'হাস্যকর লাগবে শুনতে, আরও ভালো করার সামর্থ্য রাখে এ দল'

বৃষ্টির কারণে ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম দুই দিন ধুয়ে গেলেও বাকি তিন দিনেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে দল। এ যেন ২০০১ সালে ফিরে যাওয়া। এমন হারের পরেও মাহমুদউল্লাহ মনে করেন এই দল ভালো খেলার সামর্থ্য রাখে।

বৃষ্টির সৌজন্যে ওয়েলিংটন টেস্ট নেমে এসেছিল তিন দিনে। তিন দিনেও বাংলাদেশ পারেনি টেস্টটা ড্র করতে। আড়াই দিনে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে। ধারাবাহিক অসহায় আত্মসমর্পণের এ ছবি দেড় যুগ আগের নিউজিল্যান্ড সফরেও দেখা গেছে। এখনো যদি বারবার হোঁচট খেতে হয়, ন্যূনতম লড়াইয়ের ছাপ না থাকে নিজেদের খেলায়, তবে ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’ কথাটার প্রমাণ কোথায়? বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ অবশ্য বলছেন, সময়ের সঙ্গে স্কিলে উন্নতি অবশ্যই হয়েছে। শুধু মানসিকভাবে আরও শক্ত হতে হবে তাঁদের।

আজ প্রথম সেশনে অলআউট হওয়ার পর বাংলাদেশ দল ফিরিয়ে এনেছে প্রায় দেড় যুগের আগের স্মৃতি। ২০০১ সালে হ্যামিল্টনে খেলা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টটি যেন ফিরে এসেছে ওয়েলিংটনে। সেবার হ্যামিল্টনে বৃষ্টিতে প্রথম দুদিন ভেসে যাওয়ার টস হয়েছিল তৃতীয় দিনে। এবারও তা-ই। সেই টেস্ট বাংলাদেশ হারে ইনিংস ৫২ রানে, আজ সেটি ইনিংস ও ১২ রানে। ১৭ বছরে তাহলে বাংলাদেশ কোথায় বদলেছে?

প্রশ্নকর্তা যখন সংবাদ সম্মেলনে ২০০১ সালের নিউজিল্যান্ড সফর ফিরিয়ে আনলেন, মাহমুদউল্লাহ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের যুক্তি, সময়ের সঙ্গে স্কিলে তাঁদের যথেষ্ট উন্নতিই হয়েছে, ‘গ্রাফ অনুযায়ী আমাদের খেলোয়াড়দের মানসিকতা ও স্কিলে অনেক উন্নতি হয়েছে। এ ধরনের কন্ডিশনে ভালো করতে হলে আমাদের আরও মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে। প্রথম টেস্টের আগে বলেছিলাম আমাদের ইতিবাচক থাকতে হবে। শুরু থেকেই যদি চিন্তা করি যে সুইং হবে, আউট হয়ে যেতে পারি, তাহলে তো নিজেই নিজের কাছে হেরে গেলাম। যদি অন্তত ইতিবাচক থাকেন তাহলে আপনার ভালো করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এখনো একই বার্তা থাকবে। শুনতে হাস্যকর লাগবে, আমি এখনো আশাবাদী আরও ভালো করার সামর্থ্য রাখে এ দল। এই টেস্ট কিংবা হ্যামিল্টনে যেভাবে খেলেছি এর চেয়ে ভালো খেলার সামর্থ্য আমাদের আছে। সবাইকে নিজেদের মতো করে চিন্তা করতে হবে যে দলে কীভাবে অবদান রাখতে পারি । এটা ভাবনার বিষয়। কথা বলে লাভ নেই। কাজে করে দেখাতে হবে। যদি করতে পারি ১৭ বছর আগের ঘটনা আর আসবে না।’

ওয়েলিংটন টেস্টে যেহেতু টস হয়েছে তৃতীয় দিনে, ড্রয়ের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। একাদশও হতে পারত সেটি মাথায় রেখে। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য বলছেন, ড্রয়ের চিন্তা করে তাঁরা মাঠে নামেননি, ‘এই টেস্টে মিরাজকে সরিয়ে তাইজুলকে এনেছিলাম। মনে করেছিলাম আমাদের বিশেষজ্ঞ চারজন বোলার থাকা দরকার। খণ্ডকালীন বোলার হিসেবে হ্যামিল্টনে সৌম্য ভালো করেছিল। বিশ্বাস ছিল সে পরের ম্যাচেও করতে পারবে। তবুও চিন্তা করেছিলাম বিশেষজ্ঞ চার পেসার নিয়ে খেলতে। যদি ড্রয়ের চিন্তা করতাম, ব্যাটিংয়ের গভীরতা আরও বাড়াতাম। ম্যানেজমেন্ট চিন্তা করেছে চার বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়েই খেলতে। তাইজুল এ ম্যাচেও ভালো করেছে, দুইটা উইকেট পেয়েছে।’

ঘুরেফিরে সেই পুরোনো কথাটা আসছে। বাংলাদেশ এবার নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছে বিপিএল শেষ হতেই। বিপিএল খেলায় আলাদা প্রস্তুতির কোনো সুযোগ ছিল না। শেষ পর্যন্ত এটিই কি বাজে হারের পেছনে বড় কারণ হয়ে থাকল? মাহমুদউল্লাহ তা মনে করেন না, ‘অজুহাতের কোনো সুযোগ নেই। বিপিএল আমাদের বড় লিগ, ওটা খেলতেই হবে। পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে মনে হয় না আমাদের কোনো মানসিক বাধা (মেন্টাল ব্লক) ছিল না। আমরা ভালো করতে পারছি না, সেটা ভিন্ন কথা। আসার আগে কথা হয়েছিল, যেহেতু সময় হাতে নেই যেন মানসিকভাবে তৈরি হতে পারি। আমি আশাবাদী, শেষ টেস্টটা ভালো করতে পারব।’