ভাঙা হাতেই এমন সেঞ্চুরি!

বিকেএসপির বিপক্ষে আজ অপরাজিত ১২১ রানের ইনিংসটি খেলার পথে জহুরুল। ছবি: প্রথম আলো
বিকেএসপির বিপক্ষে আজ অপরাজিত ১২১ রানের ইনিংসটি খেলার পথে জহুরুল। ছবি: প্রথম আলো
>ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ বিকেএসপির বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যেই দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন জহুরুল। তাঁর ব্যাটিং দেখে বোঝারই উপায় ছিল না যে ডান হাতে চিড় আছে, চোট নিয়েই খেলে যাচ্ছেন।

ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা যখন নিচ্ছিলেন দেখা গেল ডান হাতে ব্যান্ডেজ জড়ানো। জহুরুল ইসলাম হাতে চোটটা পেয়েছিলেন গত ডিসেম্বরে, চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) খেলার সময়। চোটমুক্ত হওয়ার আগেই শুরু করেছিলেন বিপিএল। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়েছে। বিপিএলে ভালো তো খেলতেই পারেননি, চোট তাঁকে আরও ভুগিয়েছে। হাতের ব্যথা এখনো পুরোপুরি সারেনি। এই ভাঙা হাতেই আবাহনীর হয়ে বিকেএসপির বিপক্ষে আজ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছেন জহুরুল।

হাতের চোট তো ছিলই। ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবাহনী শুরুতেই পড়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। ৮ বছর পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ফেরা বিকেএসপি কি সত্যি আবাহনীর বিপক্ষে রূপকথার জয় পাবে, এই প্রশ্ন যখন উঠতে শুরু করেছে, তখনই উইকেটে দাঁড়িয়ে যান জহুরুল। খেলেন অপরাজিত ১২১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। চোট পাওয়া হাত নিয়ে কীভাবে সম্ভব হয়েছে এই ইনিংস খেলা, ম্যাচ শেষে সে গল্প শোনালেন আবাহনী ওপেনার, ‘বিপিএলের ঠিক আট দিন আগে চোটটা পেয়েছিলাম। বিপিএলে খেলাটা আমার বোকামি হয়েছে। ব্যাট ঠিকমতো ধরতেই পারতাম না। টুর্নামেন্ট অসমাপ্ত রেখেই বাসায় চলে যাই। এখন সেরে ওঠার পথে। তবে এখনো ঘাটতি আছে ব্যাটিংয়ে। ব্যথাটা এখনো পুরোপুরি সারেনি। চেষ্টা করছি, ফিজিওরা অনেক সাহায্য করছে। আশা করি দ্রুত সেরে যাবে। আমার এই হাত নিয়ে আজ শট খেলা সম্ভব ছিল না। আর দল যে পরিস্থিতিতে ছিল, শট খেলার দরকারও ছিল না। সব মিলিয়ে আল্লাহর রহমতে ভালোই হয়েছে।’

শুধু হাতের চোট নয়, ইনিংসের শেষ দিকে মাংসপেশিতেও টান পড়েছিল জহুরুলের। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় খুব বড় সমস্যা হয়নি। শত ভাগ ফিট না হয়েও অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করা জহুরুল কৃতিত্ব দিলেন সতীর্থ সাইফউদ্দীনকেও। পঞ্চম উইকেটে সাইফউদ্দিনের সঙ্গে জহুরুল গড়া ১১২ রানের জুটিই আসলে ম্যাচের পার্থক্য করে দিয়েছে। জহুরুলের কণ্ঠে তাই সাইফউদ্দীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা, ‘খুব ভালো চারজন ব্যাটসম্যান দ্রুত আউট হয়ে গিয়েছিল। সাইফুদ্দিন যখন নামল, এ রকম কঠিন সময়ে বাংলাদেশ দলের হয়ে গত কিছুদিনে বেশ কটি ভালো ইনিংস খেলেছে। ওর ওপর বিশ্বাস ছিল আমার। ওকে বলেছিলাম যে আমরা ৩৫-৪০ ওভার পর্যন্ত যাব। রান যাই হোক, দুই-তিন রান করে হলেও সমস্যা নেই। সে মানিয়ে নিয়েছিল এবং ভালো ইনিংস খেলেছে। আমার নিজেরও অনেক কঠিন হতো ওখানে খেলা। সে আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছে, মাঝে মাঝে আমি মারতে গেলে আমাকে বুঝিয়েছে। সাইফুদ্দিন আর আমার জুটিটি আমাদের জন্য অনেক কার্যকরী ছিল।’

শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ আর বিকেএসপির অনভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আবাহনী ম্যাচটা জিতেছে ৬০ রানে। তবে সব ছাপিয়ে এই ম্যাচের উজ্জ্বল দিক ভাঙা হাত নিয়ে জহুরুলের সেঞ্চুরি!