এবার বিসিবি একটা হাততালি পেতেই পারে

ডিপিএল টি-টোয়েন্টির শিরোপা জিতেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি। ছবি: প্রথম আলো
ডিপিএল টি-টোয়েন্টির শিরোপা জিতেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি। ছবি: প্রথম আলো
>ডিপিএল টি-টোয়েন্টি আয়োজন করে বেশ প্রশংসিত হচ্ছে বিসিবি। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান কাল জানিয়েছেন, নিয়মিত আয়োজন করা হবে এ ধরনের টুর্নামেন্ট

এমন একটা টুর্নামেন্টের প্রয়োজনীয়তা অনেক দিন ধরেই অনুভব করছিল দেশের ক্রিকেট। অবশেষে সেটা আয়োজন করতে পেরেছে বিসিবি । সংক্ষিপ্ত সময়ে নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে যে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) টি-টোয়েন্টি আয়োজন করা গেছে, বিসিবি একটা হাততালি পেতেই পারে।

ঘরোয়া ক্রিকেট মানসম্পন্ন কিংবা বিতর্কমুক্ত কবে হবে—এ প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। তবে অনেক দিন পর বিসিবি একটা টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। ৮ মার্চ শুরু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের আগে ১২টি দল নিয়ে এই টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টটি শুরু হয়েছিল গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ করা গেছে টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন শুধুই স্থানীয় ক্রিকেটাররা। বিপিএলও ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি। তবে সেখানে স্থানীয় ক্রিকেটারদের সুযোগটা পর্যাপ্ত নয়, টুর্নামেন্ট হয় বিদেশি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক আবহে। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের যথেষ্ট সুযোগ দিতে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট উপযোগী নিজেদের গড়ে তুলতে এমন একটা টুর্নামেন্টের প্রয়োজনীয়তা অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল।

টুর্নামেন্ট যে স্থানীয় খেলোয়াড়দের ভীষণ উপকার করেছে সেটি পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান কাল নিজেই জানিয়েছেন, এই টুর্নামেন্ট দিয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছে ৬১ ক্রিকেটারের। এমন অনেক ক্রিকেটারের স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে, যাঁরা ঘরোয়া ক্রিকেটে পার করে দিয়েছেন এক দশকের বেশি সময়। বিসিবি সভাপতি তাই বলেছেন, ‘এটা আমাদের অনেক বড় পাওয়া। বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারকে দেখেছি, যারা প্রতিভাবান। আমাদের কাছে মনে হয়েছে এরা ভবিষ্যতে জাতীয় দলেও আসতে পারে।’

তরুণ ক্রিকেটারদের কথা বলতে গেলে রুবেল মিয়া-শহীদুলদের কথা সবার আগে আসবে। ৪৩ গড়ে ১২৯ রান করে টুর্নামেন্টে ব্যাটসম্যানদের তালিকায় সবার ওপরে আছেন প্রাইম ব্যাংকের রুবেল। বোলারদের মধ্যে ১১ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে প্রাইম দোলেশ্বরের ফরহাদ রেজা ও শেখ জামালের শহিদুল ইসলাম। এই যে রুবেল-শহীদুলরা নিজেদের মেলে ধরছেন, বিসিবি সভাপতির চোখে এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। যদিও জাতীয় দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় খেলেননি। তবে টুর্নামেন্ট যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণই ছিল। সবচেয়ে বড় কথা, ছিল বিতর্কমুক্ত। শেষ তিনটা ম্যাচ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করায় যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা।

নাজমুল হাসান কাল ফাইনাল শেষে টুর্নামেন্ট নিয়মিত আয়োজন করার ঘোষণা দিলেন, ‘জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছাড়া আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে ৫০ ওভারের টুর্নামেন্টে খেলতে চাই না। টি-টোয়েন্টিতে উৎসাহ আরও কম,এত দিন এটাই শুনে এসেছিলাম। আমরা এটা থেকে বের হয়ে আসতে চেয়েছিলাম এবং পেরেছি। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা থাকুক বা না থাকুক এ টুর্নামেন্ট হবেই। যেহেতু এটার সঙ্গে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের খেলা বা না খেলার সম্পর্ক নাই, মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি এটা সামনেও হবে।’ কিন্তু কখন হবে সেটি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি বিসিবি সভাপতি। নিয়মিত হবে, এতটুকুই বলতে পারলেন তিনি, ‘এটা প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গেই থাকবে। প্রিমিয়ার লিগ না হলেও এটা হবে। প্রতি বছর হবে, এটাই হলো কথা।’

অনেকে বলছেন, যেহেতু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট, বিপিএলের আগে এটি নিয়মিত আয়োজন করতে পারলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে। এতে দল গড়তে ভীষণ কাজে দেবে বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর। শুধু বিপিএল কেন, বড় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট, যেমন—টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বা টি-টোয়েন্টি সংস্করণে হওয়া এশিয়া কাপের আগেও এ ধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যেতে পারে।