসারকে নিয়ে সতর্কভাবে এগোতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু যে দলের বোলিং কোচ ওয়ালশের মতো কিংবদন্তি, খেলোয়াড়ি জীবনে যিনি ক্লান্তিহীনভাবে ওভারের পর ওভার বল করে গেছেন—তাঁর শিষ্যের এই অবস্থা কেন?

দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটি উঠেছে। হেড কোচ স্টিভ রোডস আগে এই টেস্টে মোস্তাফিজকে না খেলানোর ব্যাখ্যায় টেনে আনলেন সেই ওয়ালশের কথাই, ‘ব্যাক টু ব্যাক টেস্ট খেলা তাঁর জন্য কঠিন। টেস্ট ম্যাচে তাঁকে মানসিকভাবে চাঙা রাখতে হয়। পরের ম্যাচে তাঁর ফেরার সব সুযোগই আছে।’ টানা দুই টেস্ট খেলা যেহেতু মোস্তাফিজের জন্য কঠিন, তাহলে হ্যামিল্টনে এই ম্যাচ খেলিয়ে ওয়েলিংটনে পরের টেস্টে বিশ্রাম দিলেই হতো?

রোডস এই প্রশ্নের জবাবে ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যাই দিলেন। তাঁর যুক্তি, ‘ওয়েলিংটনে প্রচুর বাতাসের মুখোমুখি হতে হবে। সে কারণে ওখানে তাঁকে খেলাতে চেয়েছি। বাতাসে সে আমাদের সেরা বোলার। ওয়েলিংটনে তাঁর অনেক দায়িত্ব বলেই এ ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে।’

নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ দলের যে বোলিং বিভাগ, সেখানে পেসারদের মধ্যে মোস্তাফিজই সবচেয়ে অভিজ্ঞ। অনেকের মতেই, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশি পেস আক্রমণের পতাকা বহন করবেন মোস্তাফিজ। অথচ এমন বোলার যদি টানা দুই টেস্ট খেলতে না পারেন, আরও আশ্চর্যের ব্যাপার, তাঁর কোচ ক্রিকেট ইতিহাসেরই কিংবদন্তি পেসারদের একজন—ওয়ালশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ শেষে ওয়ালশ একাই পেস অ্যাটাকের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন বহুবার। ক্লান্তিহীন বল করে গেছেন ওভারের পর ওভার। সেই ওয়ালশের শিষ্যত্ব নেওয়া মোস্তাফিজের এই অবস্থা কেন?

রোডস এবারও ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যাই দিলেন, ‘কোর্টনি এমন বোলার ছন্দ, গতি ও লাইন-লেংথ পেতে যাকে অনেক বল করতে হতো। কিন্তু এমন বোলার আছে যাদের চাঙা থাকতে হয়, মোস্তাফিজ তাঁদের একজন।’