বাংলাদেশ পারবে পুরো একটা দিন টিকে থাকতে?

ওয়েলিংটন টেস্ট বাঁচাতে হলে কাল দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে। ছবি: এএফপি
ওয়েলিংটন টেস্ট বাঁচাতে হলে কাল দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে। ছবি: এএফপি
>

বাংলাদেশ চতুর্থ দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ৮০ রান তুলে। এখনো পিছিয়ে ১৪১ রানে। ওয়েলিংটন টেস্ট বাঁচাতে কাল পুরোটা দিন টিকে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। আর জিততে হলে নিউজিল্যান্ড নিতে হবে ৭ উইকেট।

তামিম ইকবালের ভবিষ্যদ্বাণীই তাহলে ফলে যাচ্ছে? বাংলাদেশ ওপেনার বলেছিলেন, ‘বৃষ্টি না হলে এই টেস্টে ফল আসবেই।’ কিন্তু ফলটা যে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আসার সম্ভাবনাই বেশি, নিশ্চয়ই দ্বিমত করবেন না! ওয়েলিংটন টেস্ট জিততে হলে শেষ দিনে কিউইদের লাগবে ৭ উইকেট। আর টেস্টটা যদি বাঁচাতে হয়, বাংলাদেশকে টিকে থাকতে হবে পুরো দিন। মাহমুদউল্লাহরা পারবেন সবুজ-স্যাঁতসেঁতে ওয়েলিংটনের উইকেটে পুরো একটা দিন লড়াই করতে?

বৃষ্টিতে প্রথম দুদিন খেলা না হওয়ায় ওয়েলিংটন টেস্ট নেমে এসেছে তিন দিনে। এ তিন দিনেই বাংলাদেশের সামনে ইনিংস ব্যবধানে হারের চোখরাঙানি! ২২১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা। প্রথম ইনিংসে ৭৪ রান করা তামিম ইকবাল ফিরে গেছেন ৪ রান করে। ট্রেন্ট বোল্টের ভেতরে ঢোকা বলটা রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশ ওপেনার। ব্যাট আর প্যাডের ফাঁক গলে সেটি চলে আসে স্টাম্পে। বোল্টের বলেই তৃতীয় স্লিপে টিম সাউদির ক্যাচ হয়ে ফিরে গেছেন ১০ রান করা মুমিনুল হক। সাদমান ইসলাম কিছুটা লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু কাঁধ বরাবার ম্যাট হেনরির বাউন্সারটা পুল করতে গিয়ে তুলে দেন উইকেটকিপার বিজে ওয়াটলিংয়ের গ্লাভসে। ফেরার আগে করেছেন ২৯।

নিউজিল্যান্ডের বোলারদের ক্রমাগত শর্ট বল সামলে উইকেটে টিকে আছেন মোহাম্মদ মিঠুন (২৫)। হ্যামিল্টন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংস সেঞ্চুরি করা সৌম্য সরকার অপরাজিত ১২ রানে। ৩ উইকেটে ৮০ রান তুলে দিন শেষ করা বাংলাদেশের সামনে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার চ্যালেঞ্জ। খেলাই আছে এক দিন। আরও নির্দিষ্ট করে বললে তিন সেশন। বৃষ্টিবাগড়া না থাকলে এ তিন সেশনই এখন বাংলাদেশের সামনে মনে হচ্ছে দীর্ঘ পথ! টেস্টটা ড্র করার সুবর্ণ সুযোগ ওয়েলিংটনের শোঁ শোঁ বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ার উপক্রম।

অথচ নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা কী স্বচ্ছন্দে রান তুলেছেন ভেজা-সবুজ উইকেটে। যদিও ৮ রানে ২ উইকেট ফেলে দিয়ে কাল বাংলাদেশের বোলাররা শুরুটা ভালোই করেছিলেন; মনে হচ্ছিল, আজ কিউই ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষাই নেবেন তাঁরা। তা আর নিতে পারলেন কোথায়! কঠিন এ কন্ডিশনেও রান উৎসব করেছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। রস টেলর আর কেন উইলিয়ামসনের তৃতীয় উইকেট জুটি যোগ করেছে ১৭২ রান। তাইজুল ইসলামের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে উইলিয়ামসন ৭৪ রানে ফিরলেও টেলর শুধু সেঞ্চুরিই করেননি, থেমেছেন একেবারে ডাবল সেঞ্চুরি করে। টেলর অবশ্য থামতে পারতেন ২০ রানেই। আবু জায়েদের করা ১৫তম ওভারে দুবার সুযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু সুযোগ দুটি কাজে লাগাতে পারেননি সাদমান ইসলাম কিংবা মাহমুদউল্লাহ। ২০ রানে জীবন পাওয়া টেলর থেমেছেন আরেকটি ‘০’ যোগ করে, অর্থাৎ ঠিক ২০০ করে! চতুর্থ উইকেটে হেনরি নিকলসকে নিয়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে টেলর যোগ করেছেন ২১৬ রান। তাইজুলের আরেক শিকার হওয়ার আগে নিকোলসও করেছেন সেঞ্চুরি।

৩ উইকেটে ৩৯৬ থেকে ৬ উইকেটে ৪৩২—৩৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট পড়লে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক আর সুযোগ দেননি বাংলাদেশের বোলারদের। ওয়াটলিং আউট হতেই বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে ৪৩২ রানের বোঝা চাপিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে দেন উইলিয়ামসন। কিউই অধিনায়কের মনে হয়েছে, বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দিতে তাঁদের চার সেশনই যথেষ্ট!