ইবাদতদের জন্য সময় চান ওয়ালশ

অভিষেক টেস্টে পেসারদের মধ্যে একমাত্র ইবাদত উইকেট পেয়েছেন। ফাইল ছবি
অভিষেক টেস্টে পেসারদের মধ্যে একমাত্র ইবাদত উইকেট পেয়েছেন। ফাইল ছবি
>হ্যামিল্টন টেস্টে ব্যর্থ বাংলাদেশি পেসারদের জন্য সময় চান বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই। থাকলেও হয়তো অনেকেই সেটি নিতে চাইবেন না। নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার ইচ্ছা থাকলে তো অবশ্যই নয়। তবে হ্যামিল্টন টেস্টে যা হয়েছে, সেটি ভুলে যাওয়ার মতো এক ম্যাচই। বাংলাদেশের বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দিয়ে ওভার প্রতি চারের ওপর রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। বোলিং লাইন আপের ব্যর্থতায় ৭১৫ রানে চাপা পড়েছে বাংলাদেশ।

সিরিজের প্রথম টেস্টের এমন ব্যর্থতা বোলিং লাইনআপ নিয়ে তাই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বিশেষ করে আবু জায়েদ, খালেদ আহমেদ ও অভিষিক্ত ইবাদতের মতো তিন অনভিজ্ঞ পেসার নিয়ে আক্রমণ সাজানোটা দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এ টেস্টের আগে আবু জায়েদ শুধু ৩ টেস্ট খেলেছিলেন। খালেদের ঝুলিতেও ছিল মাত্র ১ টেস্টের অভিজ্ঞতা। এমন অনভিজ্ঞ তিন পেসার মিলে ৩৫৯ রান দিয়েছেন প্রথম টেস্টে। বিনিময়ে এসেছে মাত্র এক উইকেট সেটিও সবচেয়ে অনভিজ্ঞ ইবাদতের বলে। বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ তবু এখনো আশা হারাচ্ছেন না। তরুণ প্রতিভাতে বিনিয়োগ করাটাই গুরুত্ব পাচ্ছে তাঁর কাছে।

হ্যামিল্টন টেস্টে ব্যর্থতার জন্য বোলারদের অনভিজ্ঞতার দায় স্বীকার করেছেন কোচ। কিন্তু এটাও বলছেন এই বোলিং লাইনআপকে আরও সুযোগ দিতে হবে। কারণ এক ম্যাচ খেলার পরই যদি দল থেকে বাদ দেওয়া হয় তবে ভুল থেকে শেখার সুযোগ হারাবেন ইবাদত-খালেদরা, ‘একজনকে টানা খেলার সুযোগ দিতে হবে। এরপরও যদি সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয় তবে পরিবর্তন আনতে হবে। যদি এক টেস্টে, এক ম্যাচ এভাবে খেলা হয় তবে শেখার সুযোগই পাবে না। উন্নতি করার সুযোগ পাবে না। সুযোগ দিতে চাইলে এক বা দুই টেস্ট ম্যাচ যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশে যখন খেলি, তখন উইকেট অনেক বেশি স্পিন বান্ধব থাকে। সফরেই টানা খেলার সুযোগ আসে। গত সফরে(নিউজিল্যান্ড) সব নতুন বোলার ছিল, এবারও তাই, দক্ষিণ আফ্রিকাতেও তাই ছিল। এটা ধারাবাহিকতার প্রশ্ন, আমাদের তিন চারজন বোলার বেছে নিতে হবে যারা দেশের বাইরে ভালো করার ক্ষমতা রাখে এবং তাদের যত্ন নিতে হবে।’

যত্ন নেওয়ার প্রসঙ্গ এলেই ইবাদত প্রসঙ্গটা এসে পড়ে। এ সপ্তাহেই আন্তর্জাতিক অভিষেক হলেও এই পেসারকে গড়ে তোলার প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ। বহুদিন ধরে তাঁকে প্রস্তুত করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য। ইবাদতের ওপর রাখা আস্থার প্রতিদান কিছুটা হলেও পাচ্ছে বাংলাদেশ। ওয়ালশের আশা এভাবে তরুণদের ওপর দায়িত্ব দিলে তাঁরা অবশ্যই ভালো করবে। সে কারণেই প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ড ৭১৫ রান তোলার পরও সিরিজে মোস্তাফিজসহ বাকি তিন পেসারের ওপর ভরসা রাখছেন ওয়ালশ, ‘ওদের বেশ কিছু টেস্ট ম্যাচ খেলতে হবে। ওদের ওপর যদি বিনিয়োগ করতে চান, সঠিক কন্ডিশনে খেলাতে হবে, ওদেরও উন্নতি করতে হবে। আমি ওদের আরও কয়েকটি ম্যাচ খেলানোর পক্ষে। পাঁচ বা দশটি ম্যাচ। একা একা নয়, একটা গ্রুপ হিসেবে। আমরা চাইলে অদলবদল করেও এক সঙ্গে কিছু ম্যাচ খেলাতে পারি। ওদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া, ভালো অনুভূতি যেন জন্ম নিতে পারে। বিশেষ করে দেশ থেকে এত দূরে। ঘরের মাঠে মাঝে মাঝে খেলতে হয়, কখনো হয় না। কিন্তু বাইরে খেলতে হয়। আমাদের খেলোয়াড়দের ওপর বাজি ধরতে হবে। দুই বছর আগে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এসেছিল (ইবাদত), সে বিনিয়োগ ফল এনে দিয়েছে। সে এবার টেস্টে অভিষিক্ত হয়েছে। এটা একটা ভালো ইঙ্গিত। এটা যদি চালু রাখা যায়, কিছু ম্যাচ খেলে এ উন্নতি ধরে রাখা যায়।’