নিষিদ্ধ হতে পারেন নেইমার

চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ে মেজাজ ঠিক নেই নেইমারের। ছবি: টুইটার
চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ে মেজাজ ঠিক নেই নেইমারের। ছবি: টুইটার
>

শেষ মুহূর্তের বিতর্কিত পেনাল্টিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে পিএসজি। মেজাজ হারিয়ে দলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার ইনস্টাগ্রামে গালাগাল করেছেন উয়েফাকে। এতে নিষিদ্ধ হতে পারেন নেইমার

খাল কেটে কুমির আনা বলতে কী বোঝায়, এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন নেইমার। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হেরে মেজাজ হারিয়ে ইনস্টাগ্রামে উয়েফাকে গালাগাল করেছিলেন পিএসজি তারকা। উয়েফার চোখ এড়ায়নি বিষয়টি। ব্রাজিল তারকাকে এখন শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

চোট তাঁকে মাঠ থেকে ছিটকে ফেলেছে মাসখানেক আগে। কিন্তু দলের খেলা বলেই পরশু নেইমারকে দেখা গেল পার্ক দে প্রিন্সেসের ভিআইপি গ্যালারিতে। হাসিমুখ নিয়ে অবশ্য ফিরতে পারেননি। উল্টো মেজাজ হারিয়ে উয়েফাকে এক হাত নিয়েছেন পিএসজির এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। রীতিমতো মুখ খারাপ করে গালি দিয়েছেন তিনি।

নেইমারের মেজাজ হারানো অস্বাভাবিক কিছু নয়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাঠে শেষ ষোলোর প্রথম লেগ ২-০ গোলে জিতেছিল পিএসজি। একে তো প্রতিপক্ষের মাঠে জয়, সঙ্গে ‘অ্যাওয়ে গোল’-এর সুবিধা—ফিরতি লেগের আগেই অনেকে কোয়ার্টার ফাইনালে দেখেছেন পিএসজিকে। কিন্তু কে জানত, পিএসজিকে প্রচণ্ড ধাক্কা দিয়ে ছিটকে ফেলবে ইউনাইটেড এবং সেটি তাদের-ই ঘরের মাঠে! পরশু ঠিক এই কাণ্ড-ই ঘটেছে পিএসজির মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে। ওলে গুনার সুলশায়ারের মন্ত্রে উজ্জীবিত ইউনাইটেড সেখানে ফিরতি লেগে ৩-১ গোলের জয়ে শেষ আটে উঠেছে, আর পিএসজিকে বিদায় নিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে। এ নিয়ে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিল তারা। এতে নেইমারের মাথা ঠিক থাকে কীভাবে!

দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচটি ৩-৩ গোলে অমীমাংসিত থাকলেও শ্রেয়তর ‘অ্যাওয়ে গোল’ সুবিধায় শেষ আটে পৌঁছেছে ইউনাইটেড। আর ইউনাইটেড সেটি পেয়েছে ম্যাচের যোগ করা সময়ে চার মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে। ইউনাইটেড বক্সের একটু বাইরে থেকে দূরপাল্লার শট নিয়েছিলেন ইউনাইটেড ডিফেন্ডার ডিয়োগো দালোত। বক্সের ভেতরে বেশ লাফিয়ে উঠে বলটি ঠেকানোর চেষ্টা করেন পিএসজি ডিফেন্ডার প্রেসনেল কিমপেম্বে। পেছনের দিক মুখ করে লাফিয়ে উঠেছিলেন তিনি। অনিচ্ছাকৃতভাবেই তাঁর পেছনে হাত ছুঁয়ে চলে যায় বল। ইউনাইটেড পেনাল্টির আবেদন করলে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির নির্দেশ দেন মাঠের রেফারি। মার্কাস রাশফোর্ড স্পটকিক থেকে ইউনাইটেডকে জয়সূচক গোলটি এনে দেন।

বিতর্কিত পেনাল্টি থেকে রাশফোর্ডের ওই গোলেই হার নিশ্চিত হয় পিএসজির। আর এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন নেইমার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে সেই হ্যান্ডবলের ছবির স্ক্রিনশট পোস্ট করে নেইমার লেখেন, ‘এটা লজ্জার। উয়েফা এখনো চার ব্যক্তির ওপর দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছে যারা ফুটবল ও ভিএআর রিভিউ নিয়ে কিছুই জানে না। এটি হ্যান্ডবল না। পেছনে হ্যান্ডবল হয় কীভাবে?’ এতটুকু বলেই উয়েফাকে বেশ কিছু খিস্তি-খেউড় করেন নেইমার। আর সেটাই নজরে এসেছে ইউরোপের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার।

উয়েফার নৈতিকতা কমিটির আইন অনুযায়ী, ১১ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করেছেন নেইমার। এতে সামনের মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে এক থেকে তিন ম্যাচ পর্যন্ত নিষিদ্ধ হতে পারেন তিনি। নেইমার শাস্তি পাচ্ছেন না কি পাচ্ছেন না, তা বোঝা যাবে মার্চের ২৮ তারিখের পর। সেদিন উয়েফার কর্তাব্যক্তিরা বৈঠকে বসবেন। এর আগে এ ধরনের কাণ্ড করে শাস্তি পেয়েছিলেন লিভারপুলের ক্রোয়েশিয়ান ডিফেন্ডার দেয়ান লভরেন। উয়েফা নেশনস লিগে ক্রোয়েশিয়া-স্পেন ম্যাচের পর স্পেন অধিনায়ক সার্জিও রামোসকে উল্টোপাল্টা বলেছিলেন লভরেন। যে কারণে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে হয়েছিল তাকে।

নেইমারকেও লভরেনের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে।